ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
এখনও অবধি ৫০ হাজার ৩৭৬টি বাড়ির রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। তার মধ্যে ১৮ হাজার ১৪৮টির জিও ট্যাগ করা হয়েছে। জিওট্যাগ হওয়ার পর এই যোজনায় ৯৯৭০ জনের বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির টাকা বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। তবে, গ্রাম পঞ্চায়েত কিংবা পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে যাতে আবাস যোজনায় কাটমানি খাওয়ার ঘটনা না ঘটে, সেজন্য বিডিওদের কড়া নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে এনিয়ে একটি নির্দেশিকাও জেলায় জেলায় পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, আবাস যোজনা প্রকল্পে সবরকম অনিয়ম এড়িয়ে চলতে হবে। কোনও স্তরে উপভোক্তার কাছ থেকে টাকা নেওয়া যাবে না। এধরনের কোনও অভিযোগ উঠলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই মতো জেলা প্রশাসনও প্রতিটি ব্লকের বিডিওকে এব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন।
জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, আমাদের জেলায় বাংলা আবাস যোজনায় ৮২ হাজার ৫৮৮টি বাড়ি তৈরি করা হবে। কোন ব্লকের জন্য কত সংখ্যক কোটা রয়েছে, তা নির্দিষ্ট করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন রেজিস্ট্রেশন এবং জিও ট্যাগ পর্ব শেষ হওয়ার পরই অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকতে শুরু করবে। একটা কিস্তির টাকায় কাজ এগনোর পর বাড়ি তৈরির পরবর্তী কিস্তির টাকা পাওয়া যাবে। উপভোক্তা সহ নির্মীয়মাণ বাড়ির ছবি ট্যাগ করে দিল্লিতে পাঠাতে হবে। কেননা, গোটা বিষয়টি সেখান থেকেই মনিটরিং করা হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভগবানপুর-১ ব্লকে ৬০১৩টি, ভগবানপুর-২ ব্লকে ৩৭০৭টি, চণ্ডীপুর ব্লকে ৩৯০৭টি, কাঁথি-১ ব্লকে ৩১৫৩টি, দেশপ্রাণ ব্লকে ৩৮৪০টি, কাঁথি-৩ ব্লকে ২৯৫২টি, এগরা-১ ব্লকে ২৮৯৫টি, এগরা-২ ব্লকে ৩৬৭৪টি, হলদিয়া ব্লকে ১৬১৯টি, খেজুরি-১ ব্লকে ২৫২২টি, খেজুরি-২ ব্লকে ৫৩২৮টি, কোলাঘাট ব্লকে ২৪৫২টি, মহিষাদল ব্লকে ১৯৭৭টি, ময়না ব্লকে ৩৮৯১টি, নন্দকুমার ব্লকে ৩৫৯৭টি, নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে ৬৮৪৬টি, নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে ১৪৭২টি, পাঁশকুড়া-১ ব্লকে ৪৭৬৭টি, পটাশপুর-১ ব্লকে ২৬৬০টি, পটাশপুর-২ ব্লকে ২২০৫টি, রামনগর-১ ব্লকে ১৯৮৭টি, রামনগর-২ ব্লকে ২১৬৯টি, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে ২৩২৬টি, সুতাহাটা ব্লকে ২৩৮১টি এবং তমলুক ব্লকে ৪২৪৮টি বাড়ি তৈরির কোটা পাঠিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, আর্থ-সামাজিক সেন্সাস রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রায়োরিটি লিস্ট থেকেই বাংলার আবাস যোজনা প্রকল্পে উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়। ওই প্রকল্পে একজন উপভোক্তা মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পান। তার মধ্যে প্রথম কিস্তিতে ৬০হাজার টাকা দেওয়া হয়। প্রথম কিস্তির টাকায় বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হওয়ার পর দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ আরও ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। সবশেষে ১০ হাজার টাকা উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। সব মিলিয়ে একজন উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে ১লক্ষ ২০হাজার টাকা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ১০০দিনের কাজের প্রকল্পে ৯০টি কর্মদিবস সংশ্লিষ্ট উপভোক্তার।
বাংলার আবাস যোজনা প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি কাটমানি খাওয়ার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। উপভোক্তাকে পঞ্চায়েতের কর্মকর্তাদের ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয় বলে অভিযোগ। তা না হলে নাম বাদ পড়ার ভয় দেখানো হয়। অনেক ক্ষেত্রে কাটমানি দিতে গিয়ে উপভোক্তার বাড়ি তৈরির কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এনিয়ে অনেক সময়ই প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জমা পড়ে। কিন্তু, তাতে কোনও সুরাহা পাওয়া যায় না। বাংলার আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির টার্গেট সম্পূর্ণ না হওয়ার পিছনে কাটমানি একটা বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। ২০ হাজার বেরিয়ে যাওয়ার পর উপভোক্তা আর বাড়ির কাজ সম্পূর্ণ করতে পারেন না। তাই এবার বিডিওদের এব্যাপারে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।