শরীর ও স্বাস্থ্য

ত্বক ও চুল ভালো রাখার উপায়

গরমে হাঁসফাঁস দশা। এই পরিস্থিতিতে ত্বক আর চুলের দেখভালের রুটিন কেমন হবে? সুলুকসন্ধান দিলেন ডাঃ নবনীতা চক্রবর্তী

তেলতেলে ত্বক না শুষ্ক ত্বক— বুঝব কী  করে? 
ড্রাই স্কিন-এর ক্ষেত্রে ত্বক ভীষণ শুষ্ক থাকে। গ্রীষ্মকালে এমনিতেই সূর্য পৃথিবী থেকে জলীয় পদার্থ শোষণ করে নেয়। গরমকালে আর্দ্রতা বেশি থাকে। ঘাম হয়। এই সময় ত্বকে যদি ড্রাইনেস অনুভব করেন, তাহলে বুঝতে হবে আপনার ড্রাই স্কিন। ত্বক শুষ্ক হলে পিম্পলের সমস্যা কম হয়। তবে খুব তাড়াতাড়ি রিংকল পড়ে যায়। ড্রাই স্কিন-এ ঘাম হয় ঠিকই, অয়েল খুব বেশি বের হয় না। অন্যদিকে, স্কিন অয়েলি হলে মুখ সবসময়ই তেলতেলে হয়ে থাকে। মেকআপ টেকে না। হাতের নোংরা থেকে পিম্পলের সমস্যা হয়। ঘুম থেকে উঠেও দেখবেন ত্বক তেলতেলে রয়েছে। 

ঘুম থেকে উঠে ত্বকের যত্ন? 
কেবল গরমে নয়, পুরো বছর জুড়েই একটা রুটিন মেনে ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত। ক্লিনিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং— এই হল স্টেপ। সকালে উঠে ফেসওয়াশের সাহায্যে ক্লিনিং করে নেওয়া যায়। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করতে চাইলে দুধের মধ্যে মধু মিশিয়ে মুখ ধুতে পারেন। এরপর টোনিংয়ের জন্য গোলাপ জল ব্যবহার করুন। ময়েশ্চারাইজার হিসেবে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে কিন্তু ভুলবেন না। কারণ গরমে সূর্য আমাদের ত্বক থেকে যাবতীয় জলীয় উপাদান নিয়ে নেয়। আর গরমকালে ওয়াটার বেস ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করাই শ্রেয়। এছাড়াও ড্রাইস্কিনের জন্য ম্যাঙ্গোবাটার ব্যবহার করতে পারেন। এটি সানবার্নের জন্য উপকারী। 

বাইরে বেরনোর সময় কী করতে হবে? 
বাইরে বেরনোর সময় অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। ছাতা সঙ্গে রাখুন। জল খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে। 

সানস্ক্রিন মাখলে মুখে সাদা দাগ ফুটে থাকে। এক্ষেত্রে কী করণীয়?
মেখেই সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে পড়বেন না। বেরনোর কিছুক্ষণ আগে সানস্ক্রিন মাখুন। স্পঞ্জ দিয়ে একটু মিশিয়ে নিন ত্বকের সঙ্গে। পাউডার বেসড সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন। তবে খুব বেশি রোদে বেরলে দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরপর সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। 

মেকআপ কেমন হবে?
হালকা মেকআপ করুন। ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ করাই সবচেয়ে ভালো। নইলে বেশিক্ষণ টিকবে না। 

বাড়ি ফিরে ত্বকের যত্ন 
ভালো করে মেকআপ তুলতে হবে। স্কিন প্রচণ্ড ড্রাই লাগলে ম্যাঙ্গো বাটার ব্যবহার করুন। মধু লাগাতে পারেন। মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। ত্বক ভীষণ অয়েলি মনে হলে চন্দনের প্রলেপ লাগান। পুদিনা ওয়াটার তৈরি করতে পারেন। গ্রে ফ্রুট ওয়াটার ন্যাচারাল ময়েশ্চারাইজারের কাজ করবে। 

ঘামের গন্ধ হচ্ছে— কী করব?
স্নানের পর যেখানে যেখানে বেশি ঘাম হচ্ছে, সেখানে পাতিলেবুর রস লাগান। এছাড়াও মুসাম্বির খোসা বেটে ব্যবহার করতে পারেন। এতে ঘামের গন্ধ অনেকটা দূর হয়।

ট্যান দূর করতে কী উপায়? 
সানস্ক্রিন লাগাতে সবসময় মনে থাকে না, এর জন্য ট্যান পড়ে যায়। আর মুখে সানস্ক্রিন ব্যবহার করলেও, পা বা হাতে ব্যবহার করা হয় না সাধারণত। এর থেকে মুক্তি পেতে টম্যাটো বাটা ব্যবহার করুন। এছাড়াও পুরো শরীরে মুসুরবাটা লাগানো ভীষণ উপকারী। দইয়ের মধ্যে লেবুর রস মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। 

ঘাম মুছতে কী ব্যবহার করব?
রুমাল ব্যবহার না করে টিস্যু পেপার ব্যবহার করুন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি ভেজা টিস্যু পেপার ব্যবহার করা যায়। 

দূর করার উপায়? 
হলুদ বাটা মাখুন। নিমের জল দিয়ে স্নান করলেও উপকার মেলে। ত্বকের জন্য ভালো ভেষজ প্যাক মুসুর বাটা, চন্দনের গুঁড়ো একসঙ্গে নিন। তাতে মধু মিশিয়ে লাগাতে পারেন। পিম্পল থাকলে নিমপাতা বাটা ব্যবহার করুন। কিন্তু মনে রাখবেন, নিম ত্বকের রং খানিক কালো করে দেয়। তাই পিম্পল না থাকলে শুধু হলুদ বাটা ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে দু’দিন এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। 

ঘামে চুলের সমস্যা— কী করণীয়?
ঘামের জন্য খুশকির খুব সমস্যা হয়। চুল পড়ে যায়। ছত্রাকঘটিত আরও নানা সমস্যা দেখা যায়। এই সময় স্কাল্পে দই, কলা মধু, টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে মাখতে পারেন। এতে উপকার মেলে। 

ছত্রাকঘটিত সমস্যার দূর করতে? 
ফাংগাল ইনফেকশন প্রচণ্ড হলে লেবুর রস স্কাল্পে ব্যবহার করতে পারেন। 

চুল খুব শুষ্ক মনে হলে? 
আমলার রস, মেথির জল সকালে খেতে পারেন। ধনে দানা ভেজানো জল খাওয়া যায়। গরমকালে নারকেল তেলের মধ্যে কর্পূর মিশিয়ে নিন। এতে শুষ্কভাবটা কেটে যাবে। জটামাংসী তেল, নিম তেল, ব্রাহ্মী তেল ব্যবহার করতে পারেন। ভীষণ ঘাম বা চুলকানি হলে তুলসী পাতার গ‌ুঁড়ো বা পাতা বেটে লাগাতে পারেন। 

শ্যাম্পু কতদিন অন্তর করা উচিত?
গরমের দিনে বাইরে বেরতে হলে একদিন অন্তর একদিন শ্যাম্পু করুন। আর বাড়িতে থাকলে দু’দিন বা তিনদিন অন্তর করতে পারেন। 

চুল উঠে যাওয়ার প্রতিকার?
ব্রাহ্মী গুঁড়ো, অশ্বগন্ধা গুঁড়ো আর একটু দুধ নিয়ে একসঙ্গে ফুটিয়ে নিন। সেটা চুলে লাগান। এতে চুলের গোড়া শক্ত হয়। আবার, কারও খুশকি, চুল পড়ার সমস্যা একসঙ্গে থাকলে নিম ও ভৃঙ্গরাজ ব্যবহার করতে পারেন। ১৫টা নিম পাতা আর ১৫টা ভৃঙ্গরাজ পাতা নিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। জবা গাছের পাতা, তুলসী পাতাও মেশাতে পারেন। 

তেল মাখার সঠিক নিয়ম
চুল ভালো রাখতে নারকেল তেলের জুড়ি মেলা ভার। তবে সুগন্ধিযুক্ত নারকেল তেলের পরিবর্তে ঘানির তেল ব্যবহার করতে পারলে ভালো হয়। শ্যাম্পু করার আগের দিন রাতে তেল মাখা উচিত। তেল মেখে কখনওই বাইরে বেরবেন না। এতে বাইরের নোংরা চুলে লেগে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তেল লাগানোর আগে গরম করে নেওয়া উচিত। তবে সরাসরি গরম করবেন না। না হলে তেলের প্রাকৃতিক গুণ হারিয়ে যায়। গরম জলের উপর তেলের বাটি রেখে দিন। নারকেল তেলের মধ্যে মেথি, ত্রিফলা মিশিয়ে মাখতে পারেন। নারকেল তেল ছাড়াও ভৃঙ্গরাজ তেল, ব্রাহ্মী তেল লাগাতে পারেন। ব্রাহ্মী তেল স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। তেল হালকা হাতে মেসেজ করবেন। 

পরিশেষে
অভ্যন্তরীণ সুস্থতার আয়না হল চুল ও ত্বক। তাই গরমে শরীর সুস্থ রাখুন। বেশি করে জল খান। আপনার পাশাপাশি চুল আর ত্বকও সুন্দর থাকবে। 
লিখেছেন শান্তনু দত্ত
5d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

গৃহসুখ বৃদ্ধি ও সপরিবারে আনন্দ উপভোগ। অন্যের দোষের দায়বহন করতে হতে পারে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.০৭ টাকা৮৪.৮১ টাকা
পাউন্ড১০৮.৬৫ টাকা১১২.২০ টাকা
ইউরো৯১.৫৭ টাকা৯৪.৭৬ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
17th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা