খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ইতিমধ্যে ব্রিটেনের বয়স্করা নিজেদের গৃহবন্দি রেখেছেন। তাঁদের কাছে খাবার সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দিতে স্থানীয়রা ছোট ছোট গোষ্ঠী তৈরি করেছেন। একা বসবাসকারী ব্যক্তিদের মধ্যে আগে যেখানে কোনওরকম যোগাযোগ ছিল না, করোনা সংক্রমণের জেরে সেই সমস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। বহু সুপারস্টোর তাদের খাদ্যসামগ্রী বয়স্ক ব্যক্তিদের হাতে তুলে দিচ্ছে। কিন্তু, এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত মানুষ নিজেদের ঘরে খাদ্যপণ্য মজুত করতে শুরু করে দিয়েছে। ফলে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে মুদির দোকান, মার্ট ও সুপারস্টোরগুলির র্যাক। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, এশীয় বংশোদ্ভূত নাগরিকরা ট্রলি ভর্তি চালের বস্তা বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। যার জেরে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
লন্ডনে পড়াশুনো করছেন মৈত্রী ঘোষ নামে এক মহিলার ছেলে। তাঁকে দেখতে বর্তমানে শহরে এসেছেন মা। সুপারস্টোরগুলির এ হেন চিত্র দেখে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মৈত্রী দেবী। তিনি বলেছেন, ‘অত্যাবশ্যক খাদ্যপণ্য কিনতে মার্কেটে গিয়েছিলাম। আমার ছেলে একটি ছোট্ট ঘরে থাকে। সেখানে খাবার মজুত করার কোনও জায়গা নেই। তাই আমি বাজার থেকে প্রতিদিন খাদ্যসামগ্রী কিনে আনি। কিন্তু, বুধবার স্টোরে গিয়ে দেখি সমস্ত র্যাক ফাঁকা। এছাড়া, খাবারের প্যাকেটগুলির উপর দাম বদলে দেওয়া হচ্ছে।’
নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন আর এক ব্যক্তি তথা ইলিংয়ে বসবাসকারী বরুণ মেহতা। তিনি বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে সমস্ত দোকান সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে না। তাই আমি নিজেই বয়স্ক এবং আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তিদের কাছে প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দিচ্ছি। একটা ছোট স্যানিটাইজার বিক্রি হচ্ছে ১০ পাউন্ডে। ২৫ কেজি আটার বস্তার দাম ৯ পাউন্ড। সেই আটার দাম ১৬ পাউন্ড বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫ পাউন্ডে। স্বল্প আয়ের ব্যক্তিরা কী করে বাঁচবেন?’
এই অবস্থায় সুপারস্টোরের মালিকদের বিরুদ্ধে দেশের খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কম্পিটিশন অ্যান্ড মার্কেটস অথরিটির (সিএমএ) কাছে অভিযোগ জানিয়েছে ক্ষুব্ধ জনতা। যদিও, পুরো ঘটনার জন্য পাইকারি ব্যবসায়ীদের উপর দায় চাপিয়েছে তারা। মার্টগুলির দাবি, আমরা বেশি দামে পণ্য কিনছি। তাই সেই বর্ধিত মূল্য ক্রেতাদের উপর চাপছে। বিভিন্ন পণ্যের উপর ৪০ শতাংশ দাম বেড়ে গিয়েছে। বরুণ মেহতার কথায়, ‘যে সমস্ত স্থানীয় দোকানগুলি থেকে দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূতরা কেনাকাটি করেন সেখানকার পণ্যের দাম এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’ প্রসঙ্গত, চাল, মাছ, চিকেন ও মাংসের জন্য দক্ষিণ এশীয় সম্প্রদায় পূর্ব লন্ডনের বেশকিছু দোকানের উপর নির্ভরশীল।