সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
ষট্চক্র, শিবসংহিতা এবং অপর যোগশাস্ত্রে প্রথমচক্রে(মূলাধার) পদ্মের ৪টি কর্ণিকা নির্দিষ্ট আছে, এবং কুণ্ডলিনী মূলাধা-পদ্ম হইতে উত্থিত হন, বর্ণিত আছে। কিন্তু পূজনীয় স্বামীজির রাজযোগে কুণ্ডলিনীর যে ছবি আছে তাহা দৃষ্টে বোধ হয় কুণ্ডলিনী স্বাধিষ্ঠান-পদ্ম (৬টি কর্ণিকাযুক্ত) হইতে উত্থিত হইতেছেন। এই বিভিন্নতার কারণ বুঝিতে পারিতেছি না।
কুণ্ডলিনী আজ্ঞাচক্রে উঠিবার পূর্ব লক্ষণ কি? অর্থাৎ উক্ত স্থানে উঠিবার পূর্বে কিরূপ অনুভূতিসকল হয়?
“ভ্রূমধ্যস্থলে মন উঠিলেই পরমাত্মার দর্শন হয় ও জীবের সমাধি হয়। তখন পরমাত্মার ও জীবাত্মার মধ্যে একটি স্বচ্ছ, পাতলা পর্দামাত্র আড়াল থাকে।” জীবাত্মার অবস্থান কোন্ স্থানে? জীবাত্মাই ত পরমাত্মা। যখন কুণ্ডলিনী মস্তিষ্কে উপনীত হন তখন জীবাত্মাই ত পরমাত্মার স্বরূপ ধারণ করেন বা পরমাত্মারূপে প্রকাশ পান? আর ভ্রূমধ্যে মন উঠিবার পূর্বে ৪র্থ ও ৫ম ভূমিচক্র হইতে যে-সব দেবদেবীর দর্শন হয় তাহাকে কি সমাধি বলে না?
যখন কুণ্ডলিনী প্রথম আজ্ঞাচক্রে উপস্থিত হন তখন যে সমাধি হয় তাহা কতদিন পর্য্যন্ত থাকে এবং সে অবস্থায় সমাধি ভাঙ্গান, এবং সমাধিস্থ লোককে কিছু খাওয়াইয়া দিবার আবশ্যকতা হয় কি-না?
আহার করার অন্ততঃ চারি ঘণ্টা পরে প্রাণায়াম করিলে দোষ হইবে না। দিনে ও রাত্রে প্রাণায়ামের ঐ নিয়ম পালন করিবে। প্রাণায়াম-কালে ভাবিবে মন্ত্রটি বায়ুর সহিত মিলিয়া মূলাধার-চক্রে(শিরদাঁড়ার নীচে) কুণ্ডলিনীকে জাগাইয়া মস্তকস্থ জ্যোতির্ময় পরামাত্মার সহিত মিলাইয়া দিতেছে। যেরূপ বলিয়া দিয়াছি সেই সেই কার্যগুলি ক্রমানুসারে প্রথমে করিয়া পরে প্রাণায়াম ও জপ করিবে। ঐভাবে কিছুদিন করিলেই নিজে সমস্ত অনুভব করিতে পারিবে। ভ্রূযুগলের উপরে অবস্থিত দ্বাদশদল শ্বেতবর্ণ পদ্মে শ্রীগুরুর ধ্যান করিবে। সেই সময় গুরুর ধ্যান পাঠ করিতে হয়। ...যাঁহার নিকট দীক্ষা লওয়া হয় শ্রীভগবান তাঁহার ন্যায় জ্যোতির্ময় মূর্তি ধারণ করিয়া ঐ দ্বাদশদল পদ্মে গুরুরূপে অবস্থান করেন। জপ-ধ্যান, পূজাদি করিতে বসিয়া প্রথমেই তাঁহার ধ্যান পাঠ করিয়া তাঁহাকে চিন্তা করিতে, ও ‘অখণ্ডমণ্ডলাকারং’ ইত্যাদি বলিয়া প্রণাম করিতে হয়। এবিষয়ে যেরূপ বলিয়া আসিয়াছি সেইগুলি পরপর করিবে।...
সাম্নাসাম্নি অর্থাৎ তুমি যদি পূর্ব মুখে বসিয়া থাক ত তাঁহারা (ইষ্ট বা গুরু) পশ্চিম মুখে বসিয়া আছেন, এইরূপ ভাবিতে হয়।...
সহস্রদল পদ্ম নানাবর্ণে রঞ্জিত; একপ্রকার রং নহে। ...সকল পদ্মই মেরুদণ্ডের ভিতর আছে জানিবে। সমস্ত সাধনাই যোগের ভিতর দিয়া। এবিষয়ে পুস্তক দেখিয়া মনে সংশয় আনিও না। পরে কি করিতে হয় নিজেই বুঝিতে পারিবে।
মনে মনে জপ করাই শ্রেষ্ঠ অর্থাৎ জিহ্বা, ঠোঁট কিছুই না নাড়িয়া।
জপের সময় মূর্তি চিন্তা করিতে করিতে জপ করিবে।...
সমস্ত মনপ্রাণ দিয়া সাধন-ভজনে লাগিয়া যাও। উহাতেই আমার আনন্দ। কিছুদিন কি?—আজীবন লাগিয়া থাকিতে হয়। শ্রীশ্রীঠাকুরের পদে তোমাদের ভক্তি ও বিশ্বাস হউক—তজ্জন্য প্রার্থনা করি। জপ-ধ্যান সম্বন্ধে যতটা সহ্য হয় সেইরূপ করিবে ; সাধ্যাতিরিক্ত কিছু করিও না। শরীর যাহাতে সুস্থ থাকে, এ বিষয়ে দৃষ্টি রাখিবে বৈকি। এত ঘণ্টা পাঠ ও এত ঘণ্টা জপধ্যান করিতে হইবে—এমন কোনও নিয়ম নাই। তবে ক্রমশঃ জপধ্যানের পরিমাণ বাড়াইতে চেষ্টা করিও। স্মরণ-মনন সর্বদা রাখিতে চেষ্টা করিবে।