শরীর ও স্বাস্থ্য

সুগারের রোগীরা কী খাবেন, কী খাবেন না? 

পরামর্শে পিজি হাসপাতালের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

মানবদেহের প্যাংক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষে ইনসুলিন হরমোন তৈরি হয়। ইনসুলিনের কাজ রক্তে থাকা গ্লুকোজ বা সুগারকে কোষে কোষে পৌঁছে দেওয়া। ফলে শারীরবৃত্তীয় নানা কাজ সারতে কোষ শক্তি অর্জন করতে পারে। কোনও ব্যক্তির শরীরে যদি ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যায়, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ে। তখন সেই ব্যক্তি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। টাইপ ১ ও টাইপ ২ দু’ধরনের ডায়াবেটিস হয়। সাধারণত জুভেনাইল ডায়াবেটিস বা টাইপ ১ ডায়াবেটিস শিশুদের হয়। ভারতে এই ডায়াবেটিসের প্রভাব কম। তবে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে বেশি ভোগে দুনিয়ার এমন দেশগুলির মধ্যে ভারত প্রথমদিকেই রয়েছে। ভারতে প্রায় ৯০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগীই টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। 
এই অসুখে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ইনসুলিন হরমোন তৈরি হয় না, আবার কারও ক্ষেত্রে তা তৈরি হলেও সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। একই বলে ইনসুলিন রেজিস্টেন্স। 

সুগার কতটা রাখা উচিত? 
প্রথমেই বলে রাখা ভালো, পরীক্ষা করে দেখা গেল, আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নন। আপাতত স্বস্তি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনার কোনওদিন ডায়াবেটিস হবে না। তাই প্রতি ছ’মাস অন্তর ডায়াবেটিসের পরীক্ষা একজন সুস্থ ব্যক্তিকেও করতে হবে। সুগার ফাস্টিং ১০০ এমজি/ডিএল-এর মধ্যে এবং সুগার পিপি ১৪০-এমজি/ডিএল-এর নীচে থাকলে বুঝতে হবে, সুগার নেই। তবে সুগার ফাস্টিং ১০০ থেকে ১২৪ এমজি/ডিএল এবং সুগার পিপি ১৪০-১৯৯ এমজি/ডিএল-এর মধ্যে থাকলে ধরে নেওয়া হয় রোগী প্রি-ডায়াবেটিক। অর্থাৎ এখন থেকে সাবধান না হলে অদূর ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস হতে পারে। 
পরীক্ষায় যদি দেখা যায়, ফাস্টিং ১২৫ এমজি/ডিএল এবং পিপি ১৪০-এমজি/ডিএল-এর বেশি রয়েছে, তাহলে সেই রোগীর ডায়াবেটিস আছে বলে সন্দেহ করা হয়। তবে এই একদিনের পরীক্ষায় ডায়াবেটিস আছে কি না তা নির্ণয় করা ঠিক নয়। কারণ সাময়িক কোনও ঘটনার প্রভাবেও ওইদিন সুগারের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই ডায়াবেটিস সংক্রান্ত নিশ্চয়তার জন্য এখন বেশি ভরসা করা হয় এইচবিএ১সি পরীক্ষার উপর। এতে তিন মাস ধরে শরীরে সুগারের মাত্রা কত, তা বোঝা যায়। এই টেস্টের স্কোর ৫.৭ বা তার নীচে হলে তা স্বাভাবিক। ৫.৭ থেকে ৬.৫ হলে সেই রোগীকে ধরা হবে প্রিডায়াবেটিক। আর ৬.৫-এর উপরে হলে ডায়াবেটিস আছে বলে ধরা হয়। 
তবে শরীরে সুগারের মাত্রা সামান্য বেশি থাকলে প্রথমেই ওষুধ দেওয়া হয় না। ডায়েট, এক্সারসাইজ ও লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে সুগার কমানোর কথা ভাবা হয়ে থাকে। মাস তিনেক সময় পরেও নিয়ন্ত্রণে না এলে তখন ওষুধ দেওয়ার কথা ভাবা হয়। 

ঝুঁকি কাদের?
প্রথমত বংশে (রক্তের সম্পর্কের কেউ) ডায়াবেটিস থাকলে সেই ব্যক্তিকে সচেতন থাকতে হবে। জিনগত কারণই ডায়াবেটিসের মূল কারণ। এর সঙ্গে যোগ হয় নিয়মিত শরীরচর্চা না করা ও খাবারের অবৈজ্ঞানিক নিয়ম। ধূমপায়ী হলে ও ব্যক্তির ওজন বেশি হলেও ঝুঁকি বেশি থাকে। ইনসুলিন রেজিস্টেন্সের অন্যতম কারণ ভুঁড়ি। এছাড়া দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ থেকে এপিনেফ্রিন ও কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। এগুলিও রক্তে শর্করা বৃদ্ধি করে। 

ডায়াবেটিসে খাবারের ভূমিকা কতটা?
ডায়াবেটিসের মূল কারণ জিনগত। তাই শুধু খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে এই অসুখ সারিয়ে তোলা যায় না। শুধু ডায়েট নির্ভর হলে অসুখ সাময়িকভাবে কমলেও অচিরেই ফের বেড়ে যায়। তাই কেবল ডায়েটের কেরামতি এখানে নেই। তবে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ডায়াবেটিসকে সারিয়ে তোলার ক্ষেত্রে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা খুব জরুরি। এখানেই চলে আসে ডায়েটের প্রয়োজনীয়তা। এছাড়া প্রি-ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও ডায়েট অত্যন্ত জরুরি। তবে শুধু খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে এই অসুখের সঙ্গে লড়া যাবে না। ওজন কমানো, শরীরচর্চা, স্ট্রেস ফ্রি জীবনযাত্রা সব মিলিয়েই ডায়াবেটিসের সঙ্গে লড়তে হবে। 
একটা সময় ১২০০, ১৫০০ বা ১৮০০ ক্যালোরির ডায়াবেটিস ডায়েটের কথাই বেশি শোনা যেত। কিন্তু এখন বিষয়টিকে আরও বৈজ্ঞানিকভাবে দেখা হয়। যেমন, ধরা যাক, ডায়াবেটিসের সঙ্গে যদি কারও কিডনির সমস্যা বা ইউরিক অ্যাসিড বা প্রেশার থাকে, তাহলে তাঁদের ডায়েটও ভিন্ন হবে। একজন কিডনি রোগীর জল, নুন, রসাল ফল, প্রোটিন সবকিছুর মাপ আলাদা হবে। আবার যাঁর ডায়াবেটিসের সঙ্গে শুধুই উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাঁরও ডায়েট সকলের চেয়ে আলাদা হবে। ওবেসিটি থাকলে আবার পুরো ক্যালোরির হিসেব আলাদা হবে। তাই ‘ডায়াবেটিক ডায়েট’ এই কথাটি এখন আর বলা হয় না। এখন এর আধুনিক নাম ‘মেডিক্যাল নিউট্রেশন থেরাপি’ বা এমএনটি। রোগীর সব অসুখ খতিয়ে দেখে সেই অনুসারে ডায়েট চার্ট তৈরি করা হয়। আসলে ডায়াবেটিস বা প্রি ডায়াবেটিসের জন্য আলাদা করে কোনও ডায়েট হয় না। ডায়েট সবটুকুই দেওয়া হয় ওই ব্যক্তির ওজন কমানোর উদ্দেশ্যে।

কতটা ওজন কমাব, কেন কমাব?
ধরা যাক, একজন রোগীর ওজন ১০০ কেজি। এদিকে তাঁর উচ্চতা অনুযায়ী বিএমআই-এর হিসেবে হয়তো দেখা গেল তাঁর আদর্শ ওজন হওয়া উচিত ৭০। স্বাভাবিকভাবেই তিনি দু’মাসেই ওই কাঙ্ক্ষিত ওজনে পৌঁছতে পারবেন না, এটাই বাস্তব। তাই তাঁকে এই ওজন বেঁধে দেওয়ার কোনও মানে নেই। বরং তাঁকে প্রথম তিন-চার মাসে অন্তত ১০ শতাংশ ওজন কমানোর নির্দিষ্ট মাত্রা দেওয়া হবে। 
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কোনও ব্যক্তি যদি তাঁর ওজনের ১০ শতাংশও কমিয়ে ফেলতে পারেন, তাহলে তার শরীরের প্রভূত উন্নতি হয়। মেকানিক্যাল ও মেটাবলিক নানা সমস্যাকে দূরে রাখা যায়। যেমন হাঁটুর ব্যথা, কোমরে ব্যথা, অস্টিওআর্থ্রাইটিস (এগুলি মেকানিক্যাল সমস্যা), হার্টের অসুখ, লিভারে ফ্যাট জমা, থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেশার, কোলেস্টেরল (এগুলি মেটাবলিক সমস্যা) সবই নিরাপদ গণ্ডির মধ্যে চলে আসে। এবার প্রতি দু’মাসে ৫-১০ শতাংশ কমাব, এই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগনো উচিত। মাঝে ডায়েট ও এক্সারসাইজ ছেড়ে না দিলে একটা সময়ের পর আদর্শ ওজনে পৌঁছনো সম্ভব। তবে অনেকেই আছেন, যাঁরা ভাবেন, এক্সারসাইজ করছি যখন, তাহলে ডায়েট ভাঙলে দোষ নেই। এটা ভুল ধারণা। ওজন কমায় ডায়েটই। এক্সারসাইজ সেই ওজনকে ধরে রাখতে সাহায্য করে। আর একটি সহজ কথা মনে রাখলে ভালো। এখন মানুষের গড় আয়ু ৮০-৮৫ বছর। এখন যদি কারও ৪০ বছর বয়স হয়, ধরা যাক, হেলদি লাইফস্টাইল মেনে চললে তিনি আরও ৪০ বছর বাঁচবেন। তাহলে আপনার তাড়া কীসের? এখুনি ১০ কেজি কমিয়ে ফেলতে হবে এমন নয়। বরং সারাজীবন ওই আদর্শ ওজন ধরে রাখতে হবে। তাই ওজন কমানোর নেশায় মেতে নানা অবৈজ্ঞানিক ডায়েট অনুসরণ করবেন না। উপযুক্ত পুষ্টিবিদ বা ডায়েটেশিয়ানের পরামর্শ নিয়ে একটু একটু করে লক্ষ্যে পৌঁছন। 

কীভাবে বুঝব আদর্শ ওজন কত? 
এটা বিএমআই দিয়ে নির্ধারিত হয়। কীভাবে বিএমআই গণনা করা যায়? বিএমআই গণনার মূল সূত্র হল—
দৈহিক ওজনকে (কিলোগ্রামে) দৈহিক উচ্চতার (মিটারে) বর্গ দ্বারা ভাগ করা। অর্থাৎ বিএমআই = ওজন (কেজি)/ উচ্চতা (মিটার)২।
এশিয়া মহাদেশে বসবাসকারী প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য বিএমআই তিনটি ভাগে বিভক্ত—
এক, ১৮.৫ এর কম বিএমআই সাধারণত প্রয়োজনের তুলনায় কম ওজন থাকা নির্দেশ করে।
দুই, ১৮.৫ থেকে ২২.৯-এর মধ্যে বিএমআই স্বাভাবিক ওজন নির্দেশ করে।
তিন, ২৩-২৪.৯ রেঞ্জের বিএমআই অতিরিক্ত ওজন নির্দেশ করে।
২৫-এর বেশি বিএমআই স্থূলত্ব নির্দেশ করে।

সুগারের রোগীদের প্রচলিত প্রশ্ন
• মিষ্টি খেলেই কি সুগার—এ প্রশ্ন চিরকালীন। এর উত্তরও খুব প্রচলিত। মিষ্টি খেলেই সুগার হয় না। শর্করা জাতীয় খাদ্যই প্রাথমিক শক্তির উৎস। সুগার হলেই মিষ্টির সঙ্গে আড়ি নয়। তবে মিষ্টি ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। রক্তে শর্করাও বাড়ায়। তাই সুগার হলে মিষ্টি খাওয়ায় আঁটসাঁট নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়। প্রি-ডায়াবেটিকদেরও রাশ টানতে বলা হয়। তবে এখানে একটা টুইস্ট আছে। কেউ হয়তো মিষ্টি থেকে শতহস্ত দূরে থাকেন, কিন্তু তিনি হয়তো রোজ অনেকটা চিনি দিয়ে বারবার চা খান, প্রায়ই আইসক্রিম, কেক-মিষ্টি বিস্কুট  খান, কৃত্রিম চিনি মেশানো শরবত বা ফ্রুট জ্যুস দিনে কয়েকবার খান— এগুলো সবই চিনির মতোই ক্ষতি করে। তাই ডায়াবেটিস ধরা পড়লে মিষ্টি পরিমাণ কমাতে বলা হয়। তবে ভালোভাবে ডায়েট মেনে চললে মাঝেসাঝে একটা রসগোল্লা, অল্প চিনি দিয়ে চাও খাওয়া যায়। মাঝেসাঝে এক চাকলা আমও খেলে আপত্তি নেই। তা বলে, রোজ হলে মুশকিল। আবার একই দিনে চিনি দিয়ে চা, আম, একটা রসগোল্লা এসব খেলেও মুশকিল। তাই মিষ্টি যতটা পারবেন, এড়িয়েই চলুন। মাসে দু’-একবার মাঝেসাঝে নিয়ম ভাঙলে তাতে ভয় নেই। 
চিনি না গুড়: গুড়ের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স চিনির চেয়ে একটু কম। তাই অনেকে গুড় ব্যবহার করে। তাতে দোষ নেই, তবে চিনি বা গুড় যা-ই খান, সেটি দিনের শেষে মিষ্টি। তাই পরিমাণ বুঝে খেতে হবে। সুইটনার, সুগার ফ্রি এসবও কেউ কেউ খান। তবে এগুলিও বেশি খেলে বিপদ আছে। চিনি খেতে বারণ করা হয়, শুধু সুগারের জন্য নয়, এতে ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে বলে অধুনা নানা গবেষণা জানিয়েছে। তবে তা নিয়ে নিশ্চিত কোনও ধারণয়ে পৌঁছনো যায়নি এখনও। তাই সুগারের জন্য গুড়, চিনি, স্টেভিয়া যা-ই খান, অল্প খান।
তবে মিষ্টির চেয়েও ক্ষতি করে তেল। বিশেষ করে যিনি প্রি-ডায়াবেটিক, তাঁর কাছে মিষ্টির চেয়ে তেল আড়াই গুণ বেশি ক্ষতিকর। 
• তেল কি তবে একদম বাদ—১ গ্রাম গ্লুকোজে ৪ ক্যালোরি থাকলে ১ গ্রাম তেলে আছে ৯ ক্যালোরি। তাছাড়া তেল হল হিডেন ক্যালোরি। অর্থাৎ কোন খাবারে কতটা তেল যাচ্ছে (চানাচুর, চিপস, তেল মাখিয়ে মুড়ি ইত্যাদি), তা সবসময় বোঝা যায় না। তাই তেলেভাজা জিনিস বেশি খেলে সুগার হওয়ার ঝুঁকি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। ওজনবৃদ্ধি ও সুগারের ডায়েটে এক একজনের জন্য সারা মাসে তেলের পরিমাণ ৬০০-৭০০ মিলিলিটার বরাদ্দ করা থাকে। এর মধ্যে ঘরের খাবার, বাইরের খাবার সবই আছে। মাসে মাসে নেমন্তন্নবাড়ি আছে, এদিক ওদিক খেতে যাওয়া আছে, সেসব তেলের হিসেবও এর মধ্যেই ধরা। তাই বাইরে যেদিন খাবেন, তারপর দিন দুই বাড়িতে হালকা খান। মাছ ভেজে খেলে অল্প তেলে ভাজুন। কোনও কোনও দিন ডিপ ফ্রায়েড খাবার যেমন পকোড়া, লুচি এসব খেলে অল্প খান ও পরের দু’-একদিন চেষ্টা করুন হালকা খেতে। 
• সাদা তেল নাকি সর্ষের তেল—বেশি খেলে এককথায় সব তেল খারাপ ও সমান ক্ষতিকর। কোনও কোনও তেলকে অন্যটার চেয়ে বেশি ভালো বলা হয়, কারণ সে হয়তো ভালো কোলেস্টেরল একটু বাড়ায় বা খারাপ কোলেস্টেরল একটু কমায়। কিন্তু, বেশি খেলে যে কোনও তেল ক্ষতিকর। অনেকে আছেন, বাড়ির তেল কম খান, কিন্তু ফাস্ট ফুড বেশি খান। ফাস্ট ফুডের দোকান স্বাভাবিকভাবেই আপনার তেলের মাপ বুঝে রান্না করবে না। ফলে মাসের শেষে দেখলেন, বাড়িতে ৭০০ মিলি তেল খেয়েও সুগার বাড়ছে! এছাড়া তেলের বিকল্প কিছু খাবার আছে। কেউ হয়তো নারকেল, বাদাম এইসব খেতে খুব ভালোবাসেন। এই খাবারে প্রচুর তেল। ১০০ গ্রাম বাদামে ৬০০ ক্যালোরি থাকে! বাদামের অন্য অনেক গুণ আছে। কিন্তু ওজন বেশি থাকলে ও প্রি-ডায়াবেটিক বা ডায়াবেটিক হলে বাদাম এড়িয়ে চলতে হবে। যেদিন তেমনভাবে কিছুই তেলের জিনিস খাবেন না, সেদিন একমুঠো বাদাম খান, তাতে ভয় নেই। এই ব্যালান্স রোগীকেই করতে হবে। মোট কথা, পরিমাণ ঠিক রেখে খেলে সাদা বা সর্ষের তেল যে কোনও তেল খেতে পারেন। তা নাহলে সব তেলই ক্ষতিকর।
• আলু কি বাদ—একেবারেই আলু বাদ নয়। আবার নিয়ম করে অনেক আলুও চলবে না। অনেকে ভাবেন, আলুর জল ফেলে দিয়ে খেলে বুঝি কোনও ক্ষতি হয় না। কিন্তু তাতেও তো স্টার্চ বেরিয়ে যায় না। তাই মাঝেসাঝে আলু খান অল্পস্বল্প, তাতে ক্ষতি নেই। 
• ভাত না রুটি—ভাত ও রুটিতে ক্যালোরিগত বিরাট কিছুই তফাত নেই। দু’টিই এক গোত্রের খাবার। ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স একটু বেশি। তাই রক্তে গ্লুকোজ মেশে তাড়াতাড়ি। তাই যা-ই খান, অল্প খান। শাকসব্জি, ডিম, মাছ-মাংস খান বেশি করে। ডাল, সব্জি দিয়ে পেট ভরান। ভাত ও রুটি মিশিয়ে খেলেও অসুবিধা নেই। তবে মিশিয়ে খেলে পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই মিশিয়ে খেতে বারণ করা হয়। তবে পরিমাণ বুঝে খেলে কোনও অসুবিধা নেই। 
• সন্ধের পর ফল—ফল খাওয়ার সময় নিয়ে কোনও বাঁধা নিয়ম নেই, অবশ্যই সন্ধের পর ফল খাওয়া চলে। তাতে কোনও ক্ষতি হয় না। বরং প্রতি বড় মিলের আগে একটি আপেল খেতে পারলে ভালো হয়। আপেল অনেকটা ক্যালোরি বহনকারী খাবার, পেট ভরা রাখে। তাই ভাত-রুটি বা যা খাবেন তা বেশি পরিমাণে খাওয়া যায় না। 
একজন সুগারের রোগীর সাধারণ খাবার 
কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট— এই তিনটি উপকরণই তো সব খাবারে আছে। এর বাইরে কিছু তো চাইলেও খেতে পারবেন না। তাই নানারকম খাবার খান। সকালে হাতে গড়া রুটি-সব্জি, আটার পাঁউরুটি (ব্রাউন ব্রেড), ডালিয়া, ওটস, মুড়ি, এক কাপ দুধ (ওজন ও অ্যাক্টিভিটির উপর নির্ভর করবে), উপমা, সুজি, একটা ফল, সপ্তাহে দুটো কুসুম-সহ ডিম, ডিমের সাদা রোজই খেতে পারেন একটি করে। দুপুর ও রাতে একটু ভাত, অনেকটা ডাল, সব্জি, দিনে ১০০ গ্রাম মাছ বা ১৫০ গ্রাম মাংস খান। মাঝেসাঝে একটু আধটু আলুও খেতে পারেন। দুধ বা দই খেলে অ্যাসিড হয় বলে মনে হলে ছানা ও পনির খান। একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির নিজের ওজন যত কেজি, তত গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। একজনের ওজন যদি ৮০ কেজি হয়, ৮০ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া কিন্তু বাধ্যতামূলক। কেউ মাছ-মাংস না খেলে তাকে একটু বেশি ডাল খেতে হবে, সয়াবিন খেতে  হবে। পাতে সবুজ শাকসব্জি ও ফল বেশি রাখুন। 
লিখেছেন মনীষা মুখোপাধ্যায়
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৫ টাকা৮৪.৮৯ টাকা
পাউন্ড১০৮.২৫ টাকা১১১.৮০ টাকা
ইউরো৯০.৭১ টাকা৯৩.৮৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা