ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
রোগ হইতে আরোগ্য-লাভের জন্য যেমন নিজেকে ঔষধসেবনাদি করিতে হয়, সেই প্রকার ভববন্ধন হইতে মুক্তিলাভের জন্য উপযুক্ত সাধনসমূহ অবলম্বন করা বিচারশীল ব্যক্তিগণের কর্তব্য।
আজ তুমি যে প্রশ্ন করিয়াছ, তাহা অতি উত্তম। এইরূপ প্রশ্ন শাস্ত্রজ্ঞ ব্যক্তিগণের দ্বারা সমর্থিত, অতি সংক্ষিপ্ত অথচ গভীর ভাবপূর্ণ এবং মুমুক্ষু ব্যক্তিগণের জ্ঞাতব্য। হে প্রিয় শিষ্য, তোমাকে যাহা বলিতেছি, তাহা মনোযোগ-সহকারে শ্রবণ কর। ইহা শ্রবণের ফলে তুমি অচিরে সংসারবন্ধন হইতে মুক্তিলাভ করিবে। অনিত্য বস্তুসমূহে তীব্র বৈরাগ্য মোক্ষলাভের প্রধান কারণ বলিয়া কথিত হয়। ইহার পর মোক্ষলাভের অন্যান্য সহায়ক—শম, দম, তিতিক্ষা ও শ্রুতিবিহিত কর্মসমূহের নিঃশেষে ত্যাগ।
(সাধনচতুষ্টয়সম্পন্ন সাধকের সাধনক্রম এইরূপ) —প্রথমে গুরুমুখে আত্মার স্বরূপ এবং মহাকাব্য-শ্রবণ, তাহার পর শ্রুতিবাক্যের মনন, পরে সুদীর্ঘকাল ধরিয়া সর্বক্ষণ অব্যবহিতভাবে আত্মস্বরূপের ধ্যান। এই সকলের অনুষ্ঠানের ফলে বিচারশীল সাধক বিকল্পরহিত আত্মস্বরূপ উপলব্ধি করিয়া এই জীবনেই নির্বাণসুখ লাভ করেন।
আত্মা ও অনাত্মার মধ্যে যে পার্থক্য বিচার তোমার জন্য প্রয়োজন তাহা এখন তোমাকে বলিতেছি। উহা ভালভাবে শুনিয়া নিজের মনে বেশ করিয়া বুঝিয়া লও।মজ্জা, অস্থি, চর্বি, মাংস, রক্ত, চামড়া ও ত্বক্—এই সাতটি ধাতুর দ্বারা গঠিত এবং পা, ঊরু, বুক, হাত, পিঠ ও মাথা—এই সকল অঙ্গ ও উপাঙ্গসংযুক্ত এই শরীর।
‘আমি ও আমার’ এই প্রকার মোহের আশ্রয়রূপে প্রসিদ্ধ, এই দেহকে পণ্ডিতগণ স্থূলশরীর বলিয়া থাকেন। (এই স্থূলশরীরে) আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল ও মৃত্তিকা এই পাঁচ সূক্ষ্মভূত আছে।
[পঞ্চীকরণের নিয়মানুসারে] এই সূক্ষ্মভূতসমূহ পরস্পরের সহিত মিলিত হইয়া স্থূলশরীর—উৎপত্তির হেতু পাঁচটি স্থূলভূতরূপে পরিণত হয়। পঞ্চসূক্ষ্মভূতের গুণসমূহ ভোক্তা জীবের সুখ-উৎপাদনের জন্য শব্দ, স্পর্শ, রূপ, রস ও গন্ধ এই পাঁচটি বিষয়ের রূপগ্রহণ করে।
যে-সকল মূঢ়ব্যক্তি তীব্র আসক্তির বশে বিষয়ভোগে প্রমত্ত থাকে, তাহারা স্বস্ব কর্মফলের দ্বারা চালিত হইয়া কখনও বা পশু, তির্যক প্রভৃতি জীবযোনিতে জন্মগ্রহণ করে; আবার কখন স্বর্গাদি লোকের সুখভোগ করে। (এইভাবে তাহারা জন্মমৃত্যুরূপ সংসার দুঃখ ভোগ করিতে থাকে)।
শঙ্করাচার্যের ‘বিবেকচূড়ামণি’ থেকে