রাজ্য

মুখ নাকি মুখোশ? ‘নিউট্রাল’ হলে মারধর, ‘ছাপুদের’ ট্রাঙ্ক ছুড়ে ফেলা হতো হস্টেল থেকে! 

বিশ্বজিৎ দাস,কলকাতা: সালটা ২০০২। আমি তখন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি’র বিভাগীয় প্রধান। তৃণমূলের এক ডাক্তার নেতা কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তারকে সঙ্গে নিয়ে ডেপুটেশন দিতে গিয়েছেন হাসপাতালে। তাঁরা পূর্ব পরিচিত। দু’টো কথা বলেছি মাত্র। সেদিনই চলে এল বদলির চিঠি। শুধু বদলিই নয়, একবোরে ‘ডিম টু বি রিলিজড’। মানে আগের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে বা রিলিজ করে দেওয়া হল। মানে জয়েন করতেই হবে। একেবারে বাঁকুড়ায়। সদ্য মাকে হারিয়েছি। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। কাজকর্মও বাকি। কাছা পরে আছি। ওই অবস্থায় প্রিন্সিপালের কাছে গেলাম। বললাম, মায়ের কাজটা সেরে সেরে নিই, স্যার। ওইটুকু সময় দিন। তারপর বাঁকুড়ায় যাচ্ছি। উনি বললেন, আলিমুদ্দিন থেকে অর্ডার হয়েছে। আমি কোন ছার! তুমি নাকি বিরাট তৃণমূল হয়েছ? রাইটার্সে গিয়ে দেখ, যদি কিছু করা যায়। রাইটার্স বিল্ডিংয়ে স্বাস্থ্য অধিকর্তার (শিক্ষা) কাছে গেলাম। এক কথা। কাছা পরেই জয়েন করতে ছুটতে বাধ্য হলাম। সেখানে গিয়ে শুধু হল আর এক অত্যাচার! আমি নাকি বিরাট তৃণমূল! ভাবখানা হল, পচে মর। অন্য কেউ নয়, এই কথাগুলি হল রাজ্যের অন্যতম সেরা ইএনটি বিশেষজ্ঞ পিজি’র বিভাগীয় অধ্যাপক ডাঃ অরুণাভ সেনগুপ্তের। শুক্রবার অরুণাভবাবু বললেন, আমার চোখে জল। মায়ের কাজটুকু পর্যন্ত করা হয়নি। ওই অবস্থায় কাছা পড়ে ছুটেছিলাম বাঁকুড়ায় ‘জয়েন’ করতে। কারণ, আমি নাকি বিরাট তৃণমূল হয়েছি। জীবনে ভুলব ওই অপমান। ওই মানসিক অত্যাচার। পানিশমেন্ট ট্রান্সফারের র‌্যাকেট চালানোর কাণ্ডারীরা এখন ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে লেকচার দিচ্ছেন! 
বামপন্থী ‘সমাজসংস্কারক’ বাহিনীর মুখোশ খসে পড়ুক। এই কথা এখন বলা শুরু করেছেন রাজ্যের প্রথম সারি চিকিৎসকরা। ইএনটিতে অরুণাভবাবুর মতোই মেডিসিনের বিখ্যাত চিকিৎসক ডাঃ অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, ১৯৯০ সালে আমি ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস পড়া শুরু করেছি। আমরা ‘নিউট্রাল’ ইউনিয়ন করি। আমার এক ‘নিউট্রাল’ বন্ধু (এখন সল্টলেকে প্র্যাকটিস করেন) ভালো কথা বলেন। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে আমাদের পক্ষে জ্বালাময়ী ভাষণ দিলেন। সেবার এসএফআই ছাত্র সংসদ নির্বাচনে হেরে গেল। তারপর একদিন ওর ডাক পড়ল। ওকে ক্যান্টিনে পাঠিয়ে কী মারটাই না মারল! আমার আর এক ‘নিউট্রাল’ বন্ধুকে (এখন বহরমপুরের প্রতিষ্ঠিত প্যাথোলজিস্ট) বেদম মেরেছিল এসএফআই। ওদের তখন দু’টো মুখ। একদল মারধর করত। আর একদল মিষ্টি করে কথা বলত। আসলে উদ্দেশ্য ছিল একটাই—যেকোনও প্রকারে থ্রেটের বারতাবরণ তৈরি করে রাখা। সেসময়ে মিষ্টি কথা বলা, পরে বিদেশে উচ্চশিক্ষিত এক এসএফআই নেতাকে এখন দেখছি, আন্দোলনে জোরদার শামিল হতে! ওঁদের স্বরূপ আমরা হাড়ে হাড়ে জানি। শেক্সপিয়র সরণি এলাকার একটি নামী নার্সিংহোমের বর্তমান মালিককেও (তখনকার ডাক্তারি পড়ুয়া) ঘিরে ধরে পিটিয়েছিল ওরা। ইলেকশনের সময় আমার এক ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক বন্ধুর (এখন প্রতিথযশ প্লাস্টিক সার্জেন) চোখ লক্ষ্য করে কাচের গ্লাস ছুড়ে মেরেছিল। ওঁরা বলেন, কলেজে কলেজে গণতান্ত্রিক পরিবেশের কথা? ‘গণতন্ত্র’কে মাটিতে ফেলে রোড রোলার চালিয়ে দিয়েছিলেন যাঁরা, তাঁরাই বলছেন গণতন্ত্রের কথা!
বিশিষ্ট ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ মৌলিমাধব ঘটক বলেন, ১৯৮৩-৮৫ সালের ছাত্র আন্দোলনের সময় আমরা ছাপু করতাম বলে বামেদের বাহিনী হস্টেল থেকে ট্রাঙ্ক ছুড়ে ছুড়ে নীচে ফেলে দিত।
এফএফআইয়ের রাজ্য সহ সভাপতি শুভজিৎ সরকার বলেন, কোনও আমলেই থ্রেট কালচারকে আমরা সমর্থন করি না। আর এই আমলে এর সঙ্গে টাকা পয়সার লেনদেন যুক্ত হয়েছে। সিপিএম-পন্থী ডাক্তার সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের রাজ্য সম্পাদক ডাঃ উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগেও বলেছি, কারও অভিযোগ থাকলে রাজ্য স্বাস্থ্যভবনের জানান। আমরা তো বারণ করিনি! 
নজর করার বিষয় হল, প্রতিবাদী এই চিকিৎসকদের সবথেকে বেশি অনাস্থা এই স্বাস্থ্যভবনের বিরুদ্ধেই।  
কলকাতা
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

আইনজীবীদের কর্মের প্রসার ও ব্যস্ততা বৃদ্ধি। ব্যবসাদি পরিচালনার জন্য নতুন পরিকল্পনা রচনা।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৪ টাকা৮৪.৯৮ টাকা
পাউন্ড১০৭.৬৪ টাকা১১১.৪৩ টাকা
ইউরো৮৯.৪৭ টাকা৯২.৮৭ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা