ভারতীয় আয়ুর্বেদে এই ফলের গুরুত্ব অপরিসীম। রোজ একটি পেয়ারা খেলে কী কী উপকার পেতে পারেন জানেন? জানালেন কেন্দুয়া সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কমিউনিটি হেলথ অফিসার (আয়ূষ) ডাঃ বিশ্বজিৎ ঘোষ।
মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্যরক্ষা: পেয়ারার ভিটামিন সি প্রধানত মুখ, দাঁত, মাড়ি সুস্থ রাখার পাশাপাশি চোখের পক্ষেও বেশ উপকারী। দাঁতের যন্ত্রণা প্রশমনে পেয়ারা পাতার ক্বাথ আয়ুর্বেদের বহুল প্রচলিত যোগ।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারক: পেয়ারা অ্যান্টিঅক্সিডন্ট গুণযুক্ত। ভিটামিন সি এবং অন্যান্য উপকারী উপাদান থাকার দরুন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে পেয়ারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডায়াবেটিসের পথ্য: পেয়ারা যথেষ্ট ফাইবার সমৃদ্ধ থাকায় এবং লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের জন্য ডায়াবেটিসে কার্যকর এবং সুগারের রোগীদের সুপথ্য।
চোখের পক্ষে হিতকর: ভিটামিন এ চোখ ও ত্বকের সুস্থতার ক্ষেত্রে এক অতিপ্রয়োজনীয় ভিটামিন। পেয়ারায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়।
পরিপাক ও কোষ্ঠবদ্ধতার সমস্যায় উপকারী: পেয়ারা ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এবং বীজ মৃদু বিরেচন গুণসম্পন্ন থাকায় হজম এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুক্তভোগী রোগীদের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিকভাবে নিয়মিত কোষ্ঠ পরিষ্কারে সাহায্য করে।
হার্টের রোগীর পথ্য: রক্তে সোডিয়াম পটাশিয়ামের সমতা বজায় রাখা এবং গুড কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখতে কার্যকর। তাই উচ্চরক্তচাপে এবং হৃদযন্ত্রের অসুখের রোগীদের জন্য এটি বেশ উপকারী ফল।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পলিফেনল বর্তমান, যা শরীরের বিবিধ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে সুষম ফল: পেয়ারায় পর্যাপ্ত ফলিক অ্যাসিড থাকায় প্রসূতিদের পক্ষে বেশ উপকারী।
ডায়ারিয়া প্রতিরোধে পেয়ারা পাতা: পেয়ারা পাতার রস অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণযুক্ত। ডায়ারিয়ার সমস্যায় পেটের অস্বস্তি অনুভব, ঘন ঘন মলবেগ রোধ করে এবং মলের কঠিনভাব আনে।
সর্দি কাশির সমস্যায় পেয়ারা: সম্প্রতি বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে পেয়ারার অ্যাসকরবিক অ্যাসিড ও আয়রন ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়ক এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধক। মূলত কচি পেয়ারা পাতার স্বরস সর্দি কাশিতে বেশ ফলপ্রসূ।
আয়ুর্বেদ দ্রব্যগুণ মতে পেয়ারা মধুর,অম্ল ও কষায় রস প্রধান গুরুগুণ যুক্ত ফল। পুষ্টিগুণে ভরপুর পেয়ারা মূলত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল হলেও এতে ফোলেট, বিটা ক্যারোটিন, থায়ামিন, ভিটামিন বি সিক্স ইত্যাদির পাশাপাশি ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, জিঙ্ক ইত্যাদি বিভিন্ন খনিজ পদার্থ বর্তমান।