বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
বিয়ের অনুষ্ঠানের নেমন্তন্ন পাওয়ার পর সবার সাজসাজ রব পড়ে যায়। আট থেকে আশি ভাবতে শুরু করে কী করে সাজলে বিয়েবাড়ির ভিড়ে সকলের নজর কাড়া যায়। সব থেকে সমস্যা যাঁরা একটু বয়স্ক তাঁদের।
মা মানেই সাদা শাড়ি, লাল পাড় মোটামুটি চিরাচরিত। কিন্তু ঘিয়ে রং বা খুব হালকা হলুদ রং (যা প্রায় সাদার কাছাকাছি) সাদার পরিবর্তে বেশ ভালোই লাগে। শাড়ি যদি ভারী হয় তাহলে আঁচলকে প্লিট করে কাঁধে সেফটিপিন লাগিয়ে নিলে বেশ স্বচ্ছন্দে থাকা যায়। মাথায় ঘোমটা দেওয়ার প্রয়োজন থাকলে আঁচল বড় রাখতে হবে। যাদের চুলের ডগা সরু লম্বা খোঁচা খোঁচা হয়ে গিয়েছে, তাদের অভ্যাস না থাকলেও চুলের নীচটা সমান করে কেটে নেওয়া খুবই জরুরি। চুল কাটা মানেই চুল ছোট করা নয়। যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু কেটে নেওয়া। অনুষ্ঠানের বেশ কিছুদিন আগে থেকে অন্তত ২-৩টে ফেসিয়াল করলে দীর্ঘদিনের অযত্নে মলিন ত্বকে জৌলুস আসবে। আপত্তি থাকলে বাড়িতে অন্তত একটু যত্ন নেওয়া জরুরি। স্টেম উইথ কোলেজেন ফেসিয়াল, তার সঙ্গে বাড়িতে ভিটামিন ক্রিমের ব্যবহার খুবই ফলপ্রদ। ‘মেনটেনেন্স প্যাক’ লাগিয়ে মুখ গলা পরিষ্কার করে নিলে বিনা মেকআপে ৫০ ভাগ ঝকঝকে লাগবে। ‘স্নো’ জাতীয় প্রচুর প্রোডাক্ট বাজারে পাওয়া যায়। মুখে সেটা লাগিয়ে তারপর লুজ পাউডার লাগিয়ে ব্রাশ দিয়ে ভালো করে মিলিয়ে দিতে হবে যাতে ছোপ ছোপ না লাগে। কাজল পরার অভ্যাস না থাকলেও চোখের নীচে ব্রাউন পেনসিল খুব হালকা করে ‘ওয়াটার লাইনে’ লাগলে চোখ উজ্জ্বল ক্লান্তিহীন লাগবে। ঠোঁটে ন্যাচারাল কালারের লিপস্টিক বা লিপবাম শুকনো ঠোঁটকে প্রাণবন্ত ও মসৃণ করবে। মানানসই টিপ পরলেই মেকআপ সম্পূর্ণ। মাথায় হালকা হাত খোঁপা, ফ্রেঞ্চ রোল, ২ পিস বান, টুইস্ট রোল ইত্যাদি। এতে মালা অথবা দু-একটা ফুল লাগানো যেতে পারে।
যে সমস্ত বয়স্ক মহিলা সাজগোজে পটু ও অভ্যস্ত তাঁরা যে কোনও রং বাছতে পারেন। হাল ফ্যাশনের চুল বাঁধা বা খুলে রাখার সঙ্গে চুলের দু-একটা হালকা গয়নার ব্যবহার করা যেতে পারে। এই বয়সে সাজের জন্য একটাই সাবধানতা—বয়স ঢাকার জন্য এমন কিছু সাজা উচিত নয় যা অন্যের চোখে হাস্যকর লাগে। সাজ হবে বয়সোচিত অর্থাৎ ‘গ্রেসফুল এজিং’ শেষ কথা।
মাঝবয়সিদের জন্য সাজের প্রচুর সুযোগ, যেমন খুশি মানানসই রঙের ব্যবহার, হাল ফ্যাশনের পোশাক, চুলের স্টাইল, ট্রেন্ডি আই মেকআপ ও হেয়ার অ্যাক্সেসারিজের ব্যবহার ইত্যাদি। তবে ফ্যাশনের সঙ্গে গা ভাসাতে গিয়ে এমন পোশাক নির্বাচন করা উচিত নয় যা চেহারার সঙ্গে এক্কেবারেই বেমানান। বডি লাইন থেকে যদি পেট বেরিয়ে যায় (ভুঁড়ি) সেক্ষেত্রে টাইট ড্রেস, সি-থ্রু মেটিরিয়ালের শাড়ি, ছোট ঝুল ব্রাউজ দৃষ্টিকটু। খুব ভারী চেহারা হলে স্লিভলেস এড়িয়ে চলা উচিত।
টিন-এজাররা যা খুশি সাজতে পারে তবে এমনভাবে সাজবে যাতে অশালীন ও কুরুচিকর না লাগে। মনে রাখতে হবে বিয়ের অনুষ্ঠান কোনও নাইট ক্লাব বা নিউ-ইয়ার পার্টি নয়। যদি ককটেল ডিনারও থাকে তাহলেও সাজে মাত্রা থাকা জরুরি।
ছোটদের সাজাবার ভার সাধারণত মা ও বাড়ির অন্যদের হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে ‘পাকা পাকা’ না দেখায়। কিছু জিনিস এড়িয়ে চলা ভালো যেমন, হিল জুতো, লম্বা লুটানো পোশাক, বেস মেকআপ, নিম্নমানের উঠতি কোম্পানির কসমেটিক্সের ব্যবহার। খুব ভারী গয়না, বিশেষ করে কানের দুল।
যা সকলের জন্য প্রযোজ্য—
ফল্স আইল্যাশ যদি কেউ প্রথমবার ব্যবহার করেন তবে অবশ্যই তা আগে থেকে লাগিয়ে অভ্যস্ত হতে হবে। এটা ‘স্টেজে মারার’ কাজ একেবারেই নয়।
নতুন কোনও বেস মেকআপ কিনলে তা অবশ্যই মুখে লাগিয়ে দেখে নিতে হবে শেডটা উপযুক্ত কিনা।
শাড়ি হোক না যে কোনও পোশাক, ব্লাউজ অবশ্যই আগে পড়ে ট্রায়াল করা দরকার।
সাজ মানে খুঁতগুলো ঢাকা দিয়ে চেহারার ভালো দিকগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা।
মেকআপ মানে মাস্ক পরা জোকার নয় এবং চেনা মানুষটাকে হারিয়ে না ফেলা।
লম্বা স্ট্রাইপ বা সরু পাড়ে অপেক্ষাকৃত লম্বা দেখায়। যাদের উচ্চতা কম তাদের বড় বড় ফুল বা প্রিন্ট, চওড়া পাড় এড়িয়ে চলা ভালো।
গায়ের রং কালো হলে হালকা রং ছাড়া পড়া যাবে না এই ধারণা সম্পূর্ণ অমূলক। অরেঞ্জ, কালচে লাল ও রানি খুব সুন্দর লাগবে। তবে কালো রঙের ত্বক যদি মসৃণ বা উজ্জ্বল হয় তার সৌন্দর্য একবারেই আলাদা। তবে এর জন্য একটু ঘষামাজা দরকার। ‘ক্লিনিক্যাল সাপোর্টের সঙ্গে রিলেটেড কেয়ার’ অর্থাৎ রূপ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে উপযুক্ত ফেসিয়াল ও বাড়িতে দৈনন্দিন সামান্য কিছু যত্ন একান্ত দরকার। ব্যক্তিগতভাবে আমি ‘কালো’ মেয়েকে দারুণ পছন্দ করি।
কানে খুব বড় ঝোলা দুল, বাঁ হাতে খুব বড় আংটি, ডান হাতে আংটির সঙ্গে সরু একটা চেন যা ব্রেসলেটের সঙ্গে আটকানো থাকে বলে ‘রতন চূড়’, তবে সিঙ্গল। আর কোনও গয়না নয়।
সাজের ৫০ ভাগ নির্ভর করে সঠিক চুলের স্টাইলের ওপর। তা বাঁধাই হোক বা খোলা। অভিজ্ঞ প্রফেশনালকে এই দায়িত্ব দিতেই হবে, অন্যথায় সাজের সর্বনাশ।
‘ল্যাকার’—চুলের ‘ব্লিচ’ স্কিনের সব থেকে বড় শত্রু।
আই মেকআপের ব্যাপারে সব থেকে বেশি সতর্কতা দরকার। সাজটা নিজের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানানসই হতেই হবে। সিরিয়াল ও ইন্টারনেটের প্রভাবে চোখের মেকআপ এমন জায়গায় গিয়েছে যে দেখে বোঝা দায় বিয়েবাড়ির সাজ না আইটেম নাম্বারের নর্তকীর সাজ। আইশ্যাডো, গ্লিটার, সিমার, লাইনার খোল—সবের ব্যবহার এমন হবে যাতে চোখ হবে স্নিগ্ধ ও মায়াবি। উগ্র চোখের মেকআপ এই সাজের উপযুক্ত নয়।
ত্বক ও চুলের ঘষামাজা না করে নিলে সাজ সুন্দর হয় না। টিন এজারদের জন্য বায়োকেমিক, নিম, অ্যালোভেরা ‘স্কিন কেয়ার’ (ফেসিয়াল) থেকে শুরু করে সব বয়সের স্কিনের উপযুক্ত নানান লেটেস্ট ফেসিয়াল যেমন, টেলোমেয়ার, স্যাফরন, জিও ফার্মা থেকে শুরু করে প্ল্যাটিনাম, ডায়মন্ড পাওয়া যায়। অয়েলি, ট্যান ও ব্রণ, র্যাস যুক্ত স্কিনের জন্য ‘ক্রশ স্কিন’ ফেসিয়াল একমাত্র সমাধান ও ফলপ্রদ। পায়ের জন্য আছে আইসক্রিম, ওয়াক্স ও ব্রাজিলিয়ান পেডিকিওর। যাদের কিছুই করার সময়, ইচ্ছা বা সামর্থ্য নেই তারা শুধুমাত্র হার্বাল ‘ব্রাজিলিয়ান পিলিং’ বা টোনিং করিয়ে নিলে ৬০-৭০ শতাংশ ট্যান পরিষ্কার ও টানটান হয়ে যাবে। ঝকঝকে স্কিন আত্মবিশ্বাসী করে তোলে যা সৌন্দর্যের চাবি কাঠি।
সব থেকে ভালো হল অভিজ্ঞ প্রফেশনালের কাছে সাজার সিদ্ধান্ত। যদি সামর্থ্যে না কুলায় তা হলে আপনার জন্য কেমন, কী, কোনটা
সব থেকে ভালো লাগবে তার একটা ডিজাইন অর্থাৎ পরামর্শ নিন।
যোগাযোগ: শাকম্ভরী, শ্যামবাজার, কল-৪, ফোন: ৯১৬৩৪১৪৪৪৩