উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
ছবির গল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিচালকদ্বয় নন্দিতা রায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানান, ল্যারিনজিয়াল ক্যান্সারকে কেন্দ্র করে এই ছবির গল্প। তবে এই ছবি মানুষের বেঁচে থাকার জয়গানের কথাই বলে। ছবির গল্পে অর্জুন ও পৃথা দু’জনেই বাচিক শিল্পী। অর্জুন রেডিও জকি, পৃথা একটি টেলিভিশন চ্যানেলের নিউজ রিডার। এদের একটি পুত্রসন্তানও আছে। নাম টুকাই। আচমকা অর্জুন এই রোগের শিকার হলে তার ভয়েস বক্স চলে যায়। তাই নিয়ে লড়াই। জীবনের মূল স্রোতে আবার অর্জুন কীভাবে ফিরে আসে তাই নিয়েই কাহিনী বিন্যাস। অর্জুনের জীবনে রোমিলা নামে একজন স্পিচ থেরাপিস্ট আসেন। তিনি অর্জুনকে মোটিভেট করতে সাহায্য করেন। এভাবে কাহিনী এগিয়ে চলে। এরপর কী হয়? তা জানতে ছবি মুক্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানালেন পরিচালকদ্বয়।
এই ছবির হাত ধরে টলিউড ইন্ডাস্ট্রি শিবপ্রসাদ-পাওলির নতুন জুটিকে পেতে চলেছে। অর্জুনের ভূমিকায় শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে দেখা যাবে। পৃথার চরিত্রে অভিনয় করেছেন পাওলি দাম। রোমিলার চরিত্রের রূপদান করেছেন জয়া আহসান। অন্য শিল্পীরা হলেন কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, তনিমা সেন, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিপ্লব দাশগুপ্ত, চিত্রা সেন, ইশিত সাহা, জিমি ট্যাংগরি প্রমুখ।
ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রদের সাজপোশাক সম্পর্কে কসটিউম ডিজাইনারদ্বয় অনুপম, অভিষেক সমস্বরে বলেন, ‘প্রথমেই বলব এ ধরনের গভীর ইস্যুভিত্তিক একটি ছবির সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে পরিচালকদ্বয়ের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। চিত্রনাট্য বিশ্লেষণ করার সময় পরিচালকদ্বয় আমাদেরকে বোঝান যে, চরিত্র অনুযায়ী সাজপোশাক হলেও তা যেন কোনও ব্যক্তিত্বকে ছাপিয়ে না যায়। পোশাক সর্বস্ব ব্যাপার নয়। আমরা দু’জনে মিলে-মিশে আলোচনা করে কাজটা করেছি।’
অনুপমের থেকে শোনা গেল যে, অর্জুন অর্থাৎ শিবপ্রসাদ ছবিতে যেহেতু একজন রেডিও জকি তাই তাঁর সাজপোশাকে কোনও আতিশয্য নেই। খুবই ক্যাজুয়াল জামাকাপড় তাঁকে পরানো হয়েছে যা বাস্তবে আর জে বা রেডিও জকিদের পরিধানে থাকে। ডেনিম জর্গাসের সঙ্গে রাউন্ড নেকলাইনের টি-শার্ট ও চেকস শার্ট লেয়ারিং করে তাঁকে পরানো হয়েছে। সাধারণত স্কার্ফ পুরুষদের খুব একটা ব্যবহার করতে দেখা না গেলেও অর্জুন অর্থাৎ শিবপ্রসাদকে ছবিতে স্কার্ফ ব্যবহার করতে দেখা যাবে। পুরুষদের ফ্যাশনে স্কার্ফ যে স্টাইল স্টেটমেন্ট হতে পারে তা এই ছবি দেখলে বোঝা যাবে বলে জানালেন দুই কসটিউম ডিজাইনার তথা স্টাইলিস্ট। হ্যান্ডলুম উইভ এবং লিনেন কটন ফ্যাব্রিকের এই স্কার্ফ তৈরি করা হয়েছে বলে জানালেন অভিষেক। এই স্কার্ফের কালার প্যালেট গ্রে, হোয়াইট, ইয়ালো, হোয়াইট ব্লু ইত্যাদি। সাবডিউড ও সুদিং কালারের এই স্কার্ফে রয়েছে একটি বোতাম যা দিয়েছে বাড়তি মাত্রা। কখনও স্ট্রাইপ আবার কখনও সলিড কালারের এই স্কার্ফে অর্জুনকে দেখা যাবে। অভিষেকের থেকে আরও জানা গেল যে, বহির্দৃশ্যে ডেনিমের সঙ্গে প্রিন্টেড বুশ শার্টে শিবপ্রসাদকে দেখা যাবে। প্রসঙ্গ টেনে অনুপম বলেন, অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে ট্রাউজার্সের সঙ্গে লিনেন শার্টের ওপর প্যাস্টেল শেডের ব্লেজার পরানো হয়েছে তাঁকে। ঘরের দৃশ্যে জর্গাসের সঙ্গে গ্রে, মেরুন ইত্যাদি সিঙ্গল কালারের টি-শার্টের সঙ্গে পায়ে স্লিপারে তিনি ধরা দেবেন। তবে বহির্দৃশ্যে পোশাকের সঙ্গে পায়ে লোফারস এবং ক্যানভাস কাপড়ের শ্যুতে তাঁকে দেখা যাবে। এছাড়া তাঁর বাঁ হাতে ঘড়ির সঙ্গে বিটসের রিস্টব্যান্ডে তিনি কর্মস্থলে ধরা দেবেন।’ ইতিমধ্যে ছবির ভূতের রাজার লুকের একটি পোস্টার মুক্তি পেয়েছে। এ ব্যাপারে অনুপম জানান, ‘এই লুকটা করতে আমরা দু’জনেই খুব টেনশনে ছিলাম। এই লুক আমরা রিক্রিয়েট করেছি। এটা তো সিনেমার ভগবান লেজেন্ডারি ব্যক্তিত্ব প্রয়াত সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্ট চরিত্র। আর এই লুকটা তৈরি করার সুযোগ পাওয়া গর্বের ব্যাপার। তবে আমরা দু’জনে মিলে কাজটা করলেও এক্ষেত্রে অভিষেকের কৃতিত্ব অনেকটাই বেশি।’ কথার রেশ টেনে অভিষেক বলেন, ‘সত্যি এই লুক করা আমার কাছে ছিল বিরাট চ্যালেঞ্জ। এটি ছবির দৃশ্যের একটি অংশ। এর থেকে বেশি এখন আর বলা যাবে না।’ তবে ছবিতে অর্জুন অর্থাৎ শিবপ্রসাদকে প্রথমে লম্বা চুল ও দাড়িতে দেখা গেলেও অসুখের পর ছোট স্মার্ট হেয়ার স্টাইল এবং শর্ট ফ্রেঞ্চ কাটে দেখা যাবে বলে ডিজাইনারদ্বয়ের থেকে জানা গেল।
এছাড়া ডিজাইনারদ্বয়ের কাছ থেকে পৃথা ওরফে পাওলির সাজপোশাক সম্পর্কে জানা গেল যে, ঘরের দৃশ্যে পালাজোর সঙ্গে লুজ টপ অথবা জিনসের সঙ্গে লঙ শার্টে তাঁকে দেখা যাবে। দেখে মনে হবে খুব চেনা একটি চরিত্র। তবে কর্মস্থলে তাঁকে লিনেন, হ্যান্ডলুম শাড়ির সঙ্গে প্রিন্টেড থ্রি কোয়ার্টার স্লিভ ব্লাউজে দেখা যাবে। এছাড়া ‘সবাই চুপ’ রোম্যান্টিক গানের দৃশ্যে কর্ডিনেটেড পোশাকে শিবপ্রসাদ, পাওলিকে দেখা যাবে। যেখানে পোশাকের কালার প্যালেট, হোয়াইট, পিংক হোয়াইট, ব্লু হোয়াইট, ইয়ালো হোয়াইট ইত্যাদি। ততটাই রঙের ছটা যা ক্যানভাসের মতো দেখতে। প্রসঙ্গত, প্রিয়গোপাল বিষয়ীর অন্যতম ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ লাহা জানান, পাওলি হোয়াইট ইয়ালো কম্বিনেশনের যে মসলিন জামদানি শাড়ি পরেছেন সেটি তাঁদের তৈরি। এছাড়াও ছবিতে তাঁকে একটি বিশেষ দৃশ্যে টিস্যু বর্ডারের পিওর রেড কালারের কাঞ্জিভরমে দেখা যাবে, যা তাঁদের সংস্থার। তাঁদের সংস্থার এক্সক্লুসিভ রেঞ্জের লিনেন, হ্যান্ডলুম, ঢাকাই জামদানি শাড়িতে পাওলিকে ছবিতে দেখা যাবে। তবে পাওলিকে খুব সিম্পল লুকে দেখা যাবে। বেশির ভাগ পিওর সিলভার গয়নায় পাওলিকে দেখা যাবে এবং কুন্দনের গয়নায়ও তিনি ধরা দেবেন বলে জানালেন ডিজাইনারদ্বয়। এছাড়াও এই দুই ডিজাইনারের থেকে জানা গেল যে, রোমিলা অর্থাৎ জয়া আহসানকে ভেজিটেবল ডাই, হ্যান্ডলুম উইভ ফ্যাব্রিকের ম্যাক্সি ড্রেস, লঙ ড্রেস, একটু ওয়েস্টার্নজইড সিলোয়েটম পরানো হয়েছে। তাঁর পোশাকের কালার প্যালেট ইয়ালো, পিংক, হোয়াইট, প্যাস্টেল অরেঞ্জ ইত্যাদি। এছাড়া তাঁর হাতে ডায়মন্ড সলিটেয়ার আংটি, গুচি ব্র্যান্ডের ঘড়ি এবং লুই বুটিন ব্র্যান্ডের ব্যাগ শোভা পাবে।
এছাড়া কনীনিকাকে একটু ফাঙ্কি জুয়েলারি সঙ্গে লঙ ড্রেস, প্যানেল ড্রেস এবং লেয়ারিং পোশাকে দেখা যাবে। প্রসঙ্গত বলা প্রয়োজন শাড়ি ছাড়া বেশির ভাগ জামাকাপড় অনুপম, অভিষেক তৈরি করেছেন। এছাড়া চিত্রা সেনকে সরু পাড়ের সাদা জমির শাড়িতে দেখা যাবে।
কাহিনী ও চিত্রনাট্য নন্দিতা রায়, সংলাপ শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, ক্যামেরায় শুভঙ্কর ভড়, সম্পাদনা মলয় লাহা, সুরকার অনুপম, অনিন্দ্য, প্রসেন। গান গেয়েছেন অনুপম, অনিন্দ্য, সাহানা বাজপেয়ী, প্রস্মিতা পাল, তুষার দেবনাথ, প্রসেন। প্রযোজনা উইন্ডোজ।