উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। উচ্চতর বিদ্যার ক্ষেত্রে শুভ ফল পাবে। কর্মপ্রার্থীদের ... বিশদ
বিশেষত সবার মাথার উপর ছাদের ব্যবস্থা করা যায়নি। তার একটি বড় কারণ গরিবদের বেশিরভাগই ভূমিহীন। শহুরে গরিবদের অবস্থা যাকে বলে সঙ্গিন! ঘর তৈরির জন্য সবার আগে দরকার একখণ্ড জমি। যে মানুষ পেট ভরাবার সামান্য ভাত রুটি ডাল সব্জির ব্যবস্থা করতেই দিনে তারা দেখে, তার সঞ্চয় বলে কিছু থাকে না। সঞ্চয় না-থাকলে জমির মালিক হওয়ার স্বপ্নটাও দেখা যায় না। অতএব সেই মানুষের জায়গা হয় ফুটপাত, রেলের প্ল্যাটফর্ম, বাসযাত্রী প্রতীক্ষালয়, উড়ালপুল বা কোনও সেতুর নীচের অন্ধকার কোণ কিংবা কোনও পরিত্যক্ত বিপজ্জনক বাড়ি বা গুদাম ঘরের একটি অংশে। কেউ-বা কাঁচাঘর বানায় অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকা সরকারি বেসরকারি জমিতে। আবার কিছু মানুষ বহু বছর ধরে বাস করে যেমন-তেমন ভাড়ার ঘরে কিংবা ঠিকাস্বত্বে পাওয়া জমিতে। কলকাতায় এবং শহরতলিতে গত কয়েক দশক যাবৎ হাজারে হাজারে ছোটবড় আবাসন তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে—এর কোনও বিরাম নেই। দেখে মনে হবে—গৃহসমস্যা আর কারও কিছু থাকবে না। কিন্তু বাস্তবটা একেবারে অন্যরকম। কারণ, ফ্ল্যাট কেনার সামর্থ্য ক’জনের আছে? যে ফ্ল্যাট তৈরি করতে ৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে, সেটাও একজন গরিব কিনতে পারবে না। কারণ, নির্মাণ খরচের সঙ্গে প্রোমোটারের লাভ এবং নানাবিধ সরকারি কর এবং গুন্ডা ট্যাক্স দিয়ে তার দাম গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ১৫ লাখ! ব্যাঙ্কের বিধি মেনে গৃহঋণ চাইবার যোগ্যতাও সকলের নেই। অতএব কোটি কোটি মানুষের গৃহহীন হয়ে থাকাই নিয়তি এই পোড়ার দেশে।
কিন্তু, বস্তিতে বা ঠিকাস্বত্বের উপর কোনোরকমে কাটিয়েও দিতে পারেন না সকলে। প্রোমোটার নামক বিশেষ প্রজাতির একটি অংশের সীমাহীন লোলুপ হাত সেদিকেও প্রসারিত হয়। তারা গুন্ডা দিয়ে, রাজনীতির দাদাদের ধরে কিংবা আগুন লাগিয়ে বহু বস্তির দখল নেয়। কলকাতা ও হাওড়ায় প্রোমোটার চক্রের এই অনাচার ঠেকাতে এবার উদ্যোগী হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ঠিকা টেন্যান্সি আইনের সংশোধন করে ঠিকা ভাড়াটিয়াদের আইনগত মর্যাদা আগেই বদলে দেওয়া হয়েছে। সেই অনু্যায়ী বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঠিকা লিজি এবং ঠিকা অ্যাসাইনিদের গৃহনির্মাণের ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। তারা এবার থেকে ব্যাঙ্কঋণ গ্রহণ এবং ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবে। সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে, নতুন এই বিধানে প্রোমোটারদের ইনিয়ে বিনিয়েও অনুপ্রবেশের কোনও সুযোগ রাখা হয়নি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরও এই বিষয়ে সতর্ক পদক্ষেপ করতে হবে। তারা যেন আইন মেনেই ঘর তৈরি করে। পরিবেশের সুস্থতা বজায় রাখার বিষয়েও যত্নবান হয়। তারা যাতে কোনোভাবেই রাজনীতির বোড়ে কিংবা অসাধুচক্রের শিকার না-হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে সরকারকে।