কোহিমা: সেনার গুলিতে মৃত ১৩ জন। নাগাল্যান্ডের মন জেলার খবর আসতেই হর্নবিল উৎসবের জমকালো চেহারা মুহূর্তে বদলে গেল ক্ষোভে-শোকে। ঘটনার প্রতিবাদে হর্নবিল থেকে ছ’টি উপজাতিকে সরে দাঁড়ানোর আর্জি জানায় ইস্টার্ন নাগাল্যান্ড পিপলস অর্গানাইজেশন (ইএনপিও)। এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নয়। কেন্দ্রীয় বাহিনী যে ঘৃণ্য অপরাধ করেছে, তার প্রতিবাদেই এই সিদ্ধান্ত।’ পাশাপাশি, উৎসবের প্রাণকেন্দ্র নাগা হেরিটেজ ভিলেজে নিজেদের জনগোষ্ঠীর পতাকা সরিয়ে কালো পতাকা তুলতেও আর্জি জানানো হয়। এরপরেই একপ্রস্থ আলোচনার পর সাংতাম, কোনিয়াক, ইমখিয়ুং, খিয়ামনিউংগাম, ফোম ও ছাং—ছ’টি উপজাতির সদস্যরা উৎসব থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেন। পরবর্তী ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত সুমি হোহো জনগোষ্ঠীর সদস্যরাও অনুষ্ঠান থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান সহ সভাপতি এস জেভিহে সুমি। হর্নবিল উৎসব থেকে নাম প্রত্যাহার করার কথা জানিয়ে নোডাল অফিসারকে চিঠি দিয়েছে কোনিয়াক ইউনিয়নও। সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হতে পারে যাবতীয় অনুষ্ঠান।
ঘটনার বিচার চেয়ে ইতিমধ্যেই পোস্টার পড়েছে হর্নবিল উৎসবের বিভিন্ন কেন্দ্রে। মন জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনা ফের উস্কে দিয়েছে মণিপুরের থাংজাম মনোরমার স্মৃতি। ২০০৪-এর ১১ জুলাই আসাম রাইফেলসের একদল জওয়ান মণিপুরে তাঁকে গ্রেফতার করে। বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে তাঁর বুলেটবিদ্ধ, ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এরপরেই দেশজোড়া বিক্ষোভের মুখে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন (আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ারস অ্যাক্ট বা আফস্পা) খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। গতকালের ঘটনার পর অবিলম্বে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিতেও ব্যানার-পোস্টার পড়েছে নাগা হেরিটেজ ভিলেজ চত্বরে। আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিতে টুইট করেছেন অভিনেত্রী স্বরা ভাস্করও। 
এই পরিস্থিতিতে হর্নবিল বাতিল করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় নাগাল্যান্ডের বাসিন্দাদের সঙ্গেই একসুরে সোচ্চার হয়েছেন আমজনতাও। নুংসাং আইয়ার নামে এক ব্যক্তি টুইটে লিখেছেন, ‘আমাদের ভাইবোনরা যখন শোকে মুহ্যমান, তখন আমরা কীভাবে উৎসবে মেতে থাকতে পারি! অবিলম্বে চলতি বছরের হর্নবিল বন্ধ করা হোক। প্রত্যাহার করা হোক আফস্পাও।’