প্রেম-প্রণয়ে কিছু নতুনত্ব থাকবে যা বিশেষভাবে মনকে নাড়া দেবে। কোনও কিছু অতিরিক্ত আশা না করাই ... বিশদ
তা হলে প্রবীণদের কষ্টের জীবনটাই কি নিয়তি? কোনও সুস্থ সমাজ এটা চাইতে পারে না। একটুখানি স্বস্তিদায়ক অবসরকালীন জীবনের বন্দোবস্ত করে দেওয়াটাই রাষ্ট্রের কর্তব্য। যে মানুষগুলো জীবনের সোনালি দিনগুলো দিলেন দেশ গঠনের জন্য, তাঁদের জন্য দেশকে অবশ্যই ভাবতে হবে। কাজ ফুরলে মানুষগুলিকে বোঝার মতো ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া কোনও সভ্য রাষ্ট্র-ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় না। মনে রাখতে হবে, প্রবীণদের এটা অধিকার। এটা মানবাধিকারেরই অংশ। যাঁদের একেবারে কিছু নেই, যাঁরা সত্যিকার সহায় সম্বলহীন, তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত অঙ্কের ওল্ড এজ পেনশন বা বার্ধক্যভাতার ব্যবস্থা করতেই হবে। নিয়মরক্ষার কয়েকশো টাকা কিংবা এক হাজার টাকার রসিকতার কথা বলা হচ্ছে না। নিঃস্ব প্রবীণদের দু’বেলা পেট ভরে খাওয়া-পরা এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসের ব্যবস্থা করাটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
কিন্তু রাষ্ট্রের এই ঔচিত্য বা নৈতিক বোধ যখন অনুপস্থিত তখন কিছু ব্যক্তিকে নিজের ভাবনা আগাম ভাবতেই হয়। কর্মজীবনের আয়ের একটা অংশ তাঁরা নানাভাবে সঞ্চয় করার চেষ্টা করেন। সঞ্চিত অর্থের লভ্যাংশ বা সুদটাকে তখন না-পাওয়া পেনশনের বিকল্প হিসেবে ভাবা হয়। কয়েক দশক আগেও ব্যাঙ্কগুলি সঞ্চয় আহ্বান করতে গিয়ে বিজ্ঞাপন দিত—‘সাত বছরে ডবল!’ অর্থাৎ এমনভাবে সুদের হার ঠিক করা হতো যে একজন আজ এক হাজার টাকার ফিক্সড ডিপজিট করলে সাত বছর বাদে তিনি সুদে-আসলে মোট দুই হাজার টাকা ফেরত পেতেন। এ কোনও চিটফান্ডের প্রলোভন নয়। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলোই এই হারে সুদ দিত। ভারত খোলা বাজার অর্থনীতিতে গা ভাসাতেই সুদের হার নামতে থাকে। সেই যে নামা শুরু হয়েছে তার যেন বিরাম নেই। নামছে তো নামছেই। আজ সুদের হার যে তলানিতে নেমে এসেছে তাতে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসের জমা তো বটেই পিএফ জমার উপর সুদটাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবারের কাগজের খবর, স্টেট ব্যাঙ্ক ৫-১০ বছর মেয়াদি সঞ্চয়ের জন্য সুদের হার রেখেছে ৫.৪ শতাংশ। অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয়েও এখন থেকে আর সামান্য ৬ শতাংশ হারেও সুদ মিলবে না। একমাত্র প্রবীণদেরকেই সর্বোচ্চ ৬.২ শতাংশ হারে সুদ দেওয়া হবে। অনেক পরিবার ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষার জন্য বিশেষ স্কিমে টাকা রাখেন। সেগুলোও এই ধাক্কায় ধরাশায়ী হতে চলেছে। অর্থাৎ সন্তানদের প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা থেকে বৃদ্ধ বয়সের ভরসা-সহ অনেক কিছুই কেড়ে নিচ্ছে মোদি সরকারের এই অর্থনীতি। সরকার তো পরিষ্কার হাত তুলে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ভেবে দেখেছেন কি এরপর নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত মানুষ কোথায় যাবেন? কার কাছে যাবেন?