উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। উচ্চতর বিদ্যার ক্ষেত্রে শুভ ফল পাবে। কর্মপ্রার্থীদের ... বিশদ
কিন্তু শিল্প বললেই তো আর শিল্প হয় না। হয় না কর্মসংস্থানও। তার জন্য দরকার উপযুক্ত পরিকাঠামো। শিল্পের জন্য চাই জমি, চাই বিনিয়োগকারী। রাতারাতি শিল্প আসে না। শিল্পপতিরা যাতে এই রাজ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পস্থাপনে আগ্রহী হন সেজন্য রাজ্য সরকারকেই সুবিধাজনক ব্যবস্থা করে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে ছোট শিল্পের জন্য যেমন জমি ও পরিকাঠামো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ঠিক তেমনি জমির অবস্থানটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। ভুললে চলবে কেন সিঙ্গুরে, টাটাদের ন্যানো গাড়ির কারখানা স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশের পিছনে অনেকগুলি কারণের মধ্যে অন্যতম ছিল জমির অবস্থানটি। অর্থাৎ অনেক ক্ষেত্রেই আলো, রাস্তা, জলের বন্দোবস্ত ইত্যাদির পাশাপাশি শিল্প স্থাপনের জন্য জমিটির অবস্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কারণ কোনও পণ্য তৈরি হওয়া এবং তার চাহিদা ও বিপণনের অনেকটাই নির্ভর করে কোন এলাকায় শিল্প গড়া হচ্ছে তার উপর। তার উপরই নির্ভর করে পণ্য উৎপাদনের খরচও। এই ব্যাপারটাই মাথায় রেখেই অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে মা মাটি মানুষের সরকার এগচ্ছে।
একদিকে ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্য জমি কিনতে যাতে শিল্পপতিদের সমস্যা না হয় সেজন্য সরকার নিজেই জমি কিনতে উদ্যোগী হয়েছে। এর ফলে শিল্পপতিদের ছোট জমি কেনার স্থানীয় সমস্যা, ঝঞ্ঝাট ইত্যাদি পোহাতে হবে না। দাম নিয়েও দরাদরির সমস্যা কাটবে। অর্থাৎ রাজ্য সরকারের ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগম থেকে শিল্পপতিরা সরাসরি যদি লিজে জমি নেন বা কিনে নেন তাহলে তাঁদের সুবিধাই হবে। এই কারণেই অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে শিল্পের জন্য জমি জোগাড় করতে অর্থাৎ জমির বহর বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। মহকুমা ধরে ধরে ছোট শিল্পের জন্য জমি বরাদ্দ করার উদ্দেশ্যে খাস জমি চিহ্নিত করতে ২১টি জেলার জেলাশাসককে চিঠি পাঠিয়েছে রাজ্য ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগম। এখন ১৮টি মহকুমায় ছোট শিল্পের জন্য পার্ক বা এস্টেট থাকলেও লক্ষ্য আরও ৩৮টি মহকুমায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট বা পার্ক তৈরি করার। কোথায় কোথায় জমি আছে, সেখানকার পরিকাঠামোটি-বা কী সেই তথ্য শিল্পপতিদের সামনে তুলে ধরার জন্যই রাজ্যে বার্ষিক শিল্প সম্মেলন করা হয়। এর পাশাপাশি শিল্পের স্বার্থে রাজ্যের তরফে নিবিড়ভাবে জমি খোঁজার প্রক্রিয়ায় ইতিমধ্যেই সুফল পাওয়া গেছে। ১০০ একর জমির সন্ধানও মিলেছে। সরকারি এই উদ্যোগে এটা অন্তত স্পষ্ট হয়েছে দেশ ও রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উপর গুরুত্ব আরোপের বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি বুঝেই রাজ্য সরকারের এমন পদক্ষেপ। লক্ষ্য বেকারত্ব দূরীকরণ অর্থাৎ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। জমি ও পরিকাঠামোর বরণডালা শিল্পপতিদের সামনে তুলে ধরে তাঁদের মধ্যে বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়াতে সফল হলে রাজ্যে আরও শিল্প গড়ে উঠবে। উপকৃত হবেন এরাজ্যের লক্ষ লক্ষ বেকার, পাশাপাশি উন্নয়ন হবে রাজ্যেরও। তাই সঠিক চিন্তাভাবনা করেই এগচ্ছে মমতার সরকার।