প্রেম-প্রণয়ে কিছু নতুনত্ব থাকবে যা বিশেষভাবে মনকে নাড়া দেবে। কোনও কিছু অতিরিক্ত আশা না করাই ... বিশদ
ভারতবাসীর আজ ঠিক সেই দশা। হবে নাইবা কেন? ১৮ সেপ্টেম্বরের হিসেব বলছে, করোনা সংক্রমণের সর্বমোট সংখ্যাটি ৫২ লক্ষ ১৫ হাজার ছুঁই ছুঁই! তাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৮৪ হাজার মানুষ মারা গিয়েছে। ভারতের জন্য সবচেয়ে স্বস্তির খবর হল সুস্থতার ছবিটা বেশ ভালো। ইতিমধ্যে ৪১ লক্ষ সাড়ে ১৩ হাজার মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছে। এখন সমস্যা হল, রোগমুক্ত হওয়ার পরেও সবাই দ্রুত চাঙ্গা হতে পারছে না। দুর্বলতা-সহ একাধিক সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে বয়স্কদের অন্য কিছু রোগে চেপে ধরছে। এমনকী কম বয়সিদের মধ্যেও যাদের পুরনো কিছু অসুখ ছিল তাদের সেইসব অসুখ নতুন করে চেপে ধরছে। অর্থাৎ করোনা সেরে গেলেও বাড়তি কিছু ভোগান্তি রেখে যাচ্ছে। তার উপর রোগটি এখনও পর্যন্ত বেশ ছোঁয়াচে। অতএব প্রতিরোধের বিকল্প কিছু দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিরোধের উপায় ভ্যাকসিন বা টিকা। করোনা ভ্যাকসিনের উপর বিশ্বজুড়ে এখনই ৩২১টি গবেষণা চলছে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতও। তবে কোনও সংস্থাই ভ্যাকসিনের সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা নিয়ে নিশ্চয়তা দেওয়ার মতো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ করেনি। চলতি মাসে ৩৯টি ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ একটি ইতিবাচক দিকে এগচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে। ৩৩টি ক্ষেত্রে ফেজ-১ ও ফেজ-২ ট্রায়াল চলছে। ফেজ-২ এবং ফেজ-৩ ট্রায়াল চলছে ৬টি ক্ষেত্রে। গবেষকরা দিনরাত এক করেই মানবসভ্যতার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কাজটি করে চলছেন।
আমরা জানি, বিতর্কের অবকাশ থাকলেও রাশিয়া ইতিমধ্যেই করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে তাদের সাফল্যের ঘোষণা করে দিয়েছে। অর্থাৎ বিশ্বের মধ্যে রাশিয়াই প্রথম করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগের দাবিদার হয়ে উঠেছে। শুধু সাফল্য ঘোষণা করেই থামেনি, তারা গণহারে ভ্যাকসিন উৎপাদনের কথাও প্রচার করেছে। অন্যদিকে, অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের পার্টনার হিসেবে ভারতকেও বিশেষ আশাবাদী মনে করা হচ্ছে। গেটস ফাউন্ডেশনের বিপুল আর্থিক সহায়তায় ওই ভ্যাকসিন যৎসামান্য দামেই মিলতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারত সরকারের আশা, আর মাস তিনেকের মধ্যেই ভ্যাকসিন চলে আসবে। আর রাশিয়ার টিকা পৌঁছে যাবে তারও আগে। শুধু সরকারের হাতে এলেই তো হল না, সাধারণ মানুষের শরীরে তার প্রয়োগ বা গণটিকাকরণটাই হল চূড়ান্ত লক্ষ্য। দেশের একজন মানুষও এই কর্মসূচির বাইরে রয়ে গেলে সেটা অত্যন্ত ভয়ের ব্যাপার। কেন্দ্র নিশ্চয় এটা নিয়ে ভাবছে। রাজ্যগুলির সঙ্গেও আলোচনা চলছে। তবে, সেই উদ্যোগের সবটা এখনও স্পষ্ট নয়। এটুকু বোঝা যাচ্ছে যে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এরাজ্যের সকলের জন্য আন্তরিকতার সঙ্গে ভাবছে। বাংলায় করোনা সমস্যা সবচেয়ে প্রবল কলকাতায়। তাই গণটিকাকরণে কলকাতাই অগ্রাধিকার পেতে চলেছে। প্রতিটি নাগরিককে একাধিক ডোজ দিতে হবে। তাতে মাথাপিছু টিকাকরণের মোট খরচ ১২-১৩ শত টাকা হতে পারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এই টিকা পুরো বিনামূল্যেই দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে তৎপর হয়েছে। কলকাতায় দায়িত্বে থাকবে কলকাতা কর্পোরেশন। জেলাগুলিতেও এই মডেল অনুসরণ করা হবে। কলকাতায় ঠিক কত সংখ্যক ভ্যাকসিন ডোজ প্রয়োজন তার সমীক্ষা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। সমীক্ষাটি তাড়াতাড়ি রাজ্যজুড়েও হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত, আর্থিক এবং যাবতীয় টেকনিক্যাল সাপোর্ট নিয়ে রাজ্যের পাশে দাঁড়ানো। বাংলার এই মডেল সম্প্রসারিত হোক সারা দেশেও। তা না-হলে ১৩৫ কোটি মানুষের দেশকে করোনামুক্ত করা কঠিনই হবে।