ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
এদিন গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, টুঙ্গি গ্রামের যে অফিসে গুলি চলেছিল সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দূরে তিনজন পুলিস কর্মী বসে রয়েছে। ঘটনার সময় দলীয় অফিসেই ছিলেন সিরাফ আলি নামে এক প্রবীণ তৃণমূল কর্মী। তিনি বলেন, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেও দলীয় অফিসে বসে আমরা গল্প করছিলাম। মোট ৬জন সেসময় সেখানে ছিলেন। নিমাইবাবু একপাশে ছিলেন। হঠাৎ করেই দেখি পাঁচজন মুখে কালো কাপড় বেঁধে অফিসে ঢুকছে। কোনও কথা না বলেই তারা নিমাইবাবুকে গুলি করতে থাকে। পরপর ৬-৭টি গুলি করা হয়। বাধা দিতে গেলে ওরা আমার দিকে পিস্তল তাক করে। ভ্রমর নামে আরেক তৃণমূল কর্মীও তাঁকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন। দুষ্কৃতীরা তাঁর পায়ে গুলি করে। তা দেখে বাকিরা ছুটে অফিস থেকে পালিয়ে যায়। দুষ্কৃতীরা নিমাইবাবুর মৃত্যু নিশ্চিত করে পার্টি অফিসের সামনের রাস্তা দিয়ে হেঁটে টুঙ্গি গ্রামের মাঠের দিকে চলে যায়। রাস্তার দু’পাশে অনেক বাড়ি রয়েছে। গুলির শব্দ শুনে অনেকে বেরিয়েও আসে। কিন্তু দুষ্কৃতীদের হাতে রিভলভার থাকায় কেউ তাদের ধরার সাহস পায়নি। দুষ্কৃতীদের প্রত্যেকের বয়স ২০-২৫বছরের মধ্যে। তারা নিমাইবাবুকে মারার টার্গেট নিয়ে এসেছিল সেটা পরিষ্কার।
দলীয় অফিস থেকে প্রায় ৭০০মিটার দূরে গোঘাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে ওই প্রধান শিক্ষকের বাড়ি। তাঁর মৃত্যুর পর পরিবারের সবাই শোকে ভেঙে পড়েছেন। নিমাইবাবুর মেয়ে শাওনী মণ্ডল বলেন, বাবা গ্রামে জনপ্রিয় ছিলেন। সেটা ওই নেতা মেনে নিতে পারত না। ওরা বিভিন্ন প্রকল্পে গ্রামের গরিব লোকেদের কাছে থেকে টাকা নিত। বাবা তার প্রতিবাদ করত। সেকারণে গতবছর আমাদের বাড়িতে ও লোকজন নিয়ে এসে হামলা করেছিল। মৃতের স্ত্রী অপর্ণা মণ্ডল বলেন, ওই নেতা কয়েকদিন আগে ওঁকে হুমকি দিয়ে বলেছিল বাড়ির লোকজনদের তোর ছবি বাঁধিয়ে রাখতে বলিস। কিন্তু আমার স্বামী কোনওদিনই অন্যায়কে প্রশয় দিত না। সেকারণেই ওঁর উপর ওদের এত বেশি রাগ ছিল।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, নিমাইবাবু বালি-১ পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন। পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে তাঁর বিরোধ ছিল। সেকথা দলের জেলা সভাপতি আবু তাহেরও সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে স্বীকার করেছেন। যদিও ওই এলাকা থেকে নির্বাচিত মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল নেতা মোশারফ হোসেন মণ্ডল বলেন, কংগ্রেস এবং বিজেপি একজোট হয়ে নিমাইবাবুকে খুন করেছে। কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস এবং বিজেপির জেলা সহ সভাপতি শাখারভ সরকার পাল্টা দাবি করেছেন, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা হয়েছে।