শিক্ষার জন্য দূরে কোথাও যেতে পারেন। প্রেম-প্রণয়ে নতুন যোগাযোগ হবে। বিবাহের কথাবার্তাও পাকা হতে পারে। ... বিশদ
কিন্তু ২০১১ সালে বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাম জমানার অবসানের পর ছবিটি ধীরে ধীরে বদলাতে থাকে। মমতার নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকার উন্নয়নের নিরিখে রাজ্যের নাগরিকদের সামনে তো বটেই, গোটা দেশের সামনেই নতুন নজির সৃষ্টির পথে এগতে থাকে। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাফল্যের সপ্তরথ চালাতে থাকে। মাত্র কয়েক বছর আগেও যেগুলি নেহাতই অসম্ভব বলে অনেকের ধারণা ছিল, সেগুলিও মমতা আমলে দিব্যি সম্ভব হতে থাকে। যে প্রত্যন্ত এলাকায় আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটে, জঙ্গলমহলের মতো পিছিয়ে থাকা এলাকাতেও একের পর এক সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, নতুন নতুন স্কুল, কলেজ এমনকী বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে চলতি সরকার নজির সৃষ্টি করে। একদিকে বাম আমলের রেখে যাওয়া বিশাল অঙ্কের ঋণের বোঝা বয়ে চলা, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের দিক থেকে সম্ভাব্য সমস্তরকমের অসহযোগিতা সত্ত্বেও অদ্ভুত জাদুমন্ত্রে পশ্চিমবঙ্গের চেহারাটাই বদলে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ তাঁর অনন্য কৃতিত্ব, এব্যাপারে সংশয়ের অবকাশ নেই।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। আছে আরও অনেক বড় সাফল্যের নজির। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি পর্যায়ের সঙ্গেই জড়িত নানান প্রকল্প উপহার দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বকীয় ভাবনার ক্ষেত্রে অভিনবত্বের পরিচয় দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত এরকমই একটি অনন্যসাধারণ প্রকল্পের নাম কন্যাশ্রী। ওই প্রকল্প রাজ্য তো বটেই, দেশের চৌহদ্দি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পর্যন্ত সাড়া ফেলে দিয়েছে। সেই সুবাদে কয়েক বছর আগেই তা বিশেষ পুরস্কার ছিনিয়ে এনেছে। মমতার কন্যাশ্রী প্রকল্পের অনুসরণে দেশের একাধিক রাজ্য তো বটেই, কেন্দ্রীয় সরকারও প্রায় অনুরূপ প্রকল্প এনেছে। মমতার কন্যাশ্রী বিশ্বশ্রী হওয়া পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে নিসন্দেহে প্রভূত সম্মানের ব্যাপার।
আবার, কন্যাশ্রীর সাফল্যের রেশ মেলানোর আগেই গত কয়েকদিনের মধ্যে আরও দুটি প্রকল্প আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাফল্যের দৌড়ে একেবারে সামনের সারিতে চলে এল। মঙ্গলবারই খবর এসেছিল, রাষ্ট্রসঙ্ঘের ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটির(ডব্লুএসআইএস) ক্যাপাসিটি বিল্ডিং বা দক্ষতা বৃদ্ধি বিভাগে বিশ্বের নানা দেশের মোট ১৪৩টি প্রকল্পের মধ্যে সেরা পাঁচে জায়গা করে নিয়েছে মমতার মস্তিষ্কপ্রসূত ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্প। এরপর বুধবার জানা গেল, মমতার আরও একটি অনন্যসাধারণ প্রকল্প ‘সবুজ সাথী’ও রাষ্ট্রসঙ্ঘের ওই কমিটির প্রতিযোগিতামূলক পুরস্কার পর্বে ই-গভর্নমেন্ট বিভাগে সেরা পাঁচের একটি হয়েছে। ওই বিভাগে গোটা বিশ্ব থেকে পেশ হওয়া প্রতিযোগী প্রকল্পের মোট সংখ্যা ছিল ১১৪০। স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে বিনামূল্যে সাইকেল বিলির এই সামাজিক প্রকল্প সম্পর্কে রাষ্টসঙ্ঘ উচ্ছ্বসিত। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সংশ্লিষ্ট কমিটি তার ওয়েবসাইটে লিখেছে—‘দি বাইসাইকেল, লিটারেলি, ইজ ব্রেকিং মেনি বাউন্ডারিজ’। সোজা বাংলায় বলা যায়, বাইসাইকেল আক্ষরিক অর্থেই অনেক গণ্ডি ভেঙেছে।
সত্যিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে বাংলা অনেক গণ্ডিই ভাঙল। এগুলি রাজ্যবাসীর জন্য সুখের তো বটেই, গর্বের খবরও।