শিক্ষার জন্য দূরে কোথাও যেতে পারেন। প্রেম-প্রণয়ে নতুন যোগাযোগ হবে। বিবাহের কথাবার্তাও পাকা হতে পারে। ... বিশদ
পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার পর বরাবরই দেশবাসীকে সেনাবাহিনী ও সরকারের উপর আস্থা-ভরসা রাখার আর্জি জানিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবার রাজস্থানের টঙ্কে অনুষ্ঠিত সভায় সেই ধারা বজায় রাখলেন তিনি। জনসভায় উপস্থিত জনগণের উদ্দেশে মোদি বলেন, শক্তি ও বিচারের দেবী মা ভবানীর আশীর্বাদে আস্থা রাখুন। জঙ্গিহানার জড়িতদের হিসেব চোকাতেই হবে। সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে তামাম বিশ্ব একজোট হয়েছে।
এদিন জয়পুরের টঙ্কে দলের ‘বিজয় সংকল্প’ জনসভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রথম থেকেই পুলওয়ামা হামলা নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। সেনাবাহিনী ও তাঁর সরকারের প্রতি আস্থা রাখার আর্জি জানিয়ে মোদি বলেন, ‘ভারতে যাঁরা বসবাস করে বিচ্ছিন্নতাবাদকে মদত দেয় তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও নেওয়া হবে। এটা বদলে যাওয়া ভারত। এই যন্ত্রণা কখনই সহ্য করা যাবে না। এই যন্ত্রণা ভোগ করে আমরা কখনই বসে থাকব না। আমরা জানি কী করে সন্ত্রাসবাদের মূল উপরে ফেলতে হয়। এটাই হল নয়া নীতি বিশিষ্ট ভারত।’
এরপরেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে ইমরান খান বসার পর তাঁর সঙ্গে হওয়া কথপোকথনের কথা উল্লেখ করেন মোদি। তাঁর কথায়, ‘‘জনগণ ওঁকে ক্রিকেটার হিসেবে জানে। আমি ইমরানকে বলেছিলাম, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে অনেক যুদ্ধ হয়েছে। পাকিস্তান কিছুই পায়নি, উল্টে সবকটিতেই জিতেছি আমরা। আমি আরও বলেছিলাম, চলুন আমরা এখন দারিদ্র আর নিরক্ষরতা দূর করার লড়াই করি। উনি তখন আমাকে বলেছিলেন, ‘মোদিজি আমি হলাম পাঠান পুত্র। আমি যেমন সত্য বলি, তেমনই সত্য করি।’ আজ ওঁর সত্য প্রতি অবিচল থাকার সময় এসেছে। আমি দেখতে চাই, উনি তাঁর সত্য কথনে অটুট রয়েছেন কি না।’
বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলো পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীও ওই হামলার মূল চক্রীকে নিকেশ করেছে। এ প্রসঙ্গে নিজেকে ‘প্রধান সেবক’ উল্লেখ করে মানবতার শত্রুদের উপযুক্ত শিক্ষা দিতে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলেও এদিন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘আমরা সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছি। সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে সাহসিকতা ও বদলার আওয়াজ উঠেছে। কিন্তু, আমাদের লড়াই হল মানবতার শত্রুদের বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসের সব থেকে বেশি শিকার কাশ্মীরিরাই। আমাদের লড়াই কাশ্মীরের জন্য, কাশ্মীর বা কাশ্মীরবাসীর বিরুদ্ধে নয়। ওঁদের পাশে রয়েছে গোটা দেশ।’
এরপরেই জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্তে কাশ্মীরি তরুণ সমাজ বিভ্রান্ত জানিয়ে তাঁদের অবদানের কথা মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাশ্মীরের প্রতিটি শিশু আমাদের সঙ্গে রয়েছে। সেই শিশুদের রক্ষা করার দায়িত্বও প্রত্যেক ভারতবাসীর। কাশ্মীরিরাই হলেন অমরনাথ পুণ্যার্থীদের রক্ষাকর্তা। এক বছর আগে যখন অমরনাথ পুণ্যার্থীদের উপর জঙ্গিহানা হয়েছিল, তখন কাশ্মীরি মুসলিমরাই রক্তদানের জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়েছিল এবং প্রাণ বাঁচিয়েছিল।’ এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রের পূর্বের সরকারকেও তোপ দেগেছেন মোদি। তিনি বলেছেন, এই সরকার কাশ্মীরিদের স্বপ্ন পূরণ করবেই। পুলওয়ামা জঙ্গি হামলা পরবর্তী দেশজুড়ে কাশ্মীরিদের উপর হিংসা ও আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে কাশ্মীরিদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী এদিনের মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
কাশ্মীরিদের উপর হামলা পরবর্তী মোদির এহেন মন্তব্যে তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। প্রধানমন্ত্রী নীরবতা ভেঙেছেন বলে ট্যুইটে ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা লিখেছেন, ‘আজ আপনি আমাদের মনে কথা বলেছেন। পুলওয়ামাকে কেন্দ্র করে কাশ্মীরিদের উপর দেশবাসীর বিষোদ্গারের পর থেকে এক সপ্তাহের বেশি কেটে গিয়েছে। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী সাহেব মুখ খুলে বললেন কাশ্মীরিদের উপর এই আক্রমণ বন্ধ করতে হবে।’ শুক্রবারই কাশ্মীরিদের উপর হামলা ও জনরোষ আটকাতে কেন্দ্র ও ১০টি রাজ্যকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেইমতো সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ডিজিপি ও মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।