নয়াদিল্লি, ২৩ মার্চ: ২৪ মার্চ মধ্যরাত থেকে বন্ধ হয়ে যাবে আন্তর্দেশীয় উড়ান পরিষেবা। পাশাপাশি আন্তঃরাজ্য বাস পরিষেবাও আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাতিল ঘোষণা হয়েছে। সোমবার বিকেল পর্যন্ত নতুন করে আরও ৩০ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এই নিয়ে দেশজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৪৭১। এদিন তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং বিহারে নতুন করে করোনা সংক্রমণের খবর মিলেছে। অন্যদিকে, রবিবারই মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯ হয়েছে। মৃতদের মধ্যে বিহার, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, কর্ণাটক, দিল্লি এবং পাঞ্জাবে একজন করে করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে।
গোটা দেশের মধ্যে সবথেকে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্রের। এদিন আরও ১৫ জনের সংক্রমণ হয়েছে। সেরাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৯। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব থ্যাকারে এদিন মহারাষ্ট্রের সীমানা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া গুজরাতেও এদিন নতুন করে ১১ জনের সংক্রমণ হয়েছে। সেরাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২৯। তবে সংক্রমণের নিরিখে মহারাষ্ট্রের পরই রয়েছে কেরল। সেরাজ্যে ৬৭ জন করোনায় আক্রান্ত। এদিন আরও ২৮ জন করোনায় আক্রান্ত হন। এই দুই রাজ্য ছাড়া গুজরাত (২৯), উত্তরপ্রদেশ (২৯), তেলেঙ্গানা (২৭), দিল্লি (২৬), রাজস্থান (২৭), কর্ণাটক (২৬), হরিয়ানা (২৩) এবং পাঞ্জাবেও (২১) করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও লাদাখে ১৩, তামিলনাড়ুতে সাত জন, পশ্চিমবঙ্গে সাত জন এবং চণ্ডীগড়, মধ্যপ্রদেশ ও অন্ধ্রপ্রদেশ— এই তিন রাজ্যে ছ’জন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড, বিহার, ওড়িশা, হিমাচল প্রদেশ, পুদুচেরি, ছত্তিশগড় মিলিয়ে দেশের সিংহভাগ রাজ্যই করোনার কবলে। এদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, নমুনা পরীক্ষার জন্য সব রাজ্যেই বিশেষ ল্যাব খোলা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে ১৭টি রাজ্য ও পাঁচটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৮০টি জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি আন্তঃরাজ্য বাস পরিষেবা, ট্রেন ও মেট্রো পরিষেবা আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রেল জানিয়েছে, এই ক’দিন শুধুমাত্র মালগাড়ি যাতায়াত করবে। করোনা সংক্রমণ রুখতে কেন্দ্র এবং দেশের সব রাজ্য সরকারই বিশেষ উদ্যোগী হয়েছে। এই মর্মে প্রধানমন্ত্রীর ক্যাবিনেট সেক্রেটারি এবং প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির সঙ্গে সব রাজ্যের মুখ্যসচিবদের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। তারপরই দেশজুড়ে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এহেন কঠিন পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রবিবারের জনতা কার্ফুকে যুদ্ধের শুরু হিসেবে ব্যাখ্যা করে তাঁর বার্তা, করোনার বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের সূচনা হয়েছে রবিবার। তাতে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা তিনি দেখেছেন। সেজন্য দেশবাসীকে তিনি শুভেচ্ছা জানান। বলেন, ‘দেশবাসীকে অসংখ্য ধন্যবাদ।’ তবে এবার মানুষকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আরও লড়াই করতে হবে। সোমবার দেশব্যাপী লকডাউন পরিস্থিতিতে মানুষের কাছে এই আহ্বানই জানালেন প্রধানমন্ত্রী।