প্রেম-প্রণয়ে কিছু নতুনত্ব থাকবে যা বিশেষভাবে মনকে নাড়া দেবে। কোনও কিছু অতিরিক্ত আশা না করাই ... বিশদ
অথচ, আমরা ভেবে দেখি না—যখন আমরা ঘুমোতে যাই তখন সামান্য কিছু মানুষকে জেগে থাকতেই হয়। তাদের মধ্যে পুলিস পয়লা নম্বর। পুলিস জেগে থাকে বলেই ঘুমোতে যাওয়ার আগে নাগরিকদের মনে কোনওরকম উদ্বেগ জায়গা পায় না। পুলিসের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে বলেই আমরা অফিস থেকে বেতন নিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরি। আত্মীয়-বন্ধুদের নিয়ে আনন্দ করতে বেরতে পারি। বাড়িতে আনন্দানুষ্ঠান হয় উটকো বিঘ্ন ছাড়াই। কলকাতা-সহ সমগ্র বাংলায় পুজো, ঈদ, বড়দিন প্রভৃতি উৎসবের মেজাজে পালিত হয়। আমাদের কি একবারও মনে হয়—পুলিস পরিবারগুলি ‘স্যাক্রিফাইস’ করে বলেই এই উৎসবগুলি আমাদের হয়ে উঠতে পারে? ‘উৎসব সবার’ বলা হলেও বাস্তবে তা পুলিসের এবং পুলিস পরিবারের হয়ে উঠতে পারে না। রেল, মেট্রোরেল, ধর্মস্থান, ব্যাঙ্ক, বাজার, শপিংমল, এয়ারপোর্ট, নদী বা সমুদ্র বন্দর, পরীক্ষার হল, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা সংস্থা প্রভৃতি সর্বত্র পুলিসই ভরসা। পুলিসের সতর্ক প্রহরাতেই বেঁচে রয়েছে গণতন্ত্র। নির্বাচন কমিশনের বকলমে আসলে পুলিসই নির্বাচনের প্রতিটি পর্ব উতরে দেয়। পুলিসেরই কর্মদক্ষতায় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে আইনসভা চলে, মন্ত্রণালয় কাজ করে, আদালতে বিচার পর্ব চলে নির্বিঘ্নে। রাস্তায় একটি দুর্ঘটনা কিংবা কোনও অপরাধ ঘটলে সবার আগে পুলিসেরই ডাক পড়ে। টাকা থাকলে একটি দামি গাড়ি কেনাই যায়। কিন্তু সেটিকে ব্যবহারের জন্য চাই সচল রাজপথ। রাজপথকে সচল রাখতে পারে একমাত্র ট্রাফিক পুলিস—রোদ জল ঝড় বৃষ্টি এবং অনেক মানুষের রক্তচক্ষু এবং/অথবা ঘৃণার তোয়াক্কা না করে। করোনা মহামারীতে স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদেরও ছাপিয়ে কাজ করছে পুলিস। লকডাউন থেকে আনলক—প্রায় সমস্ত পর্বে পুলিস গোটা সমাজের পাশে দাঁড়িয়েছে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই। সেই ঝুঁকি বাড়িতেও বয়ে নিয়ে যাচ্ছে তারা। সোজা কথায়—জন্ম থেকে মৃত্যু—জীবনের প্রতিটি পর্বকে পুলিসই ‘সম্ভব’ করে রেখেছে।
ধন্যবাদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, তিনি অন্তত পুলিসের এই অপরিমেয় অবদান বিস্মৃত হননি। মঙ্গলবার পুলিস দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে পুলিসকর্মীদের জন্য তাঁর সরকারের কিছু মানবিক সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন। সেখানে অগ্রাধিকার পেয়েছে পুলিস বিভাগের একেবারে নিম্নস্তরের কর্মীদের বহুদিনের কিছু দাবি-দাওয়ার কথা। শুধু বেতন বা ভাতা নয়, তাঁদের পদোন্নতি এবং প্রাপ্য ছুটি নিয়েও রয়েছে কিছু ইতিবাচক ঘোষণা। পুলিস বিভাগের কয়েক লক্ষ কর্মী এতে উপকৃত হবেন। পুলিসকে শুধু দুয়ে নিলে হবে কেন, তাঁদের জন্য সাধ্যমতো কিছু করাই তো একটি উপযুক্ত সরকারের কর্তব্য। মুখ্যমন্ত্রীর এই ভূমিকায় পুলিসকর্মীদের মর্যাদাও বাড়বে। এরপর পুলিসের কাছ থেকে আরও ভালো পরিষেবা প্রত্যাশা করার মুখ থাকবে এই সমাজের।