উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
শুক্রবার সকাল থেকেই মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বহির্বিভাগ খুলে দেওয়া হয়। লাইনে দাঁড়ান জেলার বিভিন্ন প্রান্ত এবং অন্যান্য জায়গা থেকে আসা রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকেরা। কিন্তু চিকিৎসকদের দেখা মেলেনি। একজন কর্মী টিকিট ঘরে খুলে কিছুক্ষণ পরেই চলে যান। কয়েকজন বহির্বিভাগের টিকিট পেয়েছেন বলে দাবি করলেও বেশির ভাগ রোগীর কপালে শিকে ছেঁড়েনি। যাঁরা টিকিট পেয়েছিলেন তাঁদের বেশিরভাগই চিকিৎসকদের দেখা পাননি। ঘণ্টা দেড়েক বহির্বিভাগ খোলা থাকলেও কোনও কাজই কার্যত হয়নি। বেলা বাড়তে থাকলে জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ এসে জরুরি বিভাগ বন্ধ করে দেন। জরুরি বিভাগের পরিষেবা চালু রাখার জন্য সব রকম চেষ্টা চালান মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে যেসব রোগীরা ভর্তি রয়েছেন তাঁদের চিকিৎসা চালু রেখেছেন সিনিয়র চিকিৎসকরা। আইএমএ’র এক প্রতিনিধি দল মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে যান এদিন বিকালে। ওই প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, চিকিৎসকরা রোগী দেখছেন না বলে কোনও কোনও মহল থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে। সাম্প্রতিক অচলাবস্থার মধ্যেও সিনিয়র চিকিৎসকরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
যদিও মাতৃমা বিভাগে ভর্তি থাকা কয়েকজন রোগিণী জানান, তাঁরা অসহায় অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের দেখা পাওয়া ভার। ফলে চরম আশঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা। সাধারণ মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা ফুলমালা হালদারের(৫৮) চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সপ্তাহের শুরুতেই ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। বামনগোলার নন্দিনাদহ গ্রামের বাসিন্দা ওই রোগিণীর শুক্রবার সকালে মৃত্যু হয়। তাঁর জামাই ননী সরকারের দাবি, বুধবার থেকে কার্যত বিনা চিকিৎসায় পড়েছিলেন ফুলমালা। ফলে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। যদিও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে মৃতার পরিবার কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি।
এদিন বিকাল থেকেই ইস্তফার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ৩৬জন চিকিৎসক একসঙ্গে ইস্তফা দিয়েছেন। এছাড়াও অনেকে ব্যক্তিগতভাবে ইস্তফা দিয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। বাকি চিকিৎসকরাও এই পথে হাঁটবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক রামতনু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কাজ করা অসম্ভব। জুনিয়র ডাক্তারদের বাদ দিয়ে হাসপাতাল চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে যেকোনো সময় বড় সমস্যা হতে পারে। তাই ইস্তফা দিচ্ছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীণ অধ্যাপক চিকিৎসক বলেন, রাজ্য সরকার চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বলে মনে হচ্ছে। তারই প্রতিবাদে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এদিকে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা এদিন মাথায় নকল ব্যান্ডেজ বেঁধে ও কালো ব্যাজ পড়ে রোগী দেখেন। চিকিৎসকদের উপর সাম্প্রতিক হামলার পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁদের এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে।