উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। উচ্চতর বিদ্যার ক্ষেত্রে শুভ ফল পাবে। কর্মপ্রার্থীদের ... বিশদ
সংবাদপত্রের পাতায় এ ধরনের খবর আর পাঁচজন বাবা-মায়ের বুকেও কাঁপুনি ধরিয়ে দেয়। এসব দেখে এবং শুনে সন্তান ঘরে না ফেরা পর্যন্ত দুচোখের পাতা এক করতে পারেন না অনেকেই। কিন্তু এসবের শেষ কোথায়? সচেতনতা বৃদ্ধি? তা নিয়েও তো পুলিস কম প্রচার করেনি। বিভিন্ন স্কুলেও হয়েছে শিবির। তাতেও কি একটা অংশের মধ্যে কোনও হেলদোল দেখা যায়? শুধু কি বয়সে ও অভিজ্ঞতায় তরুণ, বা জীবন সম্পর্কে কিছুটা হলেও অজ্ঞ এই প্রজন্মই এই কাণ্ড ঘটাচ্ছে? বাসে উঠলেও তো বুকে ধড়ফড়ানি শুরু হয়ে যায়। সাম্প্রতিক চিৎপুর লকগেটের কাছে হোলি চাইল্ড স্কুলের খুদে পড়ুয়াদের নিয়ে যে পুলবাসটি ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় পড়ল, তারও মূলে কিন্তু ওই গতি। এখানে তো বিপদ শুধু চালকের ছিল না। অতগুলো শিশু এবং তাদের অভিভাবকরাও ছিল। তবুও স্টিয়ারিংয়ে হাত পড়তেই চালক হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছিলেন। একটিবারের জন্যও ভাবেননি, তাঁর এই কাজ কত বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। কোনও দুর্ঘটনা নিয়ে হইচই হলে যা হয়, এক্ষেত্রেও ঘটনা পরম্পরা সেইভাবেই এগচ্ছে। পুলিস হুঙ্কার ছেড়েছে, আর এসব বরদাস্ত করা হবে না। সব স্কুলবাসকে গাইডলাইন অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে হবে। আগামী সপ্তাহে মিটিংও করা হবে সবাইকে ডেকে। কিন্তু যে বাসটি এমন দুর্ঘটনা ঘটাল, তার তো ফিটনেস সার্টিফিকেটই ছিল না। এমনও দেখা যায়, ফিটনেস সার্টিফিকেট পাওয়ার মতো যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও ভাঙাচোরা বাস রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। মোটর ভেহিকলস-এর কোন সহৃদয় ব্যক্তিরা টাকার বিনিময়ে এমন বিপজ্জনক খেলা খেলেছেন, তাঁদের খুঁজে বের করা যায় না? তাঁদের কঠিন শাস্তি দিয়ে বিভাগের বাকিদের প্রতি কোনও বার্তা ছুঁড়ে দেওয়া কি যায় না?
সচেতনতার প্রচার শুধু রাস্তা বা স্কুলের পাশাপাশি সেইসব জায়গাতেও হোক না, যেখানে দালালরাজ বা দুর্নীতির জেরে স্রেফ পয়সা দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স পকেটে চলে আসে বা লজঝড়ে গাড়িও উপযুক্ত দক্ষিণার বিনিময়ে পুরোপুরি ফিট হয়ে যায় রাস্তায় নামার জন্য। অর্থাৎ অভিযানটা একেবারে গোড়া থেকে শুরু হোক। তারপর পুলিসি সক্রিয়তা তো আছেই। পুলিস আগের চেয়ে অনেক সক্রিয়, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু শহরের রাজপথে যখন পুলিসের সামনেই হেলমেট ছাড়া বাইক বাহিনীর দাপট দেখা যায়, যখন প্রকাশ্য রাজপথে আওয়াজ তুলে প্রচণ্ড গতিতে দামী বাইক রেষের ঢঙে ছুটে যায়, বা দুটি বাস রেষারেষিতে মত্ত থাকে, তখন কোথাও যেন একটু খামতি চোখে পড়ে। তাই স্রেফ অর্থ বা অন্য কোনও চাপের কাছে নতি স্বীকার করে পুলিসও যেন বেআইনি কাজকে মদত না দেয়, দেখতে হবে সেটাও। অর্থাৎ শুধু সচেতনতায় যখন কাজ হয় না, হয়তো হবেও না, তখন আইনের সাহায্য নিয়ে আরও কড়া পদক্ষেপ বেশি করে নেওয়া দরকার।