বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দক্ষিণবঙ্গ
 

ঘুঘুর বাসায় থাবা স্বাস্থ্যদপ্তরের
স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে আর্থিক অনিয়ম
বর্ধমানে নার্সিংহোম বন্ধের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: বর্ধামানে ঘুঘুর বাসায় থাবা বসাল স্বাস্থ্যদপ্তর। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে কয়েক কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর একটি নার্সিংহোম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। নার্সিংহোমে ভর্তি থাকা রোগীদের ছুটি দিয়ে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 
পূর্ব বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, নার্সিংহোম বন্ধের নোটিস কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে সত্যতা মেলায় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নার্সিংহোমের পক্ষে এক পদস্থ কর্তা বলেন, নির্দেশ পাওয়ার পরেই আমরা রোগী ভর্তি বন্ধ রেখেছি।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছ, শহরের আরও কয়েকটি নার্সিংহোম রাজ্যের আধিকারিকদের নজরে রয়েছে। পরিকাঠামো না থাকা সত্ত্বেও সেগুলিতে রোগী ভর্তি করা হচ্ছে। চিকিৎসার নামে মোটা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ। এছাড়া স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যবহার নিয়েও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। চিকিৎসা না করেই নকল নথির মাধ্যমে তারা টাকা হাতিয়েছে।
কীভাবে এই চক্র চলছে? স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকরা তদন্তে নেমে জানতে পেরেছেন, ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড জোগাড় করেছিল। তারজন্য তাদের এজেন্ট ছড়ানো থাকত। এজেন্টরা কার্ড পিছু কমিশন পেত। কার্ডের মালিকদের দেড় থেকে দু’হাজার টাকা দিত। জনৈক মুস্তাক নামে এক ব্যক্তি প্রথমে এই চক্র তৈরি করে। সে সেই সময় অন্য একটি নার্সিংহোমের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সেখানে কারসাজি ধরা পড়ার পর ওই নার্সিংহোমে এই কারবার শুরু করে। সে কার্ড জোগাড়ের জন্য এজেন্টদের রীতিমতো ট্রেনিং দিত। এজেন্টরা গ্রামে গিয়ে এলাকার লোকজনকে ভুল বুঝিয়ে বলত, মার্চ মাসে কার্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। পরের আর্থিকবর্ষে তা আবার চালু হবে। এর মাঝে কার্ড দিয়ে একবার নার্সিংহোমে ছাপ দিলেই দু’হাজার টাকা কমিশন পাওয়া যাবে। ওই ব্যক্তি কার্ড মালিকদের ‘হিস্ট্রি’ লিখতেন। কারও হিস্ট্রিতে লিখতেন, পেটে ব্যথা ও জ্বর আছে। জন্ডিস হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সে ‘জিবি সিনড্রোম’ লিখে দিত। এই রোগে আক্রান্তদের ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়। 
এছাড়া গলব্লাডারে পাথরের কেউ অপারেশন করতে এলে ইচ্ছাকৃতভাবে জন্ডিস বেশি দেখানো হতো। সেক্ষেত্রে ১০ দিন নার্সিংহোমে ভর্তি থাকার নথি তৈরি করা হতো। পরে অন্যান্য নথি তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা করত। মুস্তাক নামের ওই ব্যক্তিকে স্বাস্থ্যসাথী দপ্তরের এক কর্মী সহযোগিতা করত। তার বিনিময়ে সে ২৫ শতাংশ কমিশন নিত। ওই ব্যক্তি প্রতি মাসে কলকাতা থেকে বর্ধমানে আসত। বাইপাসের পাশে একটি হোটেলে সে উঠত। সেখানেই তার কাছে কমিশন পৌঁছে যেত।  ওই ব্যক্তি নিজেকে এক প্রভাবশালীর ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করত। আদতে সে তেমনটা ছিল না।  স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর ওই নার্সিংহোম মালিককে ১ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। তা না দেওয়ায় নার্সিংহোম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

25th     March,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ