পরিবারের সদস্যদের পারস্পরিক মতান্তর, কলহে মনে হতাশা। কাজকর্ম ভালো হবে। আয় বাড়বে। ... বিশদ
বর্তমানকালে পৃথিবীর প্রত্যেক দেশেই পুস্তক, সংবাদপত্র ও প্রচার প্রভৃতিতে বিভিন্ন ভাষায় দেশের ঐক্য, অখণ্ডতা, সংহতি, অবিচ্ছিন্নতা, অসাম্প্রদায়িকতা ও অবৈষম্য প্রভৃতি শব্দের বহুল প্রয়োগ এবং তৎসহ এই পদসমূহের বাচ্যার্থের মহিমা দেশের কল্যাণ কামনায় বর্ণিত হইতে দেখা যায়। পুণ্যভূমি ভারতবর্ষের সুপ্রাচীন ধর্ম সংস্কৃতি ও সভ্যতার মধ্যে এই শব্দসমূহ ও সমার্থক অন্যান্য শব্দের প্রয়োগসহ প্রতিপাদ্য বিষয়ের গৌরবের ব্যাখ্যান বিশ্বসাহিত্যে অতুলনীয়। সভ্যতার আদিম যুগে ভারতের আর্য ঋষিগণ জগতের সকল মানবকেই অমৃতের পুত্র সম্বোধনে এবং একপ্রাণ, একমন ও একমন্ত্র হইয়া সংহত ও ঐক্যবদ্ধ হইতে আহ্বান জানান। ভারতমাতার পরাধীনতা-বন্ধন মুক্তির সংগ্রামের সময় হইতে দেশপ্রেমিক নেতৃবর্গ দেশের ঐক্য, সংহতি ও অখণ্ডতার জন্য যথাসাধ্য সচেষ্ট থাকিয়াও কুটকৌশলী বৈদেশিকগণের ষড়যন্ত্রে সম্পূর্ণ অখণ্ডতা রক্ষা করিতে পারেন নাই, ফলে ভারতের কিছু অংশ বিচ্ছিন্ন হইয়া পাকিস্তান হইল। তাহার পর হইতে বর্তমান সময় পর্যন্ত ভারতের অভ্যুদয়, সমৃদ্ধি ও শক্তিমত্তায় অসহিষ্ণু ও ঈর্ষান্বিত কিছু বৈদেশিক ভারতকে খণ্ডিত, বিচ্ছিন্ন ও শক্তিহীন করিবার উদ্দেশ্যে বিবিধ কূটকৌশল সহ সক্রিয় হইয়া আসিতেছে এবং তাহারই মারাত্মক কুফল আসাম ও পাঞ্জাব প্রদেশের ঘটনাবলীতে বিচক্ষণ ব্যক্তিমাত্রেই বুঝিতেছেন। প্রত্যেকটি দেশের নায়কগণ নিজ নিজ দেশের মঙ্গলের জন্য ঐক্য ও অখণ্ডতা রক্ষায় সচেষ্ট হইয়াছেন বা হইবেন ইহা স্বাভাবিক। কিন্তু অন্যান্য দেশকে খণ্ড খণ্ড ও বিপর্যস্ত করিয়া কেবল নিজের দেশকে সমৃদ্ধ ও শক্তিমান করার অভিপ্রায় বহন করেন এমন লোকেরও অভাব নাই। নিজের দেশের সুখ, সমৃদ্ধি, ঐক্য, অখণ্ডতা ও সংহতির সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশই সুখী, সমৃদ্ধ, সংহত ও অখণ্ড হইয়া পরস্পর সম্প্রীতি, শান্তি ও সহাবস্থানের দ্বারা শোভমান হউক, এই উন্নত চিন্তার ধারক ও বাহক দেশসমূহের মধ্যে ভারতবর্ষের স্থান সুপ্রাচীনকাল হইতে অদ্যাবধি অগ্রগণ্যই আছে ও থাকিবে। প্রাচীন যুগের ঋষি মুনি হইতে বর্তমান কালের যুগাচার্য, দেশনায়ক ও রাজনীতিনিপুণ স্বামী বিবেকানন্দ, মহাত্মা গান্ধী, ঋষি অরবিন্দ, বল্লভভাই প্যাটেল, নেতাজী সুভাষচন্দ্র, জহরলাল নেহেরু ও ইন্দিরা গান্ধী প্রমুখ সকলেই দেশান্তরের সর্ববিধ কল্যাণ, ঐক্য ও অখণ্ডতাসহ নিজ জন্মভূমি ভারতবর্ষের সংহতি, ঐক্য, সমন্বয় ও অখণ্ডতা রক্ষা করিতে যথাসাধ্য সাধনা করিয়া গিয়াছেন। বিশেষতঃ বুদ্ধ, চৈতন্য, বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ও নিজের পিতার নিকট হইতে নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক শিক্ষার উৎকর্ষ লাভে দীপ্তিময়ী হইয়া যে মহীয়সী নারীশিরোমণি ভারতলক্ষ্মী নিজ দেশ ভারতের বিচ্ছিন্নতা, সাম্প্রদায়িকতা, হিংসা, বৈষম্য ও অশান্তি নিবারণ এবং ঐক্য, অখণ্ডতা ও সংহতি রক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য দেশের অশান্তি, হিংসা ও বিদ্বেষ প্রশমন সহ স্বাবলম্বন গোষ্ঠীনিরপেক্ষতা ও সমৃদ্ধির জন্য প্রাণপাত পরিশ্রম করিয়া ভারতনেত্রী ও বিশ্বনেত্রীর পদে বিরাজমানা ছিলেন।