শিক্ষার জন্য দূরে কোথাও যেতে পারেন। প্রেম-প্রণয়ে নতুন যোগাযোগ হবে। বিবাহের কথাবার্তাও পাকা হতে পারে। ... বিশদ
প্রকল্পটি সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় সরকারের হলেও, এটি যে লোকসভা নির্বাচনের আগে গরিবদের মন জয়ের মরিয়া চেষ্টা, তা বলাই বাহুল্য। রবিবার উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে প্রকল্পের সূচনাতেই তা স্পষ্ট। রাজনৈতিক মহলের মত, সরকারি প্রকল্প শুভারম্ভের মঞ্চকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আদতে নির্বাচনী প্রচার মঞ্চে পরিণত করেছেন। ওই প্রকল্পের মাধ্যমে গরিব কৃষি জমির মালিকদের মন জয় করতে মরিয়া মোদি বলেছেন, ‘যেসব রাজ্য এখনও এই প্রকল্পে অংশ নেয়নি, তাদের বলছি। গরিব কৃষকদের এই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত করলে ওই কৃষকরাই তাদের রাজনীতি তছনছ করে দেবে।’
আজ প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মাননিধি প্রকল্পে এক কোটি এক লক্ষের কিছু বেশি গরিব কৃষিজমি মালিককে প্রকল্পের প্রথম কিস্তি হিসেবে এক লপ্তে ২,০২১ কোটি টাকা সরাসরি তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়েছে। ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে যেসব রাজ্য তালিকা পাঠিয়েছে, তাদেরই আজ টাকা দেওয়া হয়েছে। গোটা দেশের কমবেশি ১২ কোটি গরিব কৃষিজমি মালিকে চার মাস অন্তর দু’ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। তার জন্য কেন্দ্র ৭৫ হাজার কোটি টাকা খরচ বেঁধে রেখেছে। মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০১৯ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যাদের নামে রাজ্যের ল্যান্ড রেকর্ডে দু’ হেক্টর পর্যন্ত কৃষিজমি রয়েছে, প্রাথমিকভাবে তাঁরাই এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।
তবে দু’ হেক্টর কৃষিজমি থাকলেই যে এই প্রকল্পের সুবিধা মিলবে, তা নয়। পরিবারের কেউ আয়কর জমা করলে এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যাবে না। গ্রুপ ডি কর্মী ছাড়া কোনও সরকারি (রাজ্য এবং কেন্দ্র) কর্মচারীর এই সুবিধা মিলবে না। যাঁরা মাসে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি অবসরভাতা পান, তাঁরাও বাদ। বর্তমান এবং প্রাক্তন বিধায়ক, এমপি, মন্ত্রী, মেয়র, জেলা পঞ্চায়েতের চেয়ারপার্সন সহ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্ট, আর্কিটেক্টের নামেও যদি দু হেক্টর কৃষি জমি থাকে, তারাও পিএম-কিষাণ প্রকল্পের কোনও সুবিধা পাবে না।
মোদির সাধের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। আর ‘পিএম-কিষাণ’ প্রকল্পে যুক্তই হয়নি রাজ্য। তাই সরাসরি নাম না করলেও ঘুরে-ফিরে এদিনের মঞ্চ থেকে বারবার পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গই তুলেছেন মোদি। বলেছেন, ‘বিরোধী হিসেবে রাজনৈতিক লড়াই করুন। কিন্তু কৃষক তো গোটা দেশের। তাদের নিয়ে রাজনীতি করবেন না। তাই বলছি, যাঁদের ঘুম ভাঙেনি, তারা দ্রুত কেন্দ্রের কাছে নামের তালিকা পাঠান।’ প্রকল্পের উদ্বোধন করতে গিয়ে মোদি আরও বলেন, ‘এই প্রকল্পে একটি পয়সাও রাজ্যের নয়। সবই কেন্দ্রের। রাজ্যর কাজ স্রেফ তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রকে পাঠানো। প্রাপকদের অধিকার বছরে ছ’ হাজার টাকা কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।’
যদিও ভোটের মুখে আজ এই প্রকল্পের সূচনা প্রসঙ্গে তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। বিষয়টিকে তিনি ‘ভোট পেতে ঘুষ’ বলেই ট্যুইটারে মন্তব্য করেছেন। নির্বাচন কমিশনকেও সতর্ক করেছেন। বলেছেন, ‘আজ ক্যাশ ফর ভোট দিবস। গণতন্ত্রে এর চেয়ে লজ্জার কিছু নেই। আরও লজ্জার যে নির্বাচন কমিশনও এই ঘুষ রুখতে পারছে না।’