বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
দেশাত্মবোধ
বছরের প্রথম ব্লকবাস্টার ছবি ছিল ভিকি কৌশল অভিনীত ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ (১১ জানুয়ারি)। মুক্তির দিন ৮ কোটি টাকার ব্যবসা করলেও দেশাত্মবোধের আবেগ ও ভিকি কৌশলের অভিনয়ে ভেসেছে আসমুদ্রহিমাচল। ফলে ৪৫ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি এই ছবি বক্সঅফিসে ব্যবসা করেছে ৩৪২ কোটি টাকা। অথচ এই একই সময়ে মুক্তি পাওয়া কঙ্গনা রানাওয়াতের ‘মণিকর্ণিকা: দ্য কুইন অব ঝাঁসি’ (২৫ জানুয়ারি) কিন্তু ঘরে তুলেছে মাত্র ১৩২ কোটি টাকা। একই কথা প্রযোজ্য ‘কেশরী’র (২১ মার্চ) ক্ষেত্রেও। অক্ষয়কুমার মানেই নতুন চমক। শিখ বীর যোদ্ধাদের গল্প কিন্তু মানুষের মনে সেইভাবে দাগ কাটেনি। যার ফলে শুধু স্টার ভ্যালুকে সম্বল করেই ছবির ব্যবসা ২০০ কোটি টাকায় থেমে গিয়েছে।
এক্সপেরিমেন্টই রাজা
‘উরি...’র পর সুপারহিট ছবি বলতে গেলে ‘গালি বয়’ (১৪ ফেব্রুয়ারি)। নতুন কনসেপ্টকে সম্বল করে আলিয়া ভাট ও রণবীর সিংয়ের ইমেজ ভাঙার প্রচেষ্টাকে সাদরে গ্রহণ করেছিলেন দর্শক। প্রথম দিনেই এই ছবি ঘরে তুলেছিল প্রায় ২০ কোটি টাকা। ৮৫ কোটি টাকা বাজেটের এই ছবির বক্সঅফিসে আয় ২৩৮ কোটি টাকা। স্বামীর প্রেমিকা প্রায় তার মেয়ের বয়সী। এই বিষয় নিয়ে অজয় দেবগণ, টাবু ও রকুলপ্রীত সিং অভিনীত নিউএজ রমকম ‘দে দে পেয়ার দে’র (১৭ মে) স্বাদ দর্শক চেটেপুটে নিয়েছেন। পরিচালক নতুন, ছবি নিয়ে বিন্দুমাত্র উৎসাহ ছিল না। তবু সহজ সরল গল্প এই ছবিকে হিট তকমা দিয়েছে। বক্সঅফিসে ১০ কোটি দিয়ে যে দৌড় শুরু হয় তা শেষ হয় ১৩৮ কোটিতে। একইভাবে ইন্দ্র কুমারের কমেডি ‘টোটাল ধামাল’ও (২২ ফেব্রুয়ারি) স্টারকাস্ট সম্বল করেই বক্স অফিসে জমিয়ে ব্যবসা করেছে (২২৮ কোটি টাকা)। কিন্তু নতুনত্ব থাকলেও ইমরান হাশমি অভিনীত ‘হোয়াই চিট ইন্ডিয়া’ (১৮ জানুয়ারি) ফ্লপ করেছে। দেশের বক্স অফিস থেকে উপার্জিত টাকার পরিমান মাত্র ৮ কোটি!
রোমান্সে অরুচি
প্রথম ছ মাসের ফলাফল দেখে বলাই যায় যে রোম্যান্টিক ছবি থেকে আম জনতা মুখ ফিরিয়েছেন। ‘লুকা ছুপি’ (১ মার্চ) বাজেটের দিক থেকে সফল ছবি। বলিউডের নতুন স্টার কার্তিক আরিয়ানের কাঁধে ভর করে ১২৫ কোটি টাকার ব্যবসা দিয়েছে এই ছবি। তেমনই আবার দর্শক ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ২’ (১০ মে) বা সাম্প্রতিক ‘মালাল’ (৫ জুলাই) এর মতো টিনএজ রোমান্টিক ছবি দেখেননি। বোঝাই যাচ্ছে টাইগারের অ্যাকশন অবতার তাঁর রোম্যান্টিক অবতারের তুলনায় অনেক বেশি সেফ। করণ জোহর প্রযোজিত ছবিটি মাত্র ৯৭ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। অন্যদিকে জাভেদ জাফরির ছেলে মিজানের প্রথম ছবি ‘মালাল’ বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছে। শরমিন-মিজানের নতুন জুটি ভাঙিয়ে এই ছবি মাত্র ৩ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। সোনম কাপুর ও রাজকুমার রাও থাকা সত্বেও ‘এক লড়কি কো দেখা তো অ্যায়সা লগা’ দর্শকদের একদমই পছন্দ হয়নি। বক্স অফিসের মোট আয় মাত্র ৪৪ কোটি টাকা। তবে এখনও পর্যন্ত রোম্যান্টিক ঘরানায় বছরের সবথেকে বড় ফ্লপ বলা চলে ম্যাগনাম ওপাস ‘কলঙ্ক’কে (১৭ এপ্রিল)। তারকা, বাজেট, সেট, কস্টিউম— কোনও কিছু বাদ নেই। শুধু বাদ সেধেছে চিত্রনাট্য। তাই প্রথম দিন ২১ কোটি টাকার ব্যবসা করেও দেশের বক্সফিসে শেষপর্যন্ত ছবির ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ৮০ কোটি টাকা!
দুর্বল বায়োপিকের আধিক্য
বায়োপিক এখন বলিউডে হট কেক। সেখানে বছরের প্রথমার্ধে সফল বায়োপিকের অভাব চোখে পড়েছে। একদিকে মনমোহন সিংয়ের জুতোয় পা গলালেও অনুপম খের অভিনীত ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ (১১ মার্চ) ফ্লপ হয়েছে। একইভাবে লোকসভা ভোটের হাওয়া বিন্দুমাত্র সাহায্য করেনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদির বায়োপিক ‘পিএম নরেন্দ্র মোদি’কে। বিবেক ওবেরয় অভিনীত ছবিটি দেশের বক্স অফিসে সর্বসাকুল্যে ২৪ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। আবার নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির মতো পোড়খাওয়া অভিনেতাও বাল থ্যাকারের বায়োপিক ‘ঠাকরে’কে (২৫ জানুয়ারি) মাঝ সমুদ্র থেকে টেনে তুলতে পারেননি। ছবি মাত্র ১৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে।
পুরনো চাল ভাতে বাড়ে
সাহিত্য হোক বা সিনেমা, থ্রিলারের কোনও মার নেই। আর এই কথা বলিউডে আরও একবার প্রমাণ করল সুজয় ঘোষের ‘বদলা’ (৮ মার্চ)। স্বল্প বাজেটের ছবি তাও আবার রিমেক। কিন্তু বুদ্ধিদীপ্ত চিত্রনাট্যে অমিতাভ বচ্চন ও তাপসী পান্নুর অসাধারণ অভিনয় ছবিকে ১৩৮ কোটি টাকার ব্যবসা এনে দিয়েছে। একইভাবে বিবেক অগ্নিহোত্রীর ‘তাসখন্দ ফাইলস’ (১২ এপ্রিল) কিন্তু সমালোচকদের একাংশের পছন্দ হয়েছে। ছবির আয় যদিও মাত্র ১৭ কোটি টাকা। আবার ‘বদলা’ বক্সঅফিস কাঁপালেও দর্শক কিন্তু ‘রোমিও আকবর ওয়াল্টার’ (৫ এপ্রিল) বা ‘ইন্ডিয়াজ মোস্ট ওয়ান্টেড’ (২৪ মে) এর মতো থ্রিলার দেখেননি। জন আব্রাহামের ছবিটির আয় মাত্র ৫৪ কোটি এবং অর্জুন কাপুরের ছবির আয় ১৫ কোটি টাকা!
ভাইজান একাই একশো
সলমন খান মানেই কোনওরকম প্রশ্ন করা চলে না। ছবির বিষয় মধ্যমেধারই হোক বা চিত্রনাট্যের গলদ— ব্যবসায় ভাইজানের সম্বল তাঁর অগণিত ফ্যান। তাই ক্যাটরিনাকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর ছবি ‘ভারত’ (৫ জুন) এই বছরের সেরা প্রথম দিনের আয়ের রেকর্ড করেছে। প্রথম দিনই ঘরে তুলেছে ৪২ কোটি টাকা! সলমনের আগের ছবি ‘রেস ৩’ (২৮ কোটি) বা ‘টিউবলাইট’ (২১ কোটি) এর তুলনায় যা অনেক বেশি। তবে সেই তুলনায় যত দিন এগিয়েছে ব্যবসার অনুপাত কিন্তু কমেছে। সলমন অবশ্য এসব নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নন। সব মিলিয়ে ছবির আয় ৩১৫ কোটি টাকা।
কবীর সিং জ্বর
এখনও পর্যন্ত বছরের সেরা ব্লকবাস্টার ‘কবীর সিং’। শাহিদ কাপুরের সেরা পারফরম্যান্স ও সেরা কালেকশন। মাল্টিপ্লেক্সের পাশাপাশি সিঙ্গল স্ক্রিনেও জমিয়ে ব্যবসা করেছে ‘অর্জুন রেড্ডি’র রিমেক। মূলত এই প্রজন্মের দর্শকদের আশীর্বাদ সম্বল করেই পিছনে ফেলে দিয়েছে তাবড় তাবড় ছবিকে। এখনও পর্যন্ত সেই অর্থের পরিমাণ ৩৫৫ কোটি টাকা!
কনটেন্টই সহায়
গত ছ মাসে বক্সঅফিসে বিষয়ভিত্তিক ছবিও যে রমরমিয়ে চলছে তার প্রমাণ ‘আর্টিকেল ফিফটিন’ (২৮ জুন) ও ‘সুপার থার্টি’ (১২ জুলাই)। একদিকে সহজ বাজি আয়ুষ্মান খুারানা তো অন্যদিকে ইমেজ ভাঙার চেষ্টায় হৃতিক রোশন। সমানাধিকার ও অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে বার্তা এবং আয়ুষ্মানের তীক্ষ্ণ অভিনয়কে সম্বল করে অনুভব সিনহার ছবিটি এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮৫ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। আনন্দ কুমারের বায়োপিক ‘সুপার থার্টি’কে বলা হচ্ছিল হৃতিকের কামব্যাক। বছরের অন্যতম সেরা ছবির দাবিদার এই ছবি এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১০০ কোটির ব্যবসা করেছে।