ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
ইতিপূর্বেই স্বামী বিবেকানন্দর মহৎ আদর্শে অনুপ্রাণিতা অপর এক পাশ্চাত্য মহিলা ক্রিস্টীন গ্রীনস্টাইডেল এদেশে পৌঁছিয়াছিলেন। এইবার তিনি নিবেদিতার কার্যে সহযোগিনী হইলেন। ক্রিস্টীনের চারিত্রিক গুণাবলী স্বামীজীকে মুগ্ধ করিয়াছিল। আদর্শের প্রতি ক্রিস্টীনের অবিচল নিষ্ঠা দর্শনে স্বামীজীর প্রত্যয় প্রকাশলাভ করিয়াছে ক্রিস্টীনের প্রতি স্বামীজীর আশীর্বাণীতে—‘‘আমি জানি যে তুমি মহৎ, এবং তোমার মহত্ত্বে আমার সর্বদা আস্থা আছে। আর সকল বিষয়ে ভাবনা হইলেও তোমার সম্পর্কে আমার অনুমাত্র দুশ্চিন্তা নাই। ...কোনো বাধা বিঘ্ন মুহূর্তের জন্যও তোমাকে অবসন্ন করিতে পারিবে না। প্রকৃতপক্ষে ক্রিস্টীন অনুভব করিতেন—কোনো মহৎ কার্যে আত্মদান করিবার প্রতীক্ষায়ই তিনি রহিয়াছেন। গতানুগতিক জীবনের প্রতি বিন্দুমাত্র আকর্ষণ তাঁহার ছিল না। তাই স্বামীজীর উদাত্ত আহ্বানে তাঁহার বহু প্রতীক্ষিত চিত্ত সামান্যতম দ্বিধা দ্বারাও ছায়াচ্ছন্ন হয় নাই। সত্যপথের সন্ধানলাভে তাঁহার উন্মুখ চিত্ত বিবেকানন্দের অদ্ভুত আধ্যাত্মিক শক্তির স্পর্শে নবচেতনায় উদ্বুদ্ধ হইয়া উঠিল। ভারতবর্ষের নারীজাতির কার্যে আত্মোৎসর্গ তাঁহার জীবনের প্রধান ব্রত হইল।
ভারতবর্ষে আসিয়া ক্রিস্টীন তাঁহার ভবিষ্যৎ কর্মপদ্ধতি সম্বন্ধে অবহিত হইয়াছিলেন স্বয়ং স্বামীজীর নিকট শিক্ষালাভ করিয়া। এদেশের নারীজাতির প্রকৃত অবস্থার সহিত পরিচিত হওয়ার তাঁহার যথেষ্ট প্রয়োজন ছিল। আত্মাভিমানের লেশমাত্রও চিত্তকে ক্ষুণ্ণ করিবে না; পূর্ণ শ্রদ্ধার সহিত এ দেশের অধিবাসীকে নিজ দেশবাসিরূপে গ্রহণ করিয়া তাহাদের কল্যাণকার্যে অগ্রসর হইতে হইবে—পাশ্চাত্য শিষ্যগণের প্রতি স্বামীজীর এইরূপ দৃঢ় নির্দেশ ছিল। স্বামীজীর আশীর্বাণীকে সফল করিয়া ক্রিস্টীনের কার্যে ইহার কণামাত্রও ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয় নাই। নিবেদিতার পত্রও ক্রিস্টীনের এই পরিচয়ই ব্যক্ত করে— ‘‘শান্ত, নির্ভরশীল— তার স্বভাবে ঔদ্ধত্য নেই; অনুগত ও সহৃদয়।’’