উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। উচ্চতর বিদ্যার ক্ষেত্রে শুভ ফল পাবে। কর্মপ্রার্থীদের ... বিশদ
একটি জাতি কতটা এগবে তা নির্ভর করে শিশুদের বিকাশের উপর। এই কারণে শিশুদেরকেই জাতির ভবিষৎ বলা হয়। জাতির অগ্রগতি বা ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধির প্রশ্নটি শিশুদের বিকাশের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। একটি মানুষ পরিণত বয়সে শারীরিক ও মানসিকভাবে কতটা সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকবে তা শৈশবেই নির্দিষ্ট হয়ে যায়। বয়সোচিত পুষ্টি নিয়ে বেড়ে উঠলেই একজন মানুষ রোগপ্রতিরোধে বিশেষভাবে সক্ষম হয় এবং তার স্বাভাবিক বুদ্ধির বিকাশটাও ঘটে। স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা শিশু জীবনের যে-কোনও দিকে যাওয়ার উপযুক্ত হতে পারে। খেলাধুলো গানবাজনা শিল্পকলায় পারদর্শী যেমন হতে পারে তেমনি পছন্দের যে-কোনও বিষয়ে লেখাপড়াও শিখতে পারে। তাই বয়স অনু্যায়ী শিশুকে পুষ্টিকর খাবার দেওয়াটা আবশ্যক। পাঁচ বছরের ভিতরে শিশুর বুদ্ধির মূল বিকাশটাও ঘটে যায়। এই বয়সের যাবতীয় সঞ্চয় একজন মানুষকে সারাজীবন ডিভিডেন্ড দেয়। অবহেলিত শৈশব যে-কোনও মানুষের জন্যই অভিশাপ। অবহেলিত শৈশব যার তাকে অন্যের সমকক্ষ হতে অনেক বেশি কষ্ট করতে হয়। তাকে কষ্ট করতে হয় শারীরিক এবং মানসিকভাবে। অনেকে সারাজীবন কষ্ট করেও শারীরিক এবং মানসিকভাবে সমবয়সিদের সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারে না। তার পিছনে মানুষটির শৈশবের বঞ্চনা নিঃসন্দেহে অনেকাংশে দায়ী থাকে।
শিশুদের অপুষ্টির যে চিত্রকে সামনে রেখে এই আলোচনা তার সবটার জন্য পরিবারের অসামর্থ্যকে দায়ী করা চলে না। এমনকী দোষের সবটা সরকারকেও দেওয়া যায় না। কারণ, শিশুর অপুষ্টি এবং দুর্বল স্বাস্থ্যের পিছনে মা-বাবা এবং পরিবারের অজ্ঞতা অনেকখানি দায়ী। সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের অভিজ্ঞতা বলে, অনেক মা সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ছ’মাস অবধি বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ায় না। সুযোগ পেলেই গালভরা নামের কৌটোর দুধ কিংবা বেবিফুড খাওয়ায়। এছাড়া ধর্মীয় এবং সামাজিক সংস্কারের দোহাই দিয়ে অনেক বাচ্চাকে দেড় বছর পর্যন্ত আমিষ খাওয়ানো হয় না। কোনও কোনও বাচ্চাকে প্রয়োজনীয় ফলমূল সব্জিও দেওয়া হয় না। তার ফলে দেখা যায় পাঁচ বছর নীচের ৭০ শতাংশ শিশুই অপুষ্টির শিকার। শিশু ও মায়েদের পুষ্টির জন্য সরকারের কর্তব্য যেমন চলছে চলুক। সুযোগমতো তা আরও বাড়ানো হোক। পাশাপাশি মানুষকে, বিশেষত শিশুর মা-বাবাকে আরও সচেতন করে তোলার উদ্যোগ নিক সরকার। দেশের অগ্রগতির আসল চাবিকাঠির নাম শিশুর সার্বিক বিকাশ।