বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
শরীর ও স্বাস্থ্য

টেনিস এলবো হলে কী করবেন? 

হঠাৎ বিপদে বাড়ির পাশে ডাক্তার পান ক’জন! কিছু ক্ষেত্রে প্রতিটা সেকেন্ড হতে পারে জীবনদায়ী, মূল্যবান। ডাক্তারখানা বা হাসপাতালে যাওয়ার আগে চটজলদি কী করবেন? পরামর্শে ডাঃ শুভেন্দু বাগ।

ইদানীং রোগের চিকিৎসার থেকে রোগীদের ভুল ধারণার শিকড় উপড়ে ফেলতে বেশি কষ্ট করতে হয়। ইন্টারনেটের যুগে সবাই নেট আউড়ে রোগ নিয়ে কমবেশি জেনেই আসেন। কিন্তু সে জ্ঞানের বেশিরভাগই স্বল্পতার দোষে ও ইন্টারনেটের জালে জড়িয়ে এক্কেবারে ঘেঁটে’ ঘ’। 
গেল সপ্তাহে সুপ্তি এসেছিল ডান হাতের কনুইয়ের ব্যথা নিয়ে। সদ্য বিবাহিতা। নতুন সংসারে নিজের উপযোগিতা প্রমাণ করার লক্ষ্যে দিনভর ঘর গুছিয়েছে। দু’দিন ধরে সারা বাড়ির ঝুল ঝেড়েছে। কাপড় কেচেছে। কিচ্ছুটি হয়নি। কিন্তু যেই না গতকাল আবার কাপড় কেচে নিংড়াতে গেছে, ডান হাতের কনুইয়ে কনকনিয়ে যন্ত্রণা শুরু হয়েছে। পাশের বাড়ির এক গুগলসেবির পরামর্শে গরম সেঁক নিয়েছে। ব্যথার ওষুধও খেয়েছে। আমরা তো এযুগের আধুনিক মানুষ। তাই তার সঙ্গে গ্যাসের ওষুধ খেতেও ভোলেনি। কিন্তু আজ ভোর থেকে একেবারে কঠিন অবস্থা। কব্জি প্রসারণে এক্কেবারে ঝিনঝিনিয়ে উঠছে কনুইয়ের জায়গাটায়। পাড়ার ডাক্তারের পরামর্শে কনুইয়ের এক্স-রেও করিয়ে এনেছে। কিন্তু এক্স-রে দেখে তিনি বিশেষ কিছু বুঝতে পারছেন না বলে সুপ্তিকে নিয়ে ওর স্বামী হাজির আমার কাছে।
সদ্য দায়িত্ব পাওয়া স্বামীর থেকে সবটা শুনে নিয়ে সুপ্তির ডান হাতের কনুইটা টেনে অস্থিসন্ধির এক বিশেষ জায়গায় চাপ দিতেই যন্ত্রণায় কঁকিয়ে উঠলেন তিনি। কব্জি জয়েন্টের এক্সটেনশন করানোর চেষ্টা করাতেও একই অবস্থা।
‘এমনি সময় প্রায় কিছুই ব্যথা ছিল না ডাক্তারবাবু। শুধুমাত্র কাপড় নিংড়ানো আর ভারী বালতি তোলার সময় ছাড়া বাকি সময় ঠিকই ছিল।  কাল রাত থেকে বেড়েছে।’
বুঝলাম, সুপ্তি নিজেই এ ব্যথার দায়ে অভিযুক্ত। গৃহকর্মে নিপুণ, তা না দেখাতে পেরে লজ্জিতাও বটে।
বললাম, প্রথমত রেস্ট নিতে হবে। এর বিকল্প আপাতত কিচ্ছু নেই। বরফের সেক নিতে হবে। গরম সেক এই মুহূর্তে ব্যথার পরিসর বাড়িয়ে দেবে। পাশের অর্থোসার্জিক্যাল দোকানে গিয়ে ‘টেনিস এলবো ব্রেস’ নিয়ে এসো। লাগিয়ে রাখলে অনেকটাই কমবে। কিছু ওষুধ লিখে দিচ্ছি। যদিও ওষুধে পুরোটা কমবে না। রেস্ট নেওয়াটাই এক্ষেত্রে মূল চিকিৎসা। 
আমার কথায় খুব সন্তুষ্ট না হয়ে ওপাশের দোকান থেকে ব্রেসটা নিয়ে এল সুপ্তির বর। কনুই জয়েন্টের দু’আঙুল নীচে ব্রেসের চ্যাপ্টা অংশটা নির্দিষ্ট স্থানে রেখে বেঁধে দিলাম।  স্নানের সময় আর ঘুমোনোর সময় ছাড়া বাকি সময় এটি বেঁধে রাখতে হবে। 
এতেও যদি না কমে, তাহলে হাড়ের ভেতর ইঞ্জেকশন ( ইন্ট্রা-আর্টিকুলার স্টেরয়েড) দেওয়া ছাড়া গতি নেই।
এই শেষ লাইনটা বলে রাখলাম, যাতে টেনিস এলবো ব্রেসটা নিয়ম করে বেঁধে রাখা হয়।
সুপ্তি চলে যাওয়ার পরই চেপে ধরল চেম্বারের অ্যাসিস্ট্যান্ট ছেলেটি। বছর দু’য়েক আগে এই ব্যথায় মায়ের কনুইয়ে চারটি ইঞ্জেকশন দিতে হয়েছিল। ব্যাপারটা যদি একটু খুলে বলেন।
টেনিস এলবো। মেডিক্যাল পরিভাষায় ‘ল্যাটারাল এপিকন্ডাইলাইটিস’। মূলত এক্সটেনসর কারপাই রেডিয়ালিসব্রেভিস পেশির অতি ব্যবহার হেতু টেন্ডিনোপ্যাথি। সহজ কথায় ‘টেনিস এলবো’। এর মানেই যে শুধুমাত্র টেনিস প্লেয়ারদেরই এই ব্যথা হবে, তা নয়। খেলোয়াড় জীবনের শেষপর্বে শচীনও এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। প্রথমে রেস্ট নিয়ে খানিক কমলেও অবশেষে তাঁর খেলার অঙ্গসজ্জার এক প্রধান বর্ম ছিল কনুইয়ের নীচে বাঁধা এই টেনিস এলবো ব্রেস। নিয়মিত ফিজিওথেরাপি, আলট্রাসাউন্ড রে নিলেও কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটে। ইন্ট্রা আর্টিকুলার কর্টিকোস্টেরয়েড ইঞ্জেকশনও একটা উপায় বটে। এরকম অনেকরকম ভাবে এর ট্রিটমেন্ট করা গেলেও কোনওটিই সম্পূর্ণভাবে একে সারাতে পারে না।
বিশ্রামই মূলমন্ত্র। হপ্তা তিনেক বাদে সুপ্তি এল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ দিতে। বিশ্রাম নিতে বলায় ওরা পুরী বেড়াতে গেছিল। প্রভু জগন্নাথের কৃপায় ব্যথা কমেছে। আর আমার বিশ্রাম নিতে বলার পরামর্শের দৌলতে এই ফাঁকে একটু বেড়িয়ে আসতে পেরেছে সে। সে কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এ প্রসাদ প্রাপ্তি। বিস্ময়ে অজান্তেই হাঁ হয়ে যাওয়া মুখে প্রসাদখানা চালান করে দিলাম নিস্তব্ধে। জয় জগন্নাথ।
25d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পদার্থ ও রসায়নিক বিদ্যার অনুশীলনে বিশেষ উন্নতি।প্রায় সম্পূর্ণ কাজে বাধা আসতে পারে। বিকেল থেকে মানসিক...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৫.৬৮ টাকা৮৭.৪২ টাকা
পাউন্ড১০৫.৮৯ টাকা১০৯.৬২ টাকা
ইউরো৮৮.৬৬ টাকা৯২.০৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা