উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। উচ্চতর বিদ্যার ক্ষেত্রে শুভ ফল পাবে। কর্মপ্রার্থীদের ... বিশদ
প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি ঠেকানো যায় না আমরা জানি। কিন্তু, তার তাণ্ডবজনিক কারণে ক্ষয়ক্ষতি যে অনেকাংশেই কমানো সম্ভব, এবারের বিপর্যয় মোকাবিলা ম্যানেজমেন্ট তা দেখিয়ে দিল। আবহাওয়া দপ্তর এবং সরকারি প্রশাসন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে সক্রিয় থাকার ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকারও মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর সরকারি প্রশাসনের এই দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। যে রাজ্যপাল উঠতে বসতে রাজ্য সরকারের কট্টর সমালোচক, তাঁর দিক থেকে এমন প্রশংসাবাক্যের প্রতি রাজ্যবাসীর দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূল সন্নিহিত এলাকায়। তার বাইরেও হাওড়া, হুগলি এবং বাঁকুড়ারও একাংশে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর রয়েছে। সব মিলিয়ে পৌনে ২ লক্ষাধিক মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় শ’পাঁচেক ত্রাণশিবির চলছে। প্রয়োজনমতো রান্নাঘর থেকে দুর্গত মানুষজনকে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলার দশটি এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলার ছয়টি টিম জান লড়িয়ে কাজ করছে। ওই সঙ্গে যোগ দিয়েছে কলকাতা পুলিস এবং সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের ভলান্টিয়াররা। নদীপথে উদ্ধারকাজে ব্যাপৃত প্রায় শ’খানেক বোট।
তবে, দিন যত এগবে ক্ষয়ক্ষতির ছবিটা বেশি করে প্রকট হবে। যেমন সুন্দরবন অঞ্চলে নদীবাঁধের ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান মিলবে। পানীয় জলের সঙ্কটের ছবিটা পরিষ্কার হবে। জানা যাবে অসুখবিসুখের খবর। ফসলের পাশাপাশি পাওয়া যাবে গবাদি পশু এবং হাঁস-মুরগির ক্ষয়ক্ষতিরও হিসেব। এইসমস্ত ক্ষতিপূরণে সরকারি প্রশাসনকে অনেক বেশি আন্তরিক ও মানবিক হতে হবে। তা না-হলে বিপর্যয় মোকাবিলার এই প্রশংসনীয় উদ্যোগটি সার্থক হবে না। আইলা-পরবর্তী অভিজ্ঞতা কিন্তু আমাদের মোটেই ভালো নয়। আইলার ক্ষতিপূরণ নিয়ে হাজার হাজার মানুষকে বছরের পর বছর ভুগতে হয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের দায় এড়ানোর প্রতিযোগিতাও চলেছে দুর্ভাগা দেশের ট্রাডিশন মেনেই। বুলবুল-পরবর্তী বাংলা কি সর্বার্থে আশাব্যঞ্জক একটি ছবি দেখতে পাবে? স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার প্রতীক্ষায় থাকছে দুগর্ত বাংলা।