শিক্ষার জন্য দূরে কোথাও যেতে পারেন। প্রেম-প্রণয়ে নতুন যোগাযোগ হবে। বিবাহের কথাবার্তাও পাকা হতে পারে। ... বিশদ
বৃহস্পতিবার জয়েশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিদের হামলায় পাকিস্তানের যোগ স্পষ্ট। জয়েশ সুপ্রিমো মাসুদ আজহার ছ’মাস আগে পাকিস্তানের মাটিতে বসেই এই হামলার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করেছিল। এছাড়াও কনভয়ে এই হামলায় ইসলামাবাদের যোগ থাকার প্রমাণও এসে গিয়েছে ভারতের কাছে। প্রাথমিকভাবে নরেন্দ্র মোদি সরকারের লক্ষ্য, কূটনৈতিক দিক থেকে সন্ত্রাসের আঁতুড়রাষ্ট্রটিকে একঘরে করে দেওয়া। ইতিমধ্যেই মোস্ট ফেভারড নেশনের তকমা কেড়ে নিয়েছে ভারত। যার ফলে বাণিজ্যিক দিক থেকে শিরে সংক্রান্তি অবস্থা তৈরি হবে পাকিস্তানের। তারপর কেন্দ্রীয় সরকার আন্তর্জাতিক স্তরে ইমরানের দেশকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য তৎপর হয়েছে। এই সবই অবশ্য অস্ত্রে শান দেওয়ার মতো। আসল কাজটা মোদি করে দিয়েছেন হামলার ঠিক পরদিন সকালে। সাফ জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যাঘাতের। সঠিক সময়ে, সঠিক জায়গায় ওরা মারবে। এই মর্মান্তিক হামলার নেপথ্যে যারা আছে, তাদের একজনও ছাড় পাবে না।
গোটা দেশ এই মুহূর্তে ঠিক যতটা শোকস্তব্ধ, ঠিক ততটাই ক্ষুব্ধ। প্রত্যাঘাত চাই। এই একটাই দাবি। এখন প্রশ্ন হল, ভোটের ঠিক আগে ছোটখাট যুদ্ধ, কিংবা আরও একটা সার্জিকাল স্ট্রাইকের মতো সিদ্ধান্ত মোদি সরকার কি নেবে? সার্জিকাল স্ট্রাইক যদি হয়, তাহলে বিষয়টা গোপনেই হবে। সেক্ষেত্রে অপারেশন শেষ করার পর ভারত যদি দাবি করে, সেনাবাহিনী পাকিস্তানে ঢুকে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অমুক অমুক ‘সাফল্য’ হাসিল করেছে, সরকারিভাবে তার প্রতিরোধ ইমরান খানের সরকার করতে পারবে না। তাহলে তাদের স্বীকার করতে হবে, তারা জঙ্গি মদত দিয়ে থাকে। বরং সে ক্ষেত্রে ইসলামাবাদ দাবি করবে, এমন কিছুই হয়নি। মাঝখান থেকে দেশের মানুষের কাছে হিরো হয়ে গিয়ে নরেন্দ্র মোদি আসন্ন লোকসভা ভোটে নিজের ভিত মজবুত করে ফেলবেন। কারণ একটাই, পাকিস্তানের বিরোধিতা এখনও দারুণ পণ্য। মনোগ্রাহীর থেকে একে ভোটগ্রাহী বললে খুব ভুল বলা হয় না। কিন্তু যদি ভারত পাকিস্তানকে সরাসরি জবাব দেওয়ার পথে যায়? তাহলে উদ্বেগের বিষয়। সেক্ষেত্রে উপমহাদেশে প্রবল অশান্তির সৃষ্টি হবে। পাকিস্তানও ছেড়ে দেবে না। সবচেয়ে বড় ভাবনার বিষয়, দুই দেশের কাছেই পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। আর ইসলামাবাদ আগেও বহুবার হুমকি দিয়ে রেখেছে, সেরকম পরিস্থিতি এলে পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগে তারা পিছপা হবে না। আন্তর্জাতিক মহল বা রাষ্ট্রসঙ্ঘও এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হতে দেবে না। এতকিছু সামলে যদি পাকিস্তানকে মোদি উচিত শিক্ষা দিতে পারেন, তাহলে ভোটে অবশ্যই তিনি অনেক এগিয়ে শুরু করবেন।
পাকিস্তানও কিন্তু বসে নেই। তারা ইতিমধ্যেই সীমান্তে তাদের সেনাকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। অর্থাৎ তারা আশঙ্কা করছে, ভারত প্রত্যাঘাত করবে। জনমত যে দিকে গিয়েছে, তাতে হয়তো কিছু একটা পথ মোদি সরকার নেবে। তবে তা হতে হবে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে। দেশের আসন্ন লোকসভা ভোট এবং আন্তর্জাতিক নজরদারির কথা মাথায় রেখে। পাকিস্তান চলে তাদের সেনা এবং আইএসআইয়ের অঙ্গুলিহেলনে। প্রথমে ভারতের উপর আক্রমণ শানালে যদি আন্তর্জাতিক মহলে কোণঠাসা হতে হয়, তাহলেও তাদের কিছু আসে যায় না। কারণ, পাকিস্তানের বাটপাড়ের ভয় নেই। ভারতের কিন্তু আছে। নয়াদিল্লি এই মুহূর্তে দক্ষিণ এশিয়া তথা বিশ্বের অন্যতম শক্তি হিসেবে উদীয়মান। কাজেই, বেচাল দিয়ে সব কিছু হারাতে মোদি অবশ্যই চাইবেন না। তাহলে কী? দফায় দফায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সেই উপায়ই হয়তো খুঁজে চলেছে নয়াদিল্লি।