শিক্ষার জন্য দূরে কোথাও যেতে পারেন। প্রেম-প্রণয়ে নতুন যোগাযোগ হবে। বিবাহের কথাবার্তাও পাকা হতে পারে। ... বিশদ
প্রবীণ কৃষক নেতা রেজ্জাক মোল্লা রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই আস্থাজ্ঞাপন করেছেন। তিনি তৃণমূল সরকারেও মন্ত্রী। এই সরকারের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লাকে মঙ্গলবার বস্তুত পুরনো মেজাজে পাওয়া গেল। মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির এক অনুষ্ঠানে কৃষকের পক্ষ নিয়ে কিছু সোজা কথা তিনি সোজাসাপটা বলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ভোটের আগে সবাই কৃষকের বন্ধু সাজে। কেন্দ্র বা রাজ্য—রাজনীতির ময়দানে চাষির জন্য দরদ সবারই। কিন্তু, তাদের প্রকৃত আর্থিক উন্নয়নে কোনও সরকারেরই তেমন গা নেই। এই যেখানে অবস্থা সেখানে ‘অংশীদারি কৃষি’ বা ‘পার্টিসিপেটরি ফার্মিং’ ছাড়া উপায় নেই। তাঁর দাবি, চাষি যদি ফসলের যথাযথ দাম পেতে চায় তবে অংশীদারি কৃষির বিকল্প নেই। এই উপায়ে চাষির পক্ষে কৃষিপণ্যের বাজার পাওয়া সহজ হয়ে যাবে। তাঁর আক্ষেপ, যতক্ষণ না চাষি তার পণ্য ঠিকঠাক বাজারজাত করতে পারছে এবং উপযুক্ত দাম পাচ্ছে—ততক্ষণ কৃষি অর্থনীতির উন্নতি সম্ভব নয়। দেশের সার্বিক আর্থিক উন্নতিও এর উপর নির্ভর করছে। কারণ, দেশের ৬৭ শতাংশ মানুষ এখনও কৃষিজীবী। এই প্রসঙ্গে তাঁর স্বভাবসুলভ কিন্তু মোক্ষম মন্তব্যটিও প্রণিধানযোগ্য—অংশীদারি কৃষি নাহলে চাষি ‘চাষা’ই রয়ে যাবে। অর্থাৎ কৃষক সম্প্রদায় চির অবহেলিতই রয়ে যাবে। তিনি মনে করেন, কৃষিক্ষেত্রের এই উন্নতি ছাড়া দেশ এগবে না। তিনি আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে চরম সত্যটি উচ্চারণ করেছেন, আমাদের এখানে চাষআবাদ নিয়ে অনেক আলোচনা হয় কিন্তু মাটিতে নেমে কেউ বাস্তব সমস্যার কথা বলে না। আলু এবং আম চাষের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথাও তিনি বলেছেন। অংশীদারি কৃষিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সাফল্যের কথাটি জানাতেও ভোলেননি রেজ্জাক সাহেব। তিনি জানান, মিলিতভাবে কৃষক এবং ব্যবসায়ীদের ৩০টি অংশীদারি সংস্থা কাজ করছে। এইসব সংস্থায় কৃষক এবং ব্যবসায়ী উভয়েরই মালিকানা স্বীকৃত। যেহেতু এরাজ্যে মাথাপিছু জমির পরিমাণ কম তাই একাধিক কৃষককে যুক্ত করেই এই ধরনের সংস্থা খোলা হচ্ছে। এই উদ্যোগের বিশেষত্ব হল—জমির মালিকানা বজায় রেখেও আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা পাচ্ছে কৃষকরা। কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণে কৃষক এবং ব্যবসায়ী উভয়েরই স্বার্থ সুরক্ষিত থাকছে।
কৃষি এবং কৃষকের উন্নতির জন্য রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। তবে, বাজার পাওয়ার প্রশ্নে এখনও অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। রাজ্য সরকারকে সেই বাধা দ্রুত অতিক্রম করতে হবে। তা নাহলে অংশীদারি কৃষির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি সম্ভব হবে না। এই প্রসঙ্গে চুঁচুড়ায় ১০ একর জায়গার উপর ১৪ কোটি টাকায় যে উৎকর্ষ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে—আশা করা যায়, অংশীদারি কৃষির সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ওই কেন্দ্র বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।