প্রেম-প্রণয়ে কিছু নতুনত্ব থাকবে যা বিশেষভাবে মনকে নাড়া দেবে। কোনও কিছু অতিরিক্ত আশা না করাই ... বিশদ
সব দেখেও কিছু মানুষ অজ্ঞানের মতো আচরণ করছে। কেউ কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। জরুরি ওষুধ, স্বাস্থ্যরক্ষার সরঞ্জাম প্রভৃতির মজুতদারি করছে। অপছন্দের ব্যক্তি বা তার পরিবার সম্পর্কে ‘করোনা আক্রান্ত’ বলে গুজব ছড়িয়ে দিয়েও কেউ কেউ মানুষকে বিপদে ফেলছে। এক্ষেত্রে হাতিয়ার করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার দুর্বলতাকে। করোনা-জয়ী মানুষকে অস্পৃশ্য রেখে দেওয়ার মতো অমানিবকও হতে পারছে কিছু লোক। মিডিয়া সূত্রে আর একটি ভয়ঙ্কর ট্রেন্ডও ইদানীং আমাদের নজরে এসেছে: অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় কিংবা হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফেরানোর সময় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া বাবদ অস্বাভাবিক বেশি টাকা চার্জ করা হচ্ছে। মাত্র ৬ কিমি দূরে যাওয়ার জন্য ভাড়া গুনতে হয়েছে ৯,২০০ টাকা। ৮ কিমির জন্য আদায় করা হয়েছে ১২,০০০ টাকা। এমনকী, অ্যাম্বুলেন্স চালকের ফরমান মতো মোটা অঙ্কের ভাড়া গুনতে অপারগ রোগীকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার পরিবর্তে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে মাঝপথে। ভাবা যায়!
এমন বর্বরতার কথা সত্যিই ভাবা যায় না। কিন্তু, অসহায় পরিবারগুলি বাস্তবিক কিছুই করতে পারেনি ওইসব বর্বরদের। হয়তো কিছু করতে চায়ওনি তারা। কারণ, করোনা একটি বিভীষিকার নাম। যাদের বাড়িতে এই বিপদ ঢুকেছে শুধু তারাই জানে, এ কী ভয়ানক বিপদ! শুধু তো রোগের বিপদ নয়, পরিজন প্রতিবেশীদের কাছেও যেন হঠাৎ ঘৃণার পাত্র হয়ে উঠছে তারা। অস্পৃশ্য তো হচ্ছেই। স্বাস্থ্যবিধি মানতে গিয়ে এই অস্বাভাবিকতা সবসময় অস্বীকার করা যাচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু তাই বলে ঘৃণা ছড়ানো কিংবা মওকা বুঝে মোটা টাকার অন্যায় বোঝা চাপিয়ে দেওয়া তো মানা যায় না। নজরে আসার পর কিছু জায়গায় প্রশাসন সক্রিয় হয়েছে। কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সার্বিক সুরাহা তো মেলেনি। কিছু প্রতিবাদী মানুষ বাধ্য হয়েছেন জনস্বার্থের মামলা রুজু করে বিষয়টি আদালতের গোচরে আনতে। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতে শুনানি ছিল। রায় দিতে গিয়ে বিচারপতিদের বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, করোনা সংক্রান্ত নির্দেশাবলি (এসওপি) রাজ্যগুলি মানতে বাধ্য। করোনা আক্রান্ত বা সম্ভাব্য আক্রান্তদের জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাজ্যকেই করতে হবে। অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের ন্যায্য ভাড়াও রাজ্য সরকারকে বেঁধে দিতে হবে। পরিষেবা প্রদানকারীকে সেই অনুসারেই ভাড়া নিতে হবে। তার বেশি নিতে পারবেন না। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ অত্যন্ত সময়োচিত। কারণ, করোনা সংক্রমণের ‘পিক’-এ রয়েছে ভারত। প্রচণ্ড বিপদের মধ্যে প্রায় সবক’টি রাজ্য। অধিকাংশ পরিবার চলছে প্রচণ্ড অর্থসঙ্কটের ভিতর দিয়ে। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে রাজ্যগুলির উচিত, প্রতিটি বিপন্ন অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। করোনা-জয়ের জন্য এটা জরুরি।