Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

দ্বিশতবর্ষে শম্ভুনাথ পণ্ডিত
রজত চক্রবর্তী

এই পাড়ায় ইদানীং বড্ড ধুলো। নতুন নতুন বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে। গঙ্গার ধার বরাবর সাজানো আছে পাথরের স্ল্যাব। গাছের নীচে ছোট ছোট তাঁবু। সাহেব-সুবো জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার, দেশি ঠিকাদার, নেটিভ মিস্ত্রিদের ভিড়। পাথর কাটা হচ্ছে ঠং ঠং। মোরাম রাস্তার পাশে পাশে স্তূপ করে রাখা আছে পুরনো বাড়ির ভাঙা রাবিশ। লালদিঘির পাশ দিয়ে ফিটন গাড়িটি এগিয়ে আসছে। লালদিঘির চারপাশে সুন্দর গাছপালায় সাজানো পার্ক। তার পূর্ব-দক্ষিণ কোণে এখনও পড়ে আছে পুরনো দুর্গের দু’টি অক্ষত পাথরের ঘর। সিরাজদৌল্লা পুরনো দুর্গ ভেঙেছিলেন সেই ১৭৫৬ সালে। তারপর পলাশীর যুদ্ধ। তারপর ক্লাইভ। পুরনো দুর্গের সব সরানো হয়েছে। ক্লাইভের ইচ্ছায় স্মারক হিসেবে রয়ে গেছে অক্ষত ঘর দু’টি। এইখানে হবে জেনারেল পোস্ট অফিস। ওয়ালটার গ্রেনভিল নামে এক স্থপতি এসেছেন। তিনি প্ল্যান করেছেন বড় পোস্ট অফিসের। এখনও শুরু হয়নি। ওদিকে বিরাট জমি নিয়ে অদূরে তৈরি হবে ভারতীয় জাদুঘর। সেও ওয়ালটার গ্রেনভিলের কাজ। আর্ট কলেজ হবে তার পাশেই। চারিদিকে ভাঙাগড়া চলছে।
শম্ভুনাথের এই ‘হোয়াইট টাউন’-এর দিকে আসতে ভালোই লাগে। একটা গতি। একটা কর্মচঞ্চলতা। অপরদিকে ব্ল্যাকটাউন যেন ধীর গতির গরুর গাড়ি মতো চলেছে তুলসি মঞ্চের পাশ দিয়ে মাটির রাস্তা ধরে। পকেট থেকে সোনার চেন বাঁধা প্রিয় ঘড়িটা বার করে সময় দেখে নিলেন বিচারপতি শম্ভুনাথ পণ্ডিত। ফিটনের দু’পাশের পাদানিতে লাল পাগড়ি আর ইয়া মোচওয়ালা বিশাল বপুর ভোজপুরি পাহারাদার। কোচম্যান ফাঁকা রাস্তাতেও মুহূর্মুহু হাঁক পাড়ছে – হোড়ড়ুড়ুড়ুড়ু। পথচলতি কিছু মানুষ। গুটিকয় সাহেব-সুবো আপিস চলেছে। তালপাতার বড় বড় ছাতা নিয়ে তাদের পাশে পাশে চলেছে চাকরেরা। আর অন্য হাতে সাহেবের বাক্স। বাঙালি গৃহস্থ চলেছে ধুতি আর চাদরে। একটু বর্ধিষ্ণুদের সুতির কোট, গায়ে চাদর, মাথায় পাগড়ি। এখন শীতকাল। গঙ্গার বুকে তখনও আবছা কুয়াশা। গাছের পাতাগুলো সারারাত শিশিরে ভিজেছে। চকচক করছে সারসার সজীব গাছগুলি। তাকিয়ে থাকলেই প্রশান্তি আসে। খিদিরপুর থেকে জাহাজের ডাক ভেসে এল, ভোঁওওও...। গাড়ি সোজা ঢুকে পড়ল আইন পাড়ায়।
হাইকোর্টের পুরনো দোতলা বাড়ির একতলায় সুসজ্জিত এজলাস। এজলাস শুরু হবে এগারোটায়। একে একে হাইকোর্টের সামনে এসে থামছে ফিটন, ব্রুহাম, ল্যান্ডো, স্প্রিং বডি, অ্যাস্কোট। এই ঘোড়ার গাড়িগুলির মধ্যে অ্যাস্কোটের দাম সবচেয়ে কম, মাত্র পঞ্চান্ন গিনি। দাম ও মর্যাদা অনুযায়ী গাড়িগুলিকে সামনের ফাঁকা মাঠে রাখা হয়। গাড়ি থামলেই পেসকা্র, মুহুরির দল যার যার বাবুর কাছে দৌড়ে আসে। পুলিস ভিড় সরায়। দারোয়ান পথ করে নিয়ে যায়। হাতে খোলা তলোয়ার। ঝকঝকে রঙদার পোশাক। শম্ভুনাথ নামলেন। পেছনে লাল ঝালর দেওয়া সিল্কের টেইল। সেই টেইল ধরার জন্য একজন চাপকান পড়া চাকর। তার পেছন উইগ পড়ানোর চাকর। তার হাতে উইগ। বাক্সের ভেতর সিল্কের কাপড়ে জড়ানো। বড্ড ধুলো উড়ছে বলে বাড়ি থেকে কাপড় জড়িয়ে বহু যত্নে নিয়ে এসেছে ধোপা। পাঙ্খাপুলাররা সব ঘরে ঘরে এক সাথে দড়ি টেনে ঝালর দেওয়া ঝোলানো পাখা টানতে শুরু করল। মশা ও মাছি তাড়াতে গিয়ে শীতকালেও পাঙ্খাওয়ালাদের বিরাম ছিল না। শম্ভুনাথ পণ্ডিত ধীরে ধীরে প্রবেশ করলেন কোর্টে। ভারতবর্ষের প্রথম ভারতীয় বিচারপতি। বয়স মাত্র ৪২ বছর। ১৮৬২ সাল।
আজ থেকে দু’শো বছর আগে, ১৮২০ সালে জন্মেছিলেন শম্ভুনাথ। কাশ্মীরি পণ্ডিত পূর্বপুরুষদের আদি বাসস্থান ছিল লখনউ। শম্ভুনাথের বাবা সদাশিব পণ্ডিত ভাগ্যান্বেষণে চলে এসেছিলেন কলকাতায়। কলকাতায় শম্ভুনাথের জন্ম হলেও তাঁর কৈশোর কেটেছে লখনউয়ে। সেখানে তাঁর পড়াশোনা শুরু। ভালো পারস্য ভাষা জানতেন বলে সদাশিব কলকাতায় সদর আদালতে পেশকারের চাকরি পেয়েছিলেন। কিশোর শম্ভুনাথ মামার বাড়িতে থাকতেন। উর্দু ও পারস্য ভাষা আয়ত্ত করার পর তাকে পাঠানো হয় বেনারসে ইংরেজি শেখার জন্য। ১৪ বছর বয়সে শম্ভুনাথ চলে আসে কলকাতায়। ১৮৩৪ সাল। বাংলার যুব সমাজ তখন উত্তাল ইয়ং বেঙ্গল মুভমেন্টে। ক্ষেপে উঠেছে গোঁড়া রক্ষণশীল সমাজ। হিন্দু কলেজ ঘিরে ডিরোজিও সাহেবের পড়ানোয় তুমুল হইচই। তাই হিন্দু কলেজের পরিবর্তে শম্ভুনাথকে ভর্তি করা হল গৌরমোহন আঢ্যের ‘ওরিয়েন্টাল সেমিনারী’ কলেজে। সমাজের মাথারা এই কলেজ খুলেছে। সেখানে জেফ্রয় সাহেব এলেন ইংরেজি শেখাতে। শোনা যায় জেফ্রয় সাহেবের ঘোড়ার গাড়ি চলে আর পিছন পিছন বাঙালি ছাত্ররা ছোটে পড়ার জন্য।
শম্ভুনাথ হাইকোর্টের বিশ্রামকক্ষে ঢুকলেন। এই সেই বিশ্রামকক্ষ, যেখানে পণ্ডিত উইলিয়াম জোন্স এসে বসতেন। গার্ডেনরিচ থেকে হেঁটে আসতেন। এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা এই ঘরে বসেই সংস্কৃত শিখেছিলেন কৃষ্ণনগরের অব্রাহ্মণ পণ্ডিত রামলোচন তর্কালঙ্কারের কাছে। শম্ভুনাথ পণ্ডিত বসলেন সেই চেয়ারে। সামনে রুপোর দোয়াতদানি। পালকের কয়েকটি কলম পাশের ট্রেতে। তার পাশে গোছানো রয়েছে কাগজ, কালি ব্লটিং করার কাঠের ডাস্টার। খানসামা চেয়ার টেনে ধরার পর উঠলেন। এজলাসের সময় হয়ে গিয়েছে। আয়নার সামনে দাঁড়ালেন। ততক্ষণে পরচুলা পড়িয়ে দেওয়ার নাপিত এসে দাঁড়িয়েছে। সাদা বাবরি পরচুলা। উড়নি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আরেকজন। দরজার কাছে ন্যায়দণ্ড নিয়ে একজন পেয়াদা। তার পিছনে তলোয়ার হাতে লাল পাগড়ি পুলিস। তারপর উনি। পিছনে থাকবে উড়নি ধরার চাকর। তার পিছনে আরেকজন চাকর আইনের বইয়ের বাক্স নিয়ে। তার পিছনে মুহুরি। শম্ভুনাথ চললেন এজলাসে। এজলাসে ঢোকা মাত্র হলের সবাই উঠে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানাল। হ্যাঁ, সাহেব অ্যাডভোকেটরাও উঠে বাও করলেন এ বাঙালিকে। মার্শাল বাজখাঁই গলায় চিৎকার করে উঠল – ‘ওয়ে ওয়ে ওয়ে...পারসনস দ্যাট হ্যাভ এনিথিং টু ডু বিফোর মি লর্ড কিংস জাস্টিস...গিভ ইয়োর আটেন্ডেন...ওয়ে ওয়ে ওয়ে’। কোর্টচত্বর কেঁপে উঠল। কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম বিচারপতি হিসেবে বিচারের কাজ শুরু করলেন শম্ভুনাথ। নভেম্বর মাসের শেষ। ১৮৬২ সাল। মহারানির আদেশনামা সহ বিচারপতি হিসেবে নিয়োগপত্র ১৮ই নভেম্বর সেক্রেটারি অব স্টেট স্যার চার্লস উড দিয়েছেন শম্ভুনাথকে। সেই আদেশনামা যত্নে রেখেছেন স্যুটকেসে।
মাসে কুড়ি টাকা মাইনের চাকরি দিয়ে তরুণ শম্ভুনাথের জীবন শুরু। স্কুল পাশের পর সেটাই তখন মহার্ঘ্য। সদর আদালতে অ্যাসিস্ট্যান্ট রেকর্ড কিপারের চাকরিতে যোগ দিলেন শম্ভুনাথ। অবসরে শুরু করলেন দলিল দস্তাবেজের অনুবাদ। বাংলা ও ফারসি থেকে ইংরেজিতে। তার জন্য কিছু বাড়তি আয় হচ্ছিল। তখন ভবানীপুর ব্রাহ্মসমাজের সভাপতি হলেন শম্ভুনাথ আর হরিশ্চন্দ্র মুখোপাধ্যায় ছিলেন অধ্যক্ষ। বয়সে অনেক ছোট হলেও, হরিশ্চন্দ্রের সঙ্গে আড্ডা জমে উঠেছিল ভীষণভাবে। পাশাপাশি সমান গতিতে চলছে কলম। একটি পুস্তিকা লিখলেন শম্ভুনাথ–‘ঈশ্বরের অস্তিত্ব ও স্বরূপ’। বেকনের প্রবন্ধগুলি অনুবাদ করলেন বাংলায়। প্রশংসিত হল দিকে দিকে। আইনের বই লিখলেন ইংরেজিতে। তখনকার বিচারপতি ও গভর্নমেন্টের নজরে পড়লেন। সদর আদালতে ‘রিডার’-এর পদ পেলেন। কিন্তু তাঁকে এই পদ নিতে বারণ করেছিলেন স্যার রবার্ট বার্লো। বরং আইন পরীক্ষা দিয়ে ১৮৪৮ সালের ১৬ই নভেম্বর সদর কোর্টে ওকালতি করার অনুমতি পেলেন সাহেবদের সঙ্গেই। সততা, নিরপেক্ষতা ও আপসহীনতার ফলে ওকালতিতে প্রভুত উন্নতি করেন। উপার্জনও হচ্ছিল প্রচুর। ভবানীপুরের বাড়িটি নতুন করে তৈরি করেন। নানা সামাজিক কাজের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রী শিক্ষা বিস্তারে এগিয়ে আসেন। বন্ধুত্ব হয় বেথুনের সঙ্গে। জন এলিয়ট ড্রিংকওয়াটার বেথুন। কলকাতায় মেয়েদের জন্য স্কুল খুলেছেন হোস্টেল সহ। রাজা দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় সহ অনেকেই সহযোগিতা করেছিলেন। স্ত্রী শিক্ষা-প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা নিতে দেখা যাচ্ছে শম্ভুনাথকে। নিজের মেয়ে মালতীকে বেথুন কলেজেই ভর্তি করিয়েছেন। সে সূত্রে বেথুন সাহেবের সাথে সখ্যতা। চিঠির পর চিঠি দুই বন্ধুর। বেথুনের জন্য মালতীর চটি তৈরি করা থেকে দরকারি কথা সবই লেখা ঐ চিঠিতে। তেমন এক চিঠির অংশে দেখা যায়, সাধারণ বাঙালি হয়েও স্বীয় প্রতিভায় অনুবাদের কাজে শম্ভুনাথ যথেষ্ট সম্ভ্রম আদায় করেছিলেন ইংরেজদের কাছ থেকেই।
১৮৫১ সালে শম্ভুনাথ পণ্ডিত দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাধাকান্ত দেব এবং আরও কিছু গণ্যমান্যদের সাথে বসে ‘বৃটিশ ইন্ডিয়া এ্যাসোসিয়েশন’-এর সভা করেছেন। শম্ভুনাথ সেই দলের সেক্রেটারিয়েট সদস্য। এই সংগঠনই প্রথম সংগঠিত দল যাঁরা ভারতীয় জনসাধারণের প্রাপ্য সম্মানের বিস্তারিত স্মারকলিপি লেখা ও ব্রিটিশ সরকারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন। কারণ, তখনও ভারতবর্ষে কোনও রাজনৈতিক দল তৈরি হয়নি। এই অ্যাসোসিয়েশনই ছিল ভারতের প্রথম রাজনৈতিক সংঘবদ্ধতার ভ্রূণ। শম্ভুনাথ তখন ইংরেজিতে একের পর এক প্রবন্ধ লিখছেন ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ কাগজে। ১৮৫৫ সালে তিনি ওকালতির পাশাপাশি প্রেসিডেন্সি কলেজে আইন বিষয়ে অধ্যাপনা করছেন। মাসে মাইনে ৪০০ টাকা দেওয়া হবে বলে তাঁর কাছে অনুরোধ আসে। পাঁচ/ছয় বছর কলেজে পড়ানোর পর ১৮৬১ সালে তিনি যোগ দিলেন প্রধান সরকারি উকিল হিসেবে। সংসার বেড়েছে। প্রথম পক্ষ ও দ্বিতীয় পক্ষ মিলিয়ে সন্তানাদির সংখ্যা তো নেহাত কম নয়। এছাড়া উপার্জনের একটি অংশ নিয়মিত ব্যয় করতেন অসুস্থ গরিবদের চিকিৎসায়।
পাঁচ বছর হতে চলল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির আসনে। একটু একটু করে বিশালাকার হাইকোর্ট তৈরি হচ্ছে। বেলজিয়ামের ‘ইপ্রেস টাউনহল’-এর আদল। উঁচু উঁচু তীক্ষ্ণ চূড়া। থামের মাথায় মাথায় অনবদ্য কাজ। দেখার মতো স্থাপত্য। গড়ে ওঠার ছবি চারপাশে। কিন্তু শম্ভুনাথের শরীরটা আজ ভালো নেই। গরমও পড়েছে খুব। কোবরেজের ওষুধ কিছুটা কাজে দিয়েছে। জ্বর কমছে বটে, কিন্তু বিকালের দিকে আবার বাড়ছে রাতে। ঘুম হচ্ছে না ব্যাথায়। বেথুনের জোরাজুরিতে প্রেসিডেন্সি হাসপাতালের সার্জন এসে দেখে গিয়েছেন। কার্বঙ্কল হয়েছে। অপারেশন করা জরুরি। কিন্তু অপারেশনে রাজি নন শম্ভুনাথ ও তাঁর পরিবার। ফিটন গাড়িতে শরীর এলিয়ে বসে আছেন। গঙ্গার হাওয়া লাগছে। এই গঙ্গা ইতিহাসের স্রোত নিয়ে বয়ে চলেছে। শম্ভুনাথ দেখেছিলেন একদিন অন্ধকার জল-জঙ্গলের কলকাতা। মড়ক আর মৃত্যুর কলকাতা। দেখেছিলেন যুদ্ধের ধ্বংসপ্রাপ্ত কলকাতা। আজ কলকাতা আবার গড়ে উঠছে। সেজে উঠছে কলকাতা। গ্রেনভিলের আরেক স্থাপত্য ‘জেনারেল পোস্টাপিস’-এর গম্বুজে গোধূলির রাঙা আলো পিছলে বড় ঘড়ির কাটায় পড়েছে। তাকালেন শম্ভুনাথ। সময় কি শেষ হয়ে আসছে! বড় প্রিয় লাগছে গোধূলির আলো। কোচোয়ানকে বললেন একটু গড়ের মাঠ ঘুরে যেতে। সবুজ গালিচা ঘিরে সবুজ গাছের সারি। আহা জীবন জীবন্ত হয়ে আছে। পাশে আর্ট কলেজের বিল্ডিং, তারপাশে ভারতবর্ষের মিউজিয়াম, সব ধীরে ধীরে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। তার পাশ দিয়ে কালো পাথর বিছানো পথ চলে গেছে কবরস্থানের দিকে।
জ্বর উত্তরোত্তর বেড়েছে। কার্বঙ্কলের বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে শরীরে। ১৮৬৭ সালের ৫ জুন শম্ভুনাথ পণ্ডিত সন্ধ্যায় তিনি উইলে সই করলেন। স্ত্রী-ছেলে-মেয়ে সবাইকে ডাকলেন। বললেন, তোমরা ব্রহ্মোপাসনা করো, আমি একটু ঘুমোই। চোখ বুজে শুয়ে রইলেন। ৬ জুন সকাল সাড়ে সাতটার সময় তিনি চিরনিদ্রায় নিদ্রিত হলেন।
আজ চারপাশে প্রবল ও প্রকটভাবে দেখা যায় বাঙালির জাত্যাভিমানের সামগ্রিক কুৎসিত অধোগতি। কিন্তু বাঙালি এক সময়ে শিড়দাঁড়া সোজা করে চলেছিল রাজপথে। পথ তৈরি করেছিলেন শম্ভুনাথের মতো এইসব লড়াকু পথিক, যাঁরা সমানে সমানে টক্কর দিয়ে ছিনিয়ে এনেছিলেন বাঙালির সম্মান। তাঁর মতো আড়ালে থাকা মানুষের নাম শুধুমাত্র একটি রাস্তা (শম্ভুনাথ পণ্ডিত স্ট্রিট) ও একটি হাসপাতাল (শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল) নামকরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে বড় ভুল হয়ে যাবে। হয়তো অনাড়ম্বর পেরিয়ে যাবে এইরকম প্রতিভাধরের জন্মবর্ষের একশো বা দু’শো। মূর্তিতে দু’-একটা মালা পড়লেও, কাম্য তাঁর জীবনদর্শন অনুসরণের। তবেই দু’শো বছর পর তাঁর মেধাবৃত্ত আবার বেঁচে উঠবে রাজপথে। অন্যভাবে, অন্য আকারে।
শম্ভুনাথের প্রতিকৃতি: সুব্রত মাজী
গ্রাফিক্স: সোমনাথ পাল
সহযোিগতায়: বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী
22nd  March, 2020
বা ঙা লি র বঙ্গবন্ধু
মৃণালকান্তি দাস

তিনি বাঙালিকে শুধু বাঙালি জাতীয়তাবাদে ঐক্যবদ্ধ করেননি, বাঙালির আর্থিক, সাংস্কৃতিক মুক্তির জন্য তাঁদের প্রস্তুত করেছিলেন। তাঁর হাত ধরেই জন্ম হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের। শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলার আপামর জনতা তাঁকে অভিহিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু নামে। জন্মশতবর্ষে ফিরে দেখা তাঁর জীবন সংগ্রামকে।  বিশদ

15th  March, 2020
সমান অধিকারের দিন 

সমানাধিকার। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এটাই হোক একমাত্র লক্ষ্য। যেখানে প্রত্যেক নারীকে যথাযোগ্য সম্মান দেওয়ার জন্য থাকবে না আলাদা কোনও দিন। শিক্ষা, সচেতনতার মাধ্যমে দূর হোক বৈষম্য 
বিশদ

08th  March, 2020
উদ্বোধন ১২১
স্বামী শিবার্চনানন্দ

১৮৯৯ সালের জানুয়ারি মাসে পথচলা শুরু ‘উদ্বোধন’-এর। স্বামী বিবেকানন্দের প্রবল উৎসাহ আর পরামর্শে দিনরাত এক করে এই পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব সামলেছিলেন স্বামী ত্রিগুণাতীতানন্দ। পেরিয়ে গিয়েছে ১২১টি বছর। এখনও বাঙালির মননে অমলিন রামকৃষ্ণ দর্শনকে জনমানসে ছড়িয়ে দেওয়ার এই অনন্য প্রয়াস।  বিশদ

01st  March, 2020
দেশবন্ধু
সমৃদ্ধ দত্ত

গান্ধীজির একের পর এক অনুগামীকে নিজের দিকে টেনে আনতে সক্ষম হলেও, তাঁর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়নি একবিন্দুও। আবার তাঁকেই দীক্ষাগুরু হিসেবে স্থির করেছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। জন্মের সার্ধশতবর্ষে ফিরে দেখা সেই চিত্তরঞ্জন দাশকে। বিশদ

23rd  February, 2020
পথদ্রষ্টা ফালকে
সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়

‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’-এর হাত ধরে পথচলা শুরু হয় প্রথম ভারতীয় পূর্ণাঙ্গ কাহিনীচিত্রের। ভারতীয় জাতীয়তাবাদের সঙ্গেও ফালকের নাম অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। ৭৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে এ দেশের সিনেমার পথদ্রষ্টাকে ফিরে দেখা। 
বিশদ

16th  February, 2020
ইতিহাসে টালা
দেবাশিস বসু

 ‘টালা’ কলকাতার অন্যতম প্রাচীন উপকণ্ঠ। ১৬৯০ সালের ২৪ আগস্ট জব চার্নক নেমেছিলেন সুতানুটিতে। ১৬৯৩ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি মারা যান। অর্থাৎ তিনি সুতানুটিতে ছিলেন জীবনের শেষ আড়াই বছর। তাঁর মৃত্যুর প্রায় পাঁচ বছর পরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সাবর্ণ চৌধুরীদের কাছ থেকে গোবিন্দপুর, কলকাতা ও সুতানুটি গ্রাম তিনটির জমিদারি স্বত্ব কিনে নেয়।
বিশদ

09th  February, 2020
মহাশ্বেতা 

সন্দীপন বিশ্বাস: ‘সরস্বতী পুজো।’ শব্দ দুটো লিখে ল্যাপটপের কি-বোর্ড থেকে হাতটা সরিয়ে নিল শুভব্রত। চেয়ারে হেলান দিয়ে বাইরে চোখ। রাত এখন গভীর। আর কয়েকদিন পরেই সরস্বতী পুজো। এডিটর একটা লেখা চেয়েছেন। পুজো নিয়ে স্পেশাল এডিশনে ছাপা হবে। সাহিত্যিক হিসেবে শুভর একটা খ্যাতি আছে। 
বিশদ

02nd  February, 2020
শতবর্ষে জনসংযোগ
সমীর গোস্বামী

অনেকে মজা করে বলেন, সেলুনে যিনি হেয়ার স্টাইল ঠিক করেন, তিনি অনেক সময় বিশিষ্ট মানুষের কানেও হাত দিতে পারেন। জনসংযোগ আধিকারিক বা পিআরও’রাও খানিকটা তেমনই। প্রচারের স্বার্থে তাঁরা কেবল সাহসের উপর ভর করে অনেক কিছু করতে পারেন। মনে পড়ছে, বহু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা গণ্যমান্য ব্যক্তিকে কোনও কিছু উদ্বোধনের সময় ফিতে কাটতে দিতাম না। 
বিশদ

26th  January, 2020
অনন্য বিকাশ 

পাহাড়ী স্যান্যাল থেকে উত্তমকুমার সবাই ছিলেন তাঁর অভিনয়ের গুণমুগ্ধ ভক্ত। হেমেন গুপ্তের ‘৪২’ ছবিতে এক অত্যাচারী পুলিস অফিসারের ভূমিকায় এমন অভিনয় করেছিলেন যে দর্শকাসন থেকে জুতো ছোঁড়া হয়েছিল পর্দা লক্ষ্য করে। এই ঘটনাকে অভিনন্দন হিসেবেই গ্রহণ করেছিলেন তিনি। সেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী অভিনেতা বিকাশ রায়কে নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু সিনেমায় তাঁর সহ অভিনেতা ও মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান অধ্যাপক ডঃ শঙ্কর ঘোষ।  
বিশদ

19th  January, 2020
যদি এমন হতো! 
সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

যদি এমন হতো? সিমুলিয়ার দত্ত পরিবারে নরেন্দ্রনাথ এসেছেন, ধনীর আদরের সন্তান; কিন্তু শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব পৃথিবীতে আসেননি। তাহলে নরেন্দ্রনাথ কি স্বামী বিবেকানন্দ হতেন! মেধাবী, সাহসী, শ্রুতিধর এই সুন্দর যুবকটি পিতাকে অনুসরণ করে হয়তো আরও শ্রেষ্ঠ এক আইনজীবী হতেন, ডাকসাইটে ব্যারিস্টার, অথবা সেই ইংরেজযুগের সর্বোচ্চ পদাধিকারী, ঘোড়ায় চাপা ব্রাউন সাহেব— আইসিএস। ক্ষমতা হতো, সমৃদ্ধি হতো।
বিশদ

12th  January, 2020
সেলুলয়েডের শতবর্ষে হিচকক 
মৃন্ময় চন্দ

‘Thank you, ….very much indeed’
শতাব্দীর হ্রস্বতম অস্কার বক্তৃতা। আবার এটাও বলা যেতে পারে, মাত্র পাঁচটি শব্দ খরচ করে ‘ধন্যবাদজ্ঞাপন’।
হ্যাঁ, হয়তো অভিমানই রয়েছে এর পিছনে।
বিশদ

05th  January, 2020
ফিরে দেখা
খেলা

আর তিনদিন পরেই নতুন বছর। স্বাগত ২০২০। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে পুরনো বছরকেও। তাই ২০১৯ সালের বেশকিছু স্মরণীয় ঘটনার সংকলন নিয়ে চলতি বছরের সালতামামি। 
বিশদ

29th  December, 2019
ফিরে দেখা
বিনোদন

আর তিনদিন পরেই নতুন বছর। স্বাগত ২০২০। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে পুরনো বছরকেও। তাই ২০১৯ সালের বেশকিছু স্মরণীয় ঘটনার সংকলন নিয়ে চলতি বছরের সালতামামি।  
বিশদ

29th  December, 2019
ফিরে দেখা
রাজ্য 

আর তিনদিন পরেই নতুন বছর। স্বাগত ২০২০। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে পুরনো বছরকেও। তাই ২০১৯ সালের বেশকিছু স্মরণীয় ঘটনার সংকলন নিয়ে চলতি বছরের সালতামামি।   বিশদ

29th  December, 2019
একনজরে
উন্নাও, ২৫ মার্চ: মাথা, মুখ তোয়ালে দিয়ে মোড়া। দেখা যাচ্ছে শুধু চোখ দু’টো। পিঠে একটা ব্যাগ। তাতে কিছু বিস্কুটের প্যাকেট আর জলের বোতল। এটুকু সম্বল করেই চড়া রোদে শুনশান রাজপথ ধরে হেঁটে চলেছে ওরা। ...

সংবাদদাতা, পতিরাম: মঙ্গলবার টিভির পর্দায় প্রধানমন্ত্রী আগামী ২১ দিন লকডাউনের কথা ঘোষণা করা মাত্র রাতেই ভিড় শুরু হয়ে যায় পাড়ার মুদির দোকান ও ওষুধের দোকানগুলিতে। ...

 প্যারিস, ২৫ মার্চ: গোটা বিশ্বে করোনা ভাইরাসের নাম করে আর্থিক প্রতারণা বাড়ছে। সতর্ক করে দিল আন্তর্জাতিক পুলিস সংগঠন ইন্টারপোল। বিশ্বের এই স্বাস্থ্য সঙ্কটের মুহূর্তে অনলাইনে কোনও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার সময় ক্রেতাকে পুরোপুরি সতর্ক থাকার আহ্বান জানাল তারা। ...

 নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: লকডাউনের জেরে চরম সঙ্কটে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির গবেষণা। ক্যাম্পাস সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার কারণে নষ্ট হয়েছে বেশ কিছু দামি রাসায়নিক পদার্থ। বেশ কিছু প্রাণী রয়েছে, যাদের ওপর গবেষণা করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন অধ্যাপকরা, সেগুলিকে বাঁচিয়ে রাখা এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮১৪: গিলেটিনের আবিষ্কর্তা জোসেফ ইগনেস গিলেটিনের মৃত্যু
১৮২৭: জার্মান সুরকার এবং পিয়ানো বাদক লুডউইগ ভ্যান বেইটোভেনের মৃত্যু
১৯৯৩: চিত্র পরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম
১৯৭১: স্বাধীনতা ঘোষণা করল বাংলাদেশ, শুরু হল মুক্তিযুদ্ধ
১৯৭৪: চিপকো আন্দোলনের সূচনা
১৯৯৯: সুরকার আনন্দশঙ্করের মৃত্যু
২০০৬: রাজনীতিবিদ অনিল বিশ্বাসের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭৫.১৯ টাকা ৭৬.৯১ টাকা
পাউন্ড ৮৬.৮১ টাকা ৮৯.৯৫ টাকা
ইউরো ৮০.৬৪ টাকা ৮৩.৬৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
25th  March, 2020
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪১,৮৮০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৩৯,৭৩০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪০,৩৩০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৩৮,৮০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৩৮,৯০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
22nd  March, 2020

দিন পঞ্জিকা

১১ চৈত্র ১৪২৬, ২৫ মার্চ ২০২০, বুধবার, (চৈত্র শুক্লপক্ষ) প্রতিপদ ২৯/২৯ অপঃ ৫/২৭। রেবতী অহোরাত্র সূ উ ৫/৩৯/৪১, অ ৫/৪৫/৪৫, অমৃতযোগ দিবা ৭/১৬ মধ্যে পুনঃ ১/৪১ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/৪২ গতে ১০/১৩ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৩ গতে ১/১৩ মধ্যে। কালরাত্রি ২/৪২ গতে ৪/১১ মধ্যে।
১১ চৈত্র ১৪২৬, ২৫ মার্চ ২০২০, বুধবার, প্রতিপদ ২৬/১০/২১ অপরাহ্ন ৪/৯/৪৯। রেবতী ৬০/০/০ অহোরাত্র সূ উ ৫/৪১/৪১, অ ৫/৪৫/৪৯। অমৃতযোগ দিবা ৭/১২ মধ্যে ও ৯/৩২ গতে ১১/১২ মধ্যে ও ৩/২২ গতে ৫/১ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/২৭ গতে ৮/৫৫ গতে ১০/২৭ মধ্যে। কালবেলা ৮/৪২/৪৩ গতে ১০/১৩/১৪ মধ্যে।
২৯ রজব

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আজকের রাশিফল
মেষ:খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে ...বিশদ

07:11:04 PM

ইতিহাসে আজকের দিনে
১৮১৪: গিলোর্টিনের আবিষ্কর্তা জোসেফ ইগনেস গিলেটিনের মৃত্যু১৮২৭: জার্মান সুরকার এবং ...বিশদ

07:03:20 PM

তামিলনাড়ুতে আরও ৩ জনের শরীরে মিলল করোনা ভাইরাস 

11:52:00 PM

আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে প্রথম করোনা আক্রান্তের খোঁজ 

09:02:11 PM

দেশে একদিনে ৮৮ জনের শরীরে মিলল করোনা ভাইরাস, মোট আক্রান্ত ৬৯৪: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক

08:55:45 PM

কৃষ্ণনগরে করোনা আতঙ্কে আত্মহত্যা! 
হোম আইসোলেশনে থাকার নির্দেশ পাওয়ার পর গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী ...বিশদ

08:34:13 PM