দেশ

ভয়াবহ বন্যার কবলে বাংলা, মৃত্যু বেড়ে ১৯, দুর্গত ৪৫ লক্ষ, বহু ব্লক বিচ্ছিন্ন

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দক্ষিণবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হল বুধবার। ডিভিসির মাইথন ও পাঞ্চেত বাঁধ থেকে ছাড়া জলে বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও হাওড়া জেলার বিস্তীর্ণ অংশ প্লাবিত হয়ে পড়েছে। অন্যান্য বাঁধ থেকে বিপুল পরিমাণে জল ছাড়ার প্রভাব পড়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর সহ একাধিক জেলায়। সব মিলিয়ে বন্যার কবলে পড়েছে দক্ষিণবঙ্গের ১২টি জেলার বিস্তীর্ণ অংশ। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা অন্তত ৪৫ লক্ষ। গত শুক্রবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে শুরু হওয়া বৃষ্টি, দুর্যোগ ও চলতি বন্যার কারণে মোট ১৯ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। এঁদের মধ্যে কারও মৃত্যু হয়েছে মাটির বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে। কেউ আবার জমা জলে তড়িদাহত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। সাপের কামড়েও মৃত্যু হয়েছে একাধিক মানুষের। এছাড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে জলে ডুবে ১০ বছরের এক শিশু মারা গিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। বড় সড়ক থেকে গ্রামীণ রাস্তা—সবই জলমগ্ন হয়ে পড়ায় বহু ব্লকের সঙ্গে যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন। হুগলির খানাকুল, পুরশুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল সহ বহু ব্লক রয়েছে এই তালিকায়। নবান্ন জানিয়েছে, মোট ১ লক্ষ ৪৪ হাজার মানুষকে প্রশাসনিক উদ্যোগে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্রের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজে নেমেছে। বীরভূমের লাভপুরে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন দুই এমপি অসিত মাল ও সামিরুল ইসলাম, বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, জেলাশাসক সহ সরকারি আধিকারিকরা। তাঁদের স্পিডবোট জলে ডুবে যায়। তবে ১৩ জনকেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাঁরা প্রত্যেকে সুস্থ আছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় এদিন দুপুরে বন্যাদুর্গত হুগলির পুরশুড়া ও গোঘাট, আরামবাগে পৌঁছে যান। তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে বাংলায় এই ম্যানমেড বন্যা করা হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের জলে বাংলা প্লবিত হচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যা কবলিত। ডিভিসির বাঁধ থেকে যেভাবে সাড়ে ৩ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে, তা আগে কখনও হয়নি।’ মুখমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সঙ্গে তিনবার কথা বলেছেন। ডিভিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে। পরে মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। দুই জায়গাতেই দুগর্তদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। রাতে তিনি মেদিনীপুরে ছিলেন। আজ, বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার বন্যা পরিস্থিতি দেখে কলকাতায় ফিরে আসার কথা তাঁরা।  
এদিকে, ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঝাড়খণ্ডে দামোদর অববাহিকা এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ার জন্যই এত বেশি হারে জল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। এর আগে ২০০৯ সালে এর থেকেও বেশি জল ছাড়তে হয়েছিল। সংস্থার চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ কে দুবে জানিয়েছেন, বৃষ্টি বন্ধ হওয়ায় জল ছাড়ার পরিমাণ এখন কমছে। বুধবার সন্ধ্যার পর মাইথন-পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে ১ লক্ষ ৩০ হাজার কিউসেক করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কিউসেক জল আসছে পাঞ্চেত থেকেই। কারণ, ঝাড়খণ্ড সরকার নিয়ন্ত্রিত তেনুঘাট বাঁধের জলধারণ ক্ষমতা অনেক কম হওয়ায় দামোদরের প্রচুর জল আসছে পাঞ্চেতে। মাইথন-পাঞ্চেত বাঁধ থেকে ছাড়া জল দুর্গাপুর ব্যারেজ হয়ে বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি জেলার নিম্ন দামোদর অববাহিকা অঞ্চলে নেমে আসছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ডিভিসি ২ লক্ষ কিউসেকের বেশি হারে জল ছাড়ছিল। তাই বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দুর্গাপুর থকে আড়াই লক্ষ কিউসেকের বেশি হারে জল ছাড়তে হয়। দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে নেমে আসা এই বিপুল জলরাশি ভাসিয়ে দিচ্ছে হুগলির আরামবাগ থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল সহ পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকা। ডিভিসির এই জল ঘুরপথে রূপনারায়ণ সহ মেদিনীপুরের বিভিন্ন নদীতে ঢুকছে। ফলে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে এসব অঞ্চলে। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে একটি দোতলা বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে।
ফুঁসছে মুণ্ডেশ্বরী। হরিণখোলা ব্রিজ থেকে বন্যা কবলিত আরামবাগ পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। -নিজস্ব চিত্র
13h 13m ago
কলকাতা
রাজ্য
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

গৃহসুখ বৃদ্ধি ও সপরিবারে আনন্দ উপভোগ। অন্যের দোষের দায়বহন করতে হতে পারে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.০৭ টাকা৮৪.৮১ টাকা
পাউন্ড১০৮.৬৫ টাকা১১২.২০ টাকা
ইউরো৯১.৫৭ টাকা৯৪.৭৬ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
17th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা