খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
অর্থ বিল পাশের অর্থ হল, গত ১ ফেব্রুয়ারি সরকার যে বাজেট প্রস্তাব করেছিল, আজ তার খরচের অনুমোদন মিলল। অর্থাৎ বাজেট পাশ হল। করোনার জন্য বিশেষ প্যাকেজের দাবির পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর দৃষ্টি আকর্ষণ করে অধীররঞ্জন চৌধুরী এনপিআর সমীক্ষার কাজ পিছিয়ে দেওয়ারও দাবি করেন। বলেন, ১ এপ্রিল থেকে এনপিআর শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু দেশে এখন যেভাবে হেলথ ইমারজেন্সি চলছে, গোটা দেশ প্রায় লকডাউন। এমত পরিস্থিতিতে এনপিআর সমীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হোক। সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত রাজ্যগুলিকে নির্দেশ পাঠাক। যদিও অমিত শাহ কোনও মন্তব্য করেননি।
অর্থ বিল পাশের পরেই সভা অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি (সাইন-আ-ডাই) করে দেওয়ার কথা থাকলেও তা না করে দুটি নতুন বিল পেশ করল সরকার। রাষ্ট্রীয় রক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ন্যাশনাল ফরেনসিক ইউনিভার্সিটি বিল। অমিত শাহের উপস্থিতিতে সরকারের পক্ষে তা পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জি কিষেণ রেড্ডি। বিল পেশ হলেও তা আজ লোকসভার কার্যবিবরণীতে না থাকায় প্রবল হল্লা করল বিরোধীরা। প্রশ্ন তুলল, করোনার কারণে যেখানে সরকারকে সহায়তা করতে অর্থবিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিল বিন্দুমাত্র আলোচনা ছাড়াই পাশ হল, সেখানে কী এমন জরুরি প্রয়োজন পড়ল যে দুটি বিল আজই পেশ করতে হবে? তাও তালিকার বাইরে? সরকারের পক্ষে অবশ্য কোনও জবাব মেলেনি।
সভা মুলতুবি করার আগে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা জানিয়ে দেন, ‘গত ৩১ জানুয়ারি থেকে যে সভা বসেছিল, আজ তা অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি হচ্ছে। ১৬ টা বিলের মধ্যে ১৩ টি বিল পাশ হয়েছে। ১০৯ ঘণ্টা ২৩ সভায় আলোচনা হয়েছে।’ লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি হওয়ার কথা ছিল আগামী ৩ এপ্রিল। কিন্তু করোনার সংক্রমণ এড়াতে দিল্লিতে লকডাউনের পরিবেশে আজই অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি করে দেওয়া হল।
উল্লেখ্য, করোনার সংক্রমণ এড়াতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়ান গত এক সপ্তাহ ধরে সংসদ দ্রুত বন্ধ করে দেওয়ার দাবি করলেও মানতে চায়নি মোদি সরকার। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর দল বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, সংসদ বন্ধ হবে না। সময়ের আগে সংসদ বন্ধ করে দিলে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়াতে পারে। কিন্তু গুজরাত সহ গোটা দেশের ২৩ টি রাজ্যে কোভিড-১৯ ভাইরাসে ৪১৫ জন আক্রান্ত হতেই সরকার আর কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি।
তাই আজ সংসদ অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি হতেই স্বেচ্ছাবন্দি অবস্থায় থাকা ডেরেক ও’ব্রায়ান বলেন, শেষমেশ অহঙ্কারী সরকারকে তাহলে আমাদের দাবি মানতেই হল। উল্লেখ্য, করোনার সংক্রমণ এড়াতে তৃণমূল, এনসিপি এবং সমাজবাদী পার্টির কোনও এমপি আজ লোকসভায় উপস্থিত ছিলেন না। এতদিন সংসদে এলেও সভায় আসছিলেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিভিন্ন মন্ত্রকের বাজেট গিলোটিনে পাশ হওয়ার দিন একবার এসেছিলেন, আর আজ এলেন। করোনা মোকাবিলায় চিকিৎসক, নার্সদের মতো যেসব স্বাস্থ্যকর্মী নিরলস কাজ করছেন, তাঁদের বাহবা এবং উৎসাহ দিতে জনতা কার্ফুর দিন প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে যেভাবে আম নাগরিকদের হাত তালি দেওয়ার ছবি দেখেছিল দেশ, আজ লোকসভার মধ্যেও তা হল। স্পিকারের অনুরোধে হাততালি দিলেন এমপিরা।