সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
জীবনের গোড়ার দিকে শ্রীম-র মনে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই সাধুসঙ্গের ইচ্ছে হতো। বলা যায়, এটাই ছিল তাঁর নেশা। চরিত্রের এই স্বাভাবিক প্রবণতাই পরবর্তীকালে তাঁকে ঠাকুরের কাছে টেনে আনে। প্রথম দিকের দেখাসাক্ষাৎ যথা সময়ে অন্তরঙ্গ শিষ্যত্বে পরিণত হয়। শ্রীরামকৃষ্ণ এবং শ্রীম-র ঐতিহাসিক সাক্ষাৎকার নিয়তির বিধান। তাঁদের ঘনিষ্ঠতা বহুবাঞ্ছিত ও প্রেরণাদায়ক হওয়া সত্ত্বেও শ্রীম-র মনের প্রাথমিক অবসাদ কাটিয়ে দিয়ে তাঁকে শান্তি দিতে পারেননি শ্রীরামকৃষ্ণ। জীবনটাকে শেষ করে দেওয়ার চিন্তা তখনও তাঁর মাথায় ঘুরছিল। তাঁর মনের খবর পেয়ে বিষাদের লেশটুকুও মুছে দিলেন ঠাকুর তাঁর দিব্য আশ্বাস দিয়ে। তাঁর কথা শান্ত প্রলেপের মতো হৃদয়জ্বালা জুড়িয়ে দিল, তাঁর মধ্যে জেগে উঠল নতুন এক জীবন-জোয়ার। ঠাকুরের স্নেহমাখা যে কটি কথা তাঁর নতুন দৃষ্টি খুলে আশার আলো দেখিয়েছিল, সেগুলি লক্ষবার আবৃত্তি করার অপেক্ষা রাখে, ‘ঈশ্বর না করুন, কেন এই জীবন ছেড়ে যাবে? গুরুকে পেয়ে নিজেকে ধন্য ভাবছ না তুমি? যা জল্পনা বা স্বপ্নেরও অতীত, গুরুর কৃপায় তা সহজেই মেলে।’ শেষ বয়সে আবেগপূর্ণ কন্ঠে শ্রীম বলতেন, ‘দেখো, কোথায় জীবনটাকে শেষ করে দেবার ইচ্ছে আর কোথায় ভগবানকে খুঁজে পাওয়া! তাই তো বলি, দুঃখকষ্টই মানুষের বন্ধু। ঈশ্বর পরম মঙ্গলময়।’ এই সংসার ‘ধোঁকার টাটি’, কঠিন ঠাঁই প্রত্যেকের কাছে। একমাত্র সিদ্ধ পুরুষরাই আমাদের শান্তিসদনের পথ দেখাতে পারেন। ঠিকই বলেছিলেন শ্রীম, ‘গুরু না থাকলে, আত্মহত্যার যুক্তিটা চমৎকার।’
অবতাররা যা বলেন তা ঈশ্বরীয় ক্ষমতাই প্রকাশ। তাঁদের অকপট সারল্য এবং অন্তঃশুদ্ধতায় মানুষ মুগ্ধ হয়। প্রত্যেকের উত্তর হয় স্পষ্ট, সহজ, সোজাসুজি এবং বোধগম্য। ঠাকুরের সহজাত পবিত্রতা ও গভীর আধ্যাত্মিক জ্ঞান তাঁর কথার ভিতর দিয়ে শ্রীম-র মনে দাগ কেটেছিল।