উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। উচ্চতর বিদ্যার ক্ষেত্রে শুভ ফল পাবে। কর্মপ্রার্থীদের ... বিশদ
দীর্ঘদিন ধরে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের মূল প্রবেশদ্বার রাজাভাতখাওয়ায় বনদপ্তরের চেকপোস্ট দিয়ে সন্ধ্যা ছ’টার পরেও বন বস্তিবাসীদের যাতায়াত অবাধ ছিল। সম্প্রতি জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে গণ্ডার হত্যার ঘটনার পর বন্যপ্রাণীদের সংরক্ষণের প্রশ্নে বনদপ্তর বুধবার ফতোয়া জারি করে যে, সন্ধ্যা ছ’টার পর রাজাভাতখাওয়ার ওই চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বক্সা পাহাড়ের ১৩টি পাহাড়ি গ্রাম, রাজাভাতখাওয়া ও জয়ন্তী বনবস্তির বাসিন্দারা বুধবার রাত থেকে বনদপ্তরের ওই চেকপোস্ট অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন। বৃহস্পতিবারও এই অবরোধ চলতে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কালচিনি থানা থেকে বিশাল পুলিস বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। পুলিসকে দেখে অবরোধকারীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। বনবস্তিবাসীরা সন্ধ্যার পরেও ওই চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াতের দাবিতে অনড় থাকেন। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবরোধে আটকে পড়ে পর্যটকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার বেলা তিনটা নাগাদ বনদপ্তরের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার আশ্বাস দেওয়া হলে বনবস্তিবাসীরা তাঁদের অবরোধ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। আন্দোলনকারী বস্তিবাসীরা পরে বনদপ্তরের কাছে ওই চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াতের দাবিতে গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপিও জমা দেন।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধিকর্তা(পশ্চিম) কল্যাণ রাই অবশ্য বলেন, বন ও বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষায় মাঝে মাঝে অপ্রিয় কিছু সিদ্ধান্ত আমাদের নিতেই হয়। তবে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা হবে। বিষয়টি উপর মহলেও জানাচ্ছি আমরা।
আন্দোলনকারীদের পক্ষে জয়ন্তীর বাসিন্দা শুভজ্যোতি বসু বলেন, আমাদের সঙ্গে বনদপ্তর ক্রীতদাসের মতো আচরণ করছে। প্রায় সময়ই আমাদের ৪০ কিমি দূরে আলিপুরদুয়ার জেলা সদরে যেতে হয়। জেলা সদরে না যেতে পারলে আমরা বাঁচব কি করে? সান্তলাবাড়ির এক বাসিন্দা রাজেশ সুব্বা বলেন, ওই চেকপোস্ট দিয়ে দুষ্কৃতীরা যাতায়াত করছে কিনা সেটা দেখার দায়িত্ব তো বনদপ্তরের। আমরা তো আর চোরাশিকারী নই। তাহলে এই হেনস্থা কেন?
এদিকে, বৃহস্পতিবার দিনভর ওই চেকপোস্টে আটকে পড়ে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন পর্যটকরা। অবরোধের ফলে অনেকে জয়ন্তী ও বক্সা যেতে না পেরে ফিরে যেতে বাধ্য হন।
কলকাতার বিধাননগর গভর্নমেন্ট কলেজের অধ্যাপক কৌশিক ভট্টাচার্য পড়ুয়াদের নিয়ে শিক্ষামূলক ভ্রমণে এসেছেন জয়ন্তী বেড়ানোর জন্য। কৌশিকবাবু বলেন, যেভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেকপোস্টে আটকে থাকতে হল, তাতে খুবই বিরক্ত লাগছে। আগে জানা থাকলে পড়ুয়াদের নিয়ে এখানে আসতাম না।
ব্যান্ডেলের বাসিন্দা পৃথ্বীশ চৌধুরী বলেন, বন বস্তিবাসীদের দাবিকে আমরাও সমর্থন করি। কিন্তু পর্যটকদের জয়ন্তী যাওয়ার জন্য বনদপ্তরের বিকল্প ব্যবস্থা করা উচিত ছিল বলে মনে করি। নৈহাটির বাসিন্দা কল্যাণ বসু বলেন, অবরোধের দরুন জয়ন্তী দেখা হল না। তাই জয়ন্তী সফর বাতিল করে জলদাপাড়া বেড়াতে যাচ্ছি।
আলিপুরদুয়ারের দমনপুর-জয়ন্তী রাজ্য সড়কের মাঝে রাজাভাতখাওয়ায় বনদপ্তরের ওই চেকপোস্টটি অবস্থিত। অবরোধকারীদের অভিযোগ, বুধবার রাতে বনদপ্তর ওই চেকপোস্টে এক প্রসূতির গাড়িও আটকে দেয়। তাতে বন বস্তিবাসীরা আরও ক্ষেপে যান।