বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
শরীর ও স্বাস্থ্য

 শীতে সুস্থ থাকতে হোমিওপ্যাথি

পরামর্শে বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ডাঃ বিপ্লব কুমার কুণ্ডু
 
শীত এলে স্বাভাবিকভাবেই সর্দি-কাশির হানা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যায়। শরীরের অ্যালার্জেনগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। আবহাওয়ার বদলের ফলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে এই সমস্যা বাড়ে। এই সময় পক্স, হাম, রাইনাইটিস, টনসিলাইটিসের প্রাদুর্ভাবও বাড়ে। অনেক শিশুর অ্যাজমার সমস্যা বাড়ে। তাছাড়া এই সময় বাইরের খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। পিকনিক, নানারকম পার্টি, নেমন্তন্নবাড়ি লেগেই থাকে। ফলে পেটের সমস্যা বাড়ে। বয়স্করাও এর প্রভাবে আমাশয়, ডায়ারিয়ার শিকার হন। নিউমোনিয়াও এই আবহাওয়ার অন্যতম দোসর। বয়স্করা অনেকে মারাও যেন এই নিউমোনিয়ার কারণে। হোমিওপ্যাথি এমন এক বিজ্ঞান যা রোগের নয়, রোগীর চিকিৎসা করে। বিভিন্ন রোগীর রোগের প্রকাশ ও স্বভাব, জিন ও বংশগত নানা অভ্যেস এক একরকম। তাই চিকিৎসাও সকলের জন্য ভিন্ন। তবুও এমন কিছু বেসিক ওষুধ হোমিওপ্যাথিতে আছে, যা শীতে কোনও অসুস্থতায় সকলের দেহেই ভালো কাজ করে। রইল তেমন কিছু ওষুধের হদিশ।
সাধারণ সর্দি-কাশি ও আনুষঙ্গিক সমস্যা: ঠান্ডা আবহাওয়ায় আট থেকে আশি সকলের জন্য ঘরেই কিছু ওষুধ মজুত করে রাখুন।
অ্যাকোনাইট ৩০: যে কোনও সময় ঠান্ডা লাগলে প্রাথমিক ওষুধ হিসেবে অ্যাকোনাইট দেওয়া হয়। গায়ে জ্বর থাকলে, মাথা ব্যথা ও শরীরে অস্বস্তি থাকলে এই ওষুধ ভালো কাজ করে। অনেক সময় শীতে গরম কাপড়ের আধিক্যে গায়ে ঘাম বসিয়ে দিতে পারে। ঘাম বসেও অনেক সময় ঠান্ডা লাগে। সেইসব অসুখে অ্যাকোনাইট ভালো কাজ করে।
হিপার সালফ: অ্যাকোনাইট দেওয়ার পর দেখা গেল, ঠান্ডা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এল। নাক থেকে জল পড়া, মাথা ব্যথা এগুলো কমল। তবে বুকে ঠান্ডা বসে এবার ঘড়ঘড় শব্দ শুরু হল। ঘন ঘন কাশি কমলেও এবার শুরু হল কিছু সময় অন্তর দমকে দমকে কাশি। শ্লেষ্মা বুকে বসে গেলে এবার কাজে দেবে হিপার সালফ (৩০ বা ২০০ মাত্রার)।
ডালকামারা: সর্দি-কাশির সঙ্গে জ্বর হলে গেলে এই ওষুধের কথা ভাবা হয়। বুকে শ্লেষ্মা বসে আছে বা খুব সর্দি-কাশি, তার সঙ্গে ঘন ঘন তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে, এমন হলে ডালকামারা ৩০ বা কারও কারও ক্ষেত্রে ডালকামারা ২০০ ভালো কাজ করে।
স্পঞ্জিয়া: অনেক সময় শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডা লাগা থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। টানের সমস্যা শুরু হলে তখন হাতের কাছে রাখতে হবে স্পঞ্জিয়া। শ্বসনযন্ত্রের যে কোনওরকম সমস্যায় স্পঞ্জিয়া ভালো কাজ করে। তাই অ্যাজমার সমস্যা থাকলে বাড়িতে অবশ্যই এই ওষুধ রাখা উচিত।
ব্রায়োনিয়া: ব্রায়োনিয়া সর্দি কাশির রোগীদের জন্য খুব উপযোগী ওষুধ। সর্দি আছে, কফ অল্পস্বল্প উঠছেও এমন রোগীকে এই ওষুধ দিতে হবে। তবে রাস টাক্সও ব্রায়োনিয়ার বদলে ভালো কাজ করবে। কোন রোগীর ক্ষেত্রে রাস টাক্স ভালো কাজ করবে, কার বেলায় ব্রায়োনিয়া— সেটি নির্ধারিত হবে রোগীর ইতিহাসের উপর।
ম্যাগ ফস: শুকনো কাশি, কাশতে কাশতে বুকে ব্যথা হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই কফ উঠছে না এমন লক্ষণে রোগীকে ম্যাগ ফস দেওয়া যেতে পারে। 
শীতের গলা ব্যথা: শীতে গলা ব্যথা খুব সাধারণ উপসর্গ। এই সময় আবহাওয়ার কারণে, দীর্ঘ সময় ধরে এসি ঘরে কাজ করার কারণে ফ্যারিঞ্জাইটিস, টনসিলাইটিসের মতো অসুখ হয়। 
রাস টক্স: ঠান্ডা লেগে গলা বসে গেলে দ্রুত কাজে আসে রাস টক্স ৩০। পরে ডোজ বাড়িয়ে ২০০-ও দেওয়া হয়। তবে তা ঠিক করবেন চিকিৎসক।
হিপার সালফ: গলা খুশখুশ করছে, কথা বলতে গেলে হালকা কাশি হচ্ছে এমন সমস্যা তৈরি হলে হিপার সালফ ব্যবহার করা হয়। 
বেলেডোনা: শীতের গলা বসা, গলা ব্যথা ও টনসিল ফুলে যাওয়ায় বেলেডোনা ৩০ খুব ভালো কাজে আসে। টনসিলাইটিসের ওষুধ হিসেবে এর ব্যবহার সর্বজনবিদিত।
ইউফ্রেশিয়া: ঠান্ডা লাগলে শুধু সর্দি-কাশিই নয়, চোখেও জ্বালাভাব হতে পারে। ঘন ঘন চোখ থেকে জল পড়ে ও চোখ লাল হয়ে ফুলে যায়। তখনরোগীকে দেওয়া হয় ইউফ্রেশিয়া। 
শিশুর প্রস্রাবে সংক্রমণ: শীতে এই ধরনের সমস্যাও বাড়ে। বেড়াতে যাওয়া বা বাইরে বেরনো বেশি হয়, ফলে বাইরের টয়লেট ব্যবহার করতে হয়।  তা থেকে ইউরিন ইনফেকশন হতে পারে। এই অসুখে টয়লেট করার সময় জ্বালার অনুভূতি হয়। এই কারণেই শিশু প্রস্রাব করার সময় জ্বালার কথা বললে বা চিৎকার করলে বুঝতে হবে কোনও সংক্রমণ ঘটেছে। অনেক সময় এই জ্বালার সঙ্গে জ্বরের লক্ষণও উপস্থিত থাকে। হোমিওপ্যাথিতে এই অসুখে বারবারিস ভালগারিস, কেন্থারিস, ইকুইসেটাম ইত্যাদি ওষুধ দেওয়া হয়। কেন্থারিস, পাইরোজেন, বারবারিস ভালগারিস, সারসাপেরিলা, ইকুইসেটাম ইত্যাদিও ভালো কাজ করে।
ডায়ারিয়া: শীতে শিশু থেকে বয়স্ক সকলেই কমবেশি পেটের সমস্যায় ভুগতে পারেন। সাধারণ ডায়ারিয়ায় মলত্যাগের সময় শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ জল ও সোডিয়াম বেরিয়ে যায়। ফলে রোগী খুব তাড়াতাড়ি দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই ডায়ারিয়া হলে নুন ও চিনি মিশিয়ে স্যালাইন ওয়াটার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে রোগী শক্তি ফিরে পান। 
ডায়ারিয়া হলে কিছু ওষুধের উপর নির্ভর করতে হয়। যেমন আর্সেনিক অ্যালবাম, সিঙ্কোনা অফিশিয়ানালিস, পোডোফাইলাম, সালফার, ক্যামোমিলা, আরজেন্টাম নাইট্রিকাম ইত্যাদি ওষুধে ডায়ারিয়া আয়ত্তে আসে। তবে কোন রোগীর কখন কী ওষুধ প্রয়োজন ও তার ডোজ কী হবে তা ঠিক করবেন চিকিৎসক।
আমাশয়: এই অসুখের সঙ্গে ডায়ারিয়ার তফাত করতে পারেন না অনেকেই। ডায়ারিয়ার সঙ্গে এর মূল ফারাক হল, এতে  মলের সঙ্গে পিচ্ছিল মিউকাস বের হয়। মাঝেমধ্যে রক্তও বেরতে পারে। আমাশয়ে মার্ক সল, ক্যান্থারিস, অ্যারিজেরন, কলচিকাম ইত্যাদি ওষুধ ভালো কাজ করে।
মনে রাখবেন
হোমিওপ্যাথি মূলত লক্ষণনির্ভর এই চিকিৎসা পদ্ধতি। তাই উপসর্গ ও রোগী ভেদে ওষুধ বদলাবে। ওষুধের মাত্রাও এক এক জনের জন্য এক এক রকম।  তাই অসুখ করলে নিজে নিজে ওষুধ খাওয়ার ভুল করবেন না। বরং চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিন।
লিখেছেন মনীষা মুখোপাধ্যায়
25d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পদার্থ ও রসায়নিক বিদ্যার অনুশীলনে বিশেষ উন্নতি।প্রায় সম্পূর্ণ কাজে বাধা আসতে পারে। বিকেল থেকে মানসিক...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৫.৬৮ টাকা৮৭.৪২ টাকা
পাউন্ড১০৫.৮৯ টাকা১০৯.৬২ টাকা
ইউরো৮৮.৬৬ টাকা৯২.০৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা