উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের পুরুষদের সাজ-পোশাক নিয়ে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনেক গল্প শুনিয়েছেন। শিল্পী মানুষের বর্ণনার গুণে সে সব গল্প ছবির মতো ফুটে ওঠে পাঠকের চোখের সামনে। সে বিবরণ যেমন কৌতূহল জাগায়, তেমনই সুখপাঠ্য। সেই সঙ্গে সে বিবরণের একটা ঐতিহাসিক মূল্যও আছে। কারণ জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবার ছাড়াও, সেকালের অভিজাত বাঙালি পরিবারের সাজে ছিল সম্ভ্রান্ত মুসলমানি সাজ-পোশাকের প্রভাব, আবার সে প্রভাব কাটিয়ে দেখা গেল ইংরেজি কেতায় অভ্যস্ত ইঙ্গবঙ্গ সমাজের বিলিতি সাজ। সে বিদেশি সাজের মোহ কাটিয়ে আবার আপাদমস্তক স্বদেশি সাজ পোশাকে সেজে ওঠা বাঙালি পুরুষের সাজ পরিবর্তনের মনোরম ক্রমিক বর্ণনা পাওয়া যায় অবনীন্দ্রনাথের স্মৃতিচারণে। স্মৃতিচারণ করেছেন পরিবারের আরও অনেকেই। অফুরন্ত সব গল্প।
অবনীন্দ্রনাথ শুনিয়েছেন, তাঁদের পূর্ব পুরুষদের কথা, রবীন্দ্রনাথের কথা, আবার বিশেষ কোনও সাজের প্রসঙ্গে নিজের কথাও বলেছেন। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন নিজের ছোটবেলার সাজের কথা। তাঁর কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে বলেছেন অনেকেই। পরিবারের মেয়ে বা বউরাও লিখেছেন পুরুষদের সাজ-সজ্জার কথা।
দেবেন্দ্রনাথের এক বিশেষ উৎসবের সাজের গল্প বলে অবনীন্দ্রনাথ পাঠকদের আবিষ্ট করে রাখেন। রীতিমতো কৌতূহল জাগানো ঘটনা। দ্বারকানাথ ঠাকুরের মৃত্যুর পর বিরাট পৈতৃক ঋণভার মাথায় নিয়ে দেবেন্দ্রনাথ ও তাঁর ভাইয়েরা ব্যয় সঙ্কোচের কৃচ্ছ্রসাধন করে চলেছেন। সেই সময় শোভাবাজার রাজবাড়ির মস্ত জলসায় দেবেন্দ্রনাথের আমন্ত্রণ এল। ব্যয় সংক্ষেপের সেই সংকট সময়ে দেবেন্দ্রনাথ কী সাজ-পোশাকে জলসায় আসেন— তা নিয়ে ধনী বাঙালি সমাজে কৌতূহলের সীমা নেই। দেবেন্দ্রনাথও জানতেন সে কথা। তখন তাঁর নির্দেশমতো প্রিয় জহুরি ‘একজোড়া মখমলের জুতো, ছোট ছোট দানা দানা মুক্তো বসিয়ে তৈরি করে এনে দিল।’ জলসার দিন দেবেন্দ্রনাথ পরলেন— ‘সাদা আচকান জোড়া...মাথার পাগড়িটি অবধি সাদা। কোথাও জরি কিংখাবের নামগন্ধ নেই...পায়ে কেবল সেই মুক্তো বসানো মখমলের জুতো জোড়াটি।’ এ সাজ দেখে রাজবাড়ির কর্তা, সভার ছোটদের দেখিয়ে বলেছিলেন—‘দেখ, একেই বলে বড়লোক। আমরা যা গলার মাথায় ঝুলিয়েছি, ইনি তা পায়ে রেখেছেন!’
অবনীন্দ্রনাথ নিজে বৃদ্ধ দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে দেখে ছিলেন তাঁর শৈশবে বাড়ির কোনও ছেলের বিয়েতে বরকে যাত্রা করিয়ে দেবেন্দ্রনাথ এগিয়ে দিয়েছিলেন সদর ফটক অবধি। ‘গায়ে লাল জরির জামেওয়ার, পরনে গরদের ধুতি।’ দেবেন্দ্রনাথ সাদা রঙের সাজ পছন্দ করতেন। বড়ছেলে দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বর্ণনা দিয়ে কবিতায় লিখেছিলেন—‘শুভ্রমূর্তি কান্তিমান/শুভ্রবেশ পরিধান/উন্নত শরীর সুগঠন।’ শিল্পী অবনীন্দ্রনাথ কথা শিল্পীও বটে। তিনি বলেছেন পূর্বপুরুষ ছোট ঠাকুরদা নগেন্দ্রনাথ ঠাকুরে কথা। দ্বারকানাথ ঠাকুরের বিলেতযাত্রার সঙ্গী ছিলেন নগেন্দ্রনাথ, ছিলেন বিলিতি শিক্ষা ও কেতায় দুরস্ত। তিনি বিলেত থেকে ফেরার সময় কৌতূহলী বন্ধুরা জাহাজঘাটায় গেলেন, কী সাজে নগেন্দ্রনাথ জাহাজ থেকে নামেন, দেখবার জন্য। অবনীন্দ্রনাথ জানিয়েছেন ‘ধুতি পাঞ্জাবি চাদর গায়ে, পায়ে জরির লপেটা। ছোট দাদামশায় জাহাজ থেকে নামলেন। সবাই তো অবাক।’
অবনীন্দ্রনাথ আরও শুনিয়েছেন জ্ঞাতি-আত্মীয় পরিবারের কর্তাদের সাজ-সজ্জার শৌখিনতার গল্প। ‘উপেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন মহাশৌখিন। তাঁর শখ ছিল কাপড়চোপড় সাজগোজে। ...ছয় ঋতুতে ছয় রঙের সাজ ছিল তাঁর। আমরা ছোটবেলায়...দেখেছি—আশি বছরের বুড়ো তখন তিনি, বসন্তকালে হলদে চাপকান জরির টুপি মাথায়...বের হতেন বিকেলে হওয়া খেতে।’ এ তথ্য জানিয়ে অবনীন্দ্রনাথ কৌতুক করে জানিয়েছেন অন্তরঙ্গ একটি কথা। ‘তাঁর গিন্নি সাজ ‘অ্যাপ্রুভ’ করে দিলে তবে তিনি বেড়াতে বের হতেন। তিনি ‘অ্যাপ্রুভ’ না করলে সাজ বদল হয়ে যেত।’
ইঙ্গবঙ্গ সমাজের মতো পুরোদস্তুর বিলিতি সাজে জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবার বিশেষ অভ্যস্ত ছিলেন না, দেখতে বা পরতে। যদিও প্রথম ভারতীয় সিভিলিয়ান সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্মসূত্রে যে সাজ পরতেন, বিলেত গেলেও তাঁকে সাহেবি পোশাক পরতে হতো। প্রথমবার বিলেতযাত্রায় রবীন্দ্রনাথকেও সাজতে হয়েছিল বিদেশি সাজে। তবে সাধারণভাবে পরিবারে বিলিতি সাজের চল ছিল না। দু’একটি ব্যতিক্রম বেশ কৌতুকজনক হয়ে উঠত সে কথাও জানতে পারা যায় অবনীন্দ্রনাথের কথায়। দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক ছেলে অরুণেন্দ্রনাথ আসামে চা বাগানে ম্যানেজার ছিলেন। ‘অরুদা...একেবারে পুরোদস্তুর সাহেব, কোট, প্যান্ট, টাই...। এমন সাজে তিনি একদিন বেরচ্ছেন—‘উপরের বারান্দা থেকে বড়ো জ্যাঠামশায়ের (দ্বিজেন্দ্রনাথ) চোখে পড়ে গেলেন। অমনি শুরু হল হাঁকডাক। এই অভব্য বেশে তুমি কোথায় বেরচ্ছ?’ স্যুটের সাজ ৫নং বাড়িতে কেমন ছিল, তা জানা যায় গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেয়ে পূর্ণিমার লেখায়, ‘বাবা যখন ‘স্যুট’ পরতেন তখন গলাবন্ধ কোটপ্যান্ট ও পাগড়ি ছিল—তাই পরতেন।...তাঁকে ‘হ্যাট’ পরতে কখনও দেখিনি।’ পূর্ণিমা আরও লিখেছেন সাজ পোশাক নিয়ে গগনেন্দ্রনাথের অভিনব নতুন নতুন পরিকল্পনার কথা।—‘লামাদের কাপড় দেখে নতুন রকমের গায়ের জোব্বা তৈরি করালেন। সারা পরিবারের মধ্যে তার চলন হয়ে গেল।’
দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরেরও ছিল সর্বদা নিত্যনতুন উদ্ভাবনী চিন্তা। যার প্রভাব পড়েছিল তাঁর সাজসজ্জার পরিকল্পনায়। তাঁর পোশাক হয়ে উঠেছিল যেমন অভিনব তেমনই বিচিত্র। তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা এ বিষয়ে কিছু আলোচনা করেছেন। ‘তাঁর (দ্বিজেন্দ্রনাথ) তো সব বিষয়েই মৌলিকত্ব। আচকানের বোতাম লাগানোর ‘হ্যাঙ্গাম’ এড়াবার জন্য ডবল জোব্বা পরতেন। একটার পিঠ সামনে। একটার পিঠ পিছনে। আর পায়ে বাত ছিল বলে একরকমের ফ্লানেলের মোজা উদ্ভাবন করেছিলেন যেটা একাধারে মোজা ও জুতোর কাজ করত, হাঁটু পর্যন্ত ফিতে দিয়ে বাঁধা থাকত, কতকটা ভুটিয়াদের বনাতের জুতোর মতো।’
রবীন্দ্রনাথ জানিয়েছেন তাঁর নতুন দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা। এ তথ্য যেমনি বিচিত্র তেমনি কৌতূহলোদ্দীপক। ‘ভারতবর্ষের একটা সর্বজনীন পরিচ্ছদ কী হইতে পারে এ বিষয়ে জ্যোতিদাদা তাহার নানা প্রকার নমুনা উপস্থিত করিতে আরম্ভ করেন। ধুতিটা কর্মক্ষেত্রের উপযোগী নহে, অথচ পায়জামা বিজাতীয়, এইজন্য তিনি এমন একটা আপোষ করিবার চেষ্টা করিলেন, যেটাতে ধুতিও ক্ষুণ্ণ হইল, পায়জামাও প্রসন্ন হইল না।’ সেই সাজের একটি বিবরণও দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। ‘তিনি (জ্যোতিরিন্দ্রনাথ) পায়জামার উপর একখণ্ড কাপড় পাট করিয়া একটা স্বতন্ত্র কৃত্রিম মালকোঁচা জুড়িয়া দিলেন। সোলার টুপির সঙ্গে পাগড়ির মিশাল করিয়া এমন একটা পদার্থ তৈরি হইল যেটাকে অত্যন্ত উৎসাহী লোকেও শিরোভূষণ বলিয়া গণ্য করিতে পারে না।... জ্যোতিদাদা এই কাপড় পরিয়া মধ্যাহ্নের প্রখর আলোকে গাড়িতে গিয়া উঠিতেন আত্মীয় এবং বান্ধব, দ্বারী এবং সারথি, সকলেই অবাক হইয়া তাকাইত। তিনি ভ্রুক্ষেপ মাত্র করিতেন না।’—এই বিস্তৃত বিবরণ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ মন্তব্য করেছেন তা ভাববার মতো। তিনি লিখেছেন ‘দেশের মঙ্গলের জন্য অকাতরে প্রাণ দিতে পারে, এমন বীরপুরুষ অনেক থাকিতে পারে, কিন্তু দেশের মঙ্গলের জন্য সর্বজনীন পোশাক পরিয়া গাড়ি করিয়া কলিকাতার রাস্তা দিয়া যাইতে পারে—এমন লোক নিশ্চয় বিরল।’
ঠাকুর পরিবারে পুরুষদের বিয়ের সাজ কেমন ছিল, তারও ছবি ফুটেছে—হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখায়। পূর্ণিমা দেবীর স্মৃতিচারণে নিজের বিয়ের সাজের বিবরণ দিয়েছেন হেমেন্দ্রনাথ নিজেই। ‘বেনারসি জোড়, গলায় মুক্তোর মালা, হিরের কণ্ঠা, হাতে বালা, আঙুলে জড়োয়া আংটি’ পরে বিয়ে করতে গিয়েছিলেন তিনি। গগনেন্দ্রনাথের বড় ছেলে গেহেন্দ্রের বিয়ের সাজ ছিল— ‘বেনারসি জোড়, পাঞ্জাবি পরা, কপালে চন্দন, গলায় ফুলের মালা, মাথায় টোপর, গলায় হিরের কণ্ঠা, হাতে হিরের আংটি।’ এই হিরের কণ্ঠাটি একটি পারিবারিক গয়না। দ্বারকানাথ ঠাকুরের আমল থেকে বাড়ির ছেলেদের বিয়ের সাজের অঙ্গ।
অবনীন্দ্রনাথ পরিবারের পুরুষদের সাজ-পোশাক নিয়ে অনেক গল্প করেছেন, নিজের সম্বন্ধেও বলেছেন দু’চার কথা। ছোটবেলায় পোশাকি সাজ ছিল— ‘হালকা নীল মখমলের কোট প্যান্ট।’ পুজোর সময় পেতেন ‘নতুন কাপড়, সিল্কের রুমাল...আর বরাদ্দ ছিল ছোট ছোট এক-এক শিশি আতর।’ চীনেম্যান আসত জুতোর মাপ নিতে। দরাজ আসত, আর আসত বড় বাজারের পাঞ্জাবি শালওয়ালা— ‘নানারকম জরির ফুল দেওয়া ছিট আর কিংখাবের বস্তা ফুলে।’ আরও যখন বয়স বাড়ল, তখন ‘শিমলের কোঁচানো ধুতি পরে বেড়াতে যেতে হল, আতর ল্যাভেন্ডার গোলাপও মাখতে হল...ড্রেস স্যুট-বুট এঁটে থিয়েটারে...ডিনারে যেতে হল, এক কথায় বাড়ির ছোট বাবু সাজতে হল।’
ভালো অভিনেতা ছিলেন অবনীন্দ্রনাথ। বাড়িতেই অভিনীত হতো জ্যোতিরিন্দ্রনাথ কি রবীন্দ্রনাথের নাটক। একবার জ্যোতিরিন্দ্রনাথের ‘অলীক বাবু’ নাটকে নায়িকার পাণিপ্রার্থী বখাটে বুড়ো ব্রজদুর্লভের চরিত্রে কেমন সাজ করেছিলেন তাই শুনিয়েছেন। ‘গায়ে দিয়েছিলাম নীল গরদের জামা, আমার ফুলশয্যার সিল্কের জামা ছিল সেটা...সোনার গার্ড চেন বুকে, ধুতির কোঁচাটি বুকপকেটে গোঁজা,...হাতে শিঙের ছড়ি ঘোরাতে ঘোরাতে স্টেজে ঢুকলুম।’
রবীন্দ্রনাথের কথা লিখেছেন অনেকেই, আত্মীয়-অনাত্মীয়-গুণমুগ্ধরা সশ্রদ্ধ স্মৃতিচারণ করেছেন। নিজের ছোট বেলার সাজের কথা রবীন্দ্রনাথ নিজেই লিখেছেন। ‘আমাদের শিশুকালে ভোগবিলাসের আয়োজন ছিল না বলিলেই হয়।’—এর একটি কারণ অবশ্য দ্বারকানাথ ঠাকুরের বিশাল ঋণভার থেকে মুক্ত হতে গিয়ে ঠাকুর পরিবারের অনেক সম্পত্তিই তখন হাতছাড়া। তবে অর্থকৌলীন্যের গৌরব না থাকলেও আভিজাত্যের গৌরব বজায় ছিল পুরো মাত্রায়। রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন— ‘বয়স দশের কোটা পার হইবার পূর্বে কোনওদিন কোনও কারণেই মোজা পরি নাই। শীতের দিনে একটা সাদা জামার উপরে আর একটা সাদা জামাই যথেষ্ট ছিল।’ এ তথ্য জানিয়ে রবীন্দ্রনাথ কৌতুক করে বলেছেন আমাদের চটি-জুতা একজোড়া থাকিত। কিন্তু পা দুটা যেখানে থাকিত সেখানে নয়।’ তবে কৈশোরের প্রথমেই দেবেন্দ্রনাথের সঙ্গে হিমালয় যাত্রার সময়, পরিবারের উপযুক্ত সাজ তৈরি হয়েছিল তাঁর জন্য। ‘আমার বয়সে এই প্রথম আমার জন্য পোশাক তৈরি হইয়াছে। কী রঙের কী রূপ কাপড় হইবে—পিতা স্বয়ং আদেশ করিয়া দিয়াছেন। মাথার জন্য একটা জরির কাজ করা গোল মখমলের টুপি হইয়াছিল।’
বিয়ের সময় ৫নং বাড়ির অন্দরমহলে আইবুড়ো ভাতের নিমন্ত্রণ খেতে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সে সাজের মনোরম বিবরণ দিয়েছিন অবনীন্দ্রনাথ— ‘রবিকাকা খেতে বসেছেন।...সামনে আইবুড়ো ভাত সাজানো,...রবিকা দৌড়দার শাল গায়ে, লাল কী সবুজ রঙের মনে নেই, তবে খুব জমকালো রঙের...দেখাচ্ছে যেন দিল্লির বাদশা!’ বিয়ের দিনেও এই পারিবারিক দৌড়দার শালটি গায়ে ছিল তাঁর।
পরিণত বয়সের সাজের দুটি ছবি এঁকেছেন রানীচন্দ আর রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে সীতা দেবী। রানীচন্দ দেখেছেন শান্তিনিকেতনে নববর্ষ বা অন্য উৎসবে রবীন্দ্রনাথ উপাসনা করতেন— ‘গরদের ধুতি পাঞ্জাবি পরে, গলায় চাদর ঝুলিয়ে। এ সাজ ছাড়া মন্দিরে (শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহ) আসেননি তিনি।’
পরিণত বয়সের আর একটি সাজের কথা লিখেছেন সীতা— ‘সাধারণত ধুতি পাঞ্জাবিই পরিয়াছেন, পাঞ্জাবির গলার বোতাম দু-তিনটি খোলা। মাথায় একটি কালো মখমলের টুপি।’ এরপর সীতা মন্তব্য করেছেন— ‘ধুতির সঙ্গে টুপি তখনকার দিনে কাহাকেও পরিতে দেখি নাই, কিন্তু তাঁহাকে ইহাতেও আশ্চর্য সুন্দর দেখাইতেছিল।’