দেশ

শুক্রবার দিনভর মুম্বইয়ে বৃষ্টি হলেও তার তেজ ছিল তুলনামূলকর অনেক কম। যদিও দুর্যোগ এখনও কাটেনি। শনিবার পর্যন্ত মুম্বই এবং পাশ্ববর্তী পালঘরে বৃষ্টির হলুদ সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। লাল সতর্কতা জারি আছে রত্নাগিরি, রায়গড়ে। ইতিমধ্যে বৃষ্টিতে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ছয় হয়েছে। রায়গড়ের আলিবাগ উপকূলে আরব সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে ভেসে যাওয়া একটি টাগবোটের ১৪ জন নাবিককে উদ্ধার করেছে উপকূলরক্ষী বাহিনী। পিটিআই

সুলতানপুরে অস্তিত্ব রক্ষার একক লড়াই মানেকার

সমৃদ্ধ দত্ত, সুলতানপুর: দিদি অম্বিকা ভেবেছিলেন, ২৫ বছর বয়সি ছোটবোন, আর বোনের শাশুড়িকে সামনে বসিয়ে কিছু একটা বোঝাতে সক্ষম হবেন। তাই গাড়ি নিয়েই ছুটে এসেছিলেন। কিন্তু এসে দেখেন, পরিস্থিতি হাতের বাইরে। ধীরেন ব্রহ্মচারী এবং আর কে ধাওয়ান চুপ করে দাঁড়িয়ে। আর দেশের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী খালি পায়ে ড্রইংরুমে দাঁড়িয়ে রাগে কাঁপছেন। 
অম্বিকা জানতে চেয়েছিলেন, মানেকা কোথায়? তাঁকে জানানো হয়েছিল, নিজের ঘরে। ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে বসে রয়েছেন তিনি। কিছু একটা ঝড় বয়ে গিয়েছে বাড়িতে। প্রয়াত সঞ্জয় গান্ধীর স্ত্রীকে লখনউয়ে একটি অনুষ্ঠানে ডাকা হয়েছিল। ইন্দিরা ছিলেন লন্ডনে। ইন্দিরা বার্তা পাঠিয়েছিলেন, মানেকা যেন ওই সভায় না যান। আর গেলেও একটিও কথা যেন না বলেন। মানেকা কোনওটাই মানেননি। তিনি লখনউ যান। এবং এমন কিছু কথা ওই সভায় বলেন, যা গান্ধী পরিবারের ভালো লাগার মতো নয়। 
ইন্দিরা গান্ধী ফিরে এসে সেকথা জানতে পেরে ডেকে পাঠান মানেকাকে।  অবাধ্যতার জন্য মানেকাকে প্রবল বকাবকি করেন। মানেকার অভিযোগ ছিল, তাঁকে বাড়ি থেকে চলে যেতেও নাকি বলা হয়েছে। মানেকা নিজের দিদিকে তাই সব জানিয়ে ফোন করেছেন। ১৯৮২ সালের ২৮ মার্চ এই চরম নাটকীয় পারিবারিক বিবাদ সংবাদমাধ্যম জেনে যায়। আর সেই রাতেই ৯টার সময় মিডিয়া হাজির ১ নং সফদরজং রোডের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে। 
মানেকা চলে যাবেন বাড়ি ছেড়ে। কিন্তু যাচ্ছেন না কেন? কারণ পুত্র বরুণ। মানেকা গেলে বাধা দেবেন না। কিন্তু ইন্দিরা গান্ধী ছোট নাতি বরুণকে নিয়ে যেতে দেবেন না। বরুণ তাঁর কাছেই থাকবে। মানেকা সেকথা মানছেন না। ছেলেকে না নিয়ে যাবেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত ইন্দিরার অন্যতম এক পরামর্শদাতা পি সি আলেকজান্ডার জানলেন, ছেলে আর মাকে আলাদা করা যাবে না। আইনে আটকে যাবে। 
মিডিয়াকে সাক্ষী রেখে রাত ১১টার সময় ঘূমন্ত আড়াই বছরের পুত্রকে কোলে নিয়ে দিদি অম্বিকার গাড়িতে চেপে সেই যে বেরিয়ে গেলেন মানেকা গান্ধী, আর ফেরেননি। গান্ধী পরিবারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন হল। গান্ধী পরিবারে তিনি ছিলেন দুয়োরানি। বড় বউ বিদেশিনী হলেও শাশুড়ি ইন্দিরা গান্ধীর কাছের মানুষ। সোনিয়া গান্ধীর সবথেকে বড় বৈশিষ্ট্য হল, তিনি বাধ্য এবং কম কথা বলেন। স্বাধীনতাকামী মানেকা গান্ধী ঠিক বিপরীত। 
মানেকা গান্ধীর একক সংগ্রামের জীবন সেই যে শুরু হল, আর শেষ হয়নি। ২০২৪ সালে লখনউ থেকে ১৬০ কিমি দূরের এক নিস্তরঙ্গ জনপদ সুলতানপুরে এসে বোঝা গেল—মানেকার একক লড়াই আজও অব্যাহত। তাঁকে প্রার্থী করেই বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের দায়িত্ব শেষ। জয়ী করার দায় দিল্লির বড়বাবুদের নেই। তাহলে তাঁকে কেন প্রার্থী করা হল? কারণ, সুলতানপুর আসনে বিজেপিকে আবার জেতাতে হলে মানেকাকেই প্রার্থী করতে হবে। এই একজন বিজেপি প্রার্থী প্রচারে একবারও বলছেন না যে, তাঁর দল রামমন্দির করেছে। একবারও বলছেন না, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি হবে। প্রকাশ্য বলেছেন, সুলতানপুরে রামমন্দির কোনও ইস্যুই নয়। মানুষের মনে আছে রামমন্দির। ভোটে নেই। ভোটের ইস্যু কী? উন্নয়ন। রাস্তা, পানি, বিজলি। মোদি হাওয়া তোলার উদ্যোগ নেই। মানেকাকে যেন নিজের ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অতএব গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে মানেকা গান্ধী একা ছুটছেন। তিনি গ্রামে প্রচার করলে বরুণ মায়ের হয়ে সভা করছেন শহরে। মা-ছেলে জানেন, এই নির্বাচন তাঁদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। নতুন বিজেপি, মোদির বিজেপি তাঁদের পছন্দ করে না। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও মাকে প্রার্থী করেছে, বরুণকে টিকিট দেয়নি। 
সর্বেশ কোহলি বললেন, ‘সুলতানপুর কেন্দ্রের বিশেষ কোনও দলের প্রতি চিরকালীন আনুগত্য নেই। কংগ্রেস এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছে বহুবার। বিজেপি চারবার। বহুজন সমাজ পার্টিও দু’বার। চারদিকে দেখা যাচ্ছে, এবার মোদি হাওয়া বলে কিছু নেই। এই নির্বাচনে কোনও কেন্দ্রীয় ইস্যুই নেই। মানেকা গান্ধীকে না দিলে এবার বিজেপি হেরে যেতেই পারত।’ সুলতানপুরে মানেকার বিরুদ্ধে প্রার্থী সমাজবাদী পার্টির রামভুয়াল নিষাদ। সমাজবাদী এবং কংগ্রেসের জোট হওয়ায় ভোট ভাগ হচ্ছে না। মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টির প্রবল শক্তিক্ষয় হয়েছে। ২০১৯ সালে মানেকা গান্ধীর জয়ের মার্জিন কত ছিল? মাত্র ১৪ হাজার।
সুলতানপুরে অঙ্কের অধ্যাপক শেষকুমার পান্ডে এক আশ্চর্য মানুষ। কঠিন সমীকরণ অনায়াসে ছাত্রছাত্রীদের বোঝাচ্ছেন। আবার ততটাই নিখুঁতভাবে চাষ করছেন। সুলতানপুরের তাঁর ২ বিঘা জমিতে কৃষিকাজ। আজকাল চাষ করছেন পিপারমেন্টের। কম লগ্নি। বৃষ্টি না হলে হাই প্রফিট! বৃষ্টি হলে পুরো লোকসান। অতএব ঝুঁকি থাকেই। সুলতানপুরের লোকসভা ভোটের মতো। নরেন্দ্র মোদি এখানে নিজের ঘাড়ে কোনও দায়িত্ব নেননি। মানেকা গান্ধীকে প্রার্থী করেছেন। প্রচারের রমরমা কম। নেতাদের যাতায়াত কম। কম লগ্নি। কম দায়। জিতলে মোদি বলবেন, তাঁর ম্যাজিক। হারলে দায় চাপবে মানেকার উপর। গান্ধী পরিবারেই শুধু নয়। নিজের দলেও দুয়োরানি মানেকা গান্ধী ছুটে চলেছেন, জীবনের শেষতম একক লড়াইয়ে জিততে!
2Months ago
কলকাতা
রাজ্য
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা