বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
জেলার পুলিস সুপার শ্যাম সিং বলেন, গোরু পাচার রুখতে এই ধরনের অভিযান জারি থাকবে। আটক হওয়া গোরুবোঝাই লরি কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তা দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ইলামবাজারের সুখবাজারে প্রতি শনিবার গোরুর হাট বসে। সেখান থেকে গোরুবোঝাই করে রাতের দিকে রানিগঞ্জ-মোড়গ্রাম ৬০নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে মুর্শিদাবাদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। মুর্শিদাবাদের লালগোলা ও ওমরপুরের কয়েকজন ব্যক্তি ওই পাচারের মূল পাণ্ডা হিসেবে কাজ করে। সামনেই কুরবানি। ফলে পাচার চক্র আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ওমরপুরের একটি হোটেলে বসে এই কারবার চালাচ্ছে পাচার চক্র। এই চক্রে পুলিসের একাংশের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ। টাকা নিয়ে সেই সব গবাদিপশু ভর্তি লরি তারা ছেড়ে দেয়। প্রতি রাতে এভাবে শতাধিক গোরু ও মোষ ভর্তি লরি পাচার হয়ে যাচ্ছে। গতবছর উত্তরবঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠকে গোরু পাচার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সোচ্চার হওয়ার পর অবশ্য নড়েচড়ে বসে পুলিস কর্তারা। ব্যাপকভাবে ধরপাকড় শুরু হয়।
গত বছর জাতীয় সড়কে রামপুরহাটের মনসুবা মোড় থেকে চারটি লরি আটক করে ৩২টি মোষ ও ৪১টি গোরু আটক করে পুলিস। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি সেই মনসুবা মোড়ের কাছ থেকে দু’টি গোরু বোঝাই লরি আটক ছাড়াও ১৩জন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার হয় ২১টি গোরু। গত ৯ জুলাই ইলামবাজারের জয়দেব ফেরিঘাটের কাছ থেকে ৩টি গোরুবোঝাই লরি আটক করে পুলিস। বাঁকুড়ার সুলুকপাহাড়ি হাট থেকে ওই অবৈধ গোরুবোঝাই লরিগুলি এসেছিল সুখবাজারের হাটে। সেখান থেকে কিছু গোরুবোঝাই লরি বোলপুর, নানুর হয়ে মুর্শিদাবাদে চলে যাচ্ছে। কিছু জাতীয় সড়ক ধরে সিউড়ি রামপুরহাট হয়ে মুর্শিদাবাদে যাচ্ছে। অন্যদিকে, জঙ্গলের পথ ধরে অজয় নদ পার হয়ে বর্ধমান সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে গোরুগুলিকে। পুলিসের একাংশ এই পাচারকারীদের মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। তাঁদের অভিযোগ, দু’-একটি গোরু বোঝাই লরি আটকে পুলিস চোখে ধুলো দিচ্ছে। শয়েশয়ে গোরু ভর্তি লরি পাচার হয়ে যাচ্ছে।
রামপুরহাট থানার পুলিস জানিয়েছে, শনিবার রাতে আটক হওয়া গোরুবোঝাই লরিটি মুর্শিদাবাদের দিকে যাচ্ছিল। কোনও বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ১৮টি গোরু সহ চালককে ধরা হয়েছে। এদিকে, গবাদিপশু পাচার নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও জেলায় অব্যাহত রয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, গোরু পাচার ও গো-হত্যা বন্ধের দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের। পুলিসের একাংশ শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই পাচারে মদত দিচ্ছে। তবে শুধু গোরু নয়, বালি, পাথর, কয়লা সবক্ষেত্রেই এই অবৈধ পাচার চলছে। মাঝে মধ্যে পুলিস দু’-একটি গাড়ি আটকে মানুষের আইওয়াশ করার চেষ্টা করছে।
এবিষয়ে তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, গোরু পাচার রুখতে দল থেকে পুলিসকে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী অবিলম্বে গোরু পাচার বন্ধ করতে বলেছেন। পুলিস পদক্ষেপ নিচ্ছে। পাচারকারীরা ধরা পড়ছে। এটাকে ওরা আইওয়াশ বলতেই পারে। কিন্তু, এই আইওয়াশ হতে হতেই চিরতরে বন্ধ হবে গোরুপাচার।