উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
জিনওসার গ্রামের প্রত্যেক মেয়ের জীবনেই রয়েছে এক একটি মর্মান্তিক ঘটনা। কেউ জঙ্গিদের হাতে দীর্ঘদিন যৌনদাসী হয়ে বর্বরোচিত অত্যাচারের মুখোমুখি হয়েছেন। কারও স্বামীকে সামনেই খুন করা হয়েছে। কেউ বা জঙ্গি হামলায় পরিবারের সবাইকে খুইয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়েছেন। কেউ আবার দিনের পর দিন ধর্ষণের শিকার হয়ে মা হওয়ার সম্ভবনা হারিয়েছেন। জীবনের ঘটনা যাই হোক না কেন পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এক সরলরেখায় তাঁরা যে অত্যাচারিত এবং অবহেলিত আজ সেটা কোনও রাখঢাক না করেই বলছেন ওই গ্রামের মহিলারা।
সেখানকার বাসিন্দা ২৮ বছর বয়সি জয়নব গাবারী বলেন, ‘আমাদের জীবনে কোনও পুরুষের প্রয়োজন নেই। আমরা এখন বেশ ভালো আছি। যে সমস্ত মেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান, তাঁদের জন্য এটা আদর্শ স্থান।’ মেয়েরা চাইলে কী না করতে পারে? জিনোসার গ্রামের কিছু সর্বহারা স্বল্পশিক্ষিত মহিলা তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। এখানকার সব মেয়েই এই ভাবনায় বিশ্বাসী। আর সেই ভাবনাকে কাজে লাগিয়েই তাঁরা তৈরি করেছেন নিজেদের শান্তির গ্রাম।
জিনওসার গ্রামে ঢোকার পথে সামনের ফটকে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে থাকে বেশ কয়েকজন মহিলা। তারা আইএস পতাকাধারীদের হামলা রুখতে অতন্দ্র প্রহরীর মতো পাহারা দিচ্ছেন। কৃষিকাজ থেকে স্কুলে পড়ানো সব কাজে পারদর্শী এরা। স্থানীয় মহিলা এবং আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে এই গ্রামখানি।
গ্রামের বাড়িগুলোর দেওয়ালে দেওয়ালে আঁকা আছে নারীদের বীরত্বের নানা কাহিনী। শরণার্থী হয়ে না পালিয়ে আইএস জঙ্গিদের মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা। স্বামী হারানো ৩৫ বছরের আমিরা মহম্মদ বলেন, ‘নারী ছাড়া স্বাধীনতা পাওয়া যায় না। যতদিন না নারীরা শিক্ষিত হচ্ছে এই সমাজও ততদিন স্বাধীন হতে পারবে না।’ এই গ্রামের মহিলারা অধিকাংশই কৃষিজীবী।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ার গা ঘেঁষে তৈরি হয়েছে পুরুষবিহীন শান্তির গ্রাম জিনোসার।
তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট, জি নিউজ