উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
একে রবিবার, তায় আবার জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি এদিন ষষ্ঠ দিনে পড়ল। এই জোড়া কারণে এদিন দুপুরে এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বর রীতিমতো শুনশান। এমন হাসপাতাল চত্বর গত দেড়মাসে কোনও রবিবারও দেখেননি টানা এক মাসেরও বেশি এখানে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া একাধিক মানুষ। তাঁদের কারও স্ত্রী, কারও ভাই-বোন নানা ব্যাধি নিয়ে ভর্তি রাজ্যের সেরা এই হাসাপাতালে। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তারদের টানা কর্মবিরতি এবং একের পর এক প্রবীণ চিকিৎসকের গণইস্তফার খবর তাঁদের দুশ্চিন্তা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এঁদের মধ্যে কারও সেই আর্থিক ক্ষমতা নেই যে, এখান থেকে বের করে নিয়ে গিয়ে কোনও বেসরকারি নার্সিংহোমে রোগীকে ভর্তি করাতে পারবেন। অগত্যা ডাক্তাররা আসুন বা না আসুন, বেড ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবতেই পারছেন না তাঁরা।
এমনই একজন হরিণঘাটার বাসিন্দা তপন বিশ্বাস। তাঁর ছেলে কিডনির সমস্যা নিয়ে ভর্তি এখানে। গত দু’সপ্তাহ ধরেই তপনবাবু ছেলের জন্য এসএসকেএম চত্বরেই দিন-রাত কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক চললে গতকালই হয়তো আমাদের ছুটি হয়ে যেত। কিন্তু গত তিনদিনে ডাক্তারদের রাউন্ডে আসা অনিয়মিত হয়ে গিয়েছে। আগে যেসব ওষুধ ওয়ার্ড থেকেই দিয়ে দিত, সেরকম তিন-চারটি ওষুধ সিস্টাররা কিনে আনতে বলছেন। বাইরে থেকে ওষুধ কিনে দিতে গিয়ে হাতে থাকা সামান্য টাকাও এখন শেষের পথে। বাড়িতে খবর পাঠিয়েছেন টাকা জোগাড়ের জন্য। তপনবাবু বলেন, আমরা তো খবরও পাচ্ছি না ঠিকমতো। আচ্ছা, আজ শুনছিলাম, সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। কিছু সমাধান হয়েছে নাকি জানেন? উদ্বেগ আর আশঙ্কা নিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন প্রৌঢ় তপনবাবু।
এদিন এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, আন্দোলনকারী ডাক্তাররা অ্যাকাডেমিক বিল্ডিংয়ের নীচে যেখানে অবস্থান করছিলেন, সেখানেও কেউ নেই। কিছু ছাত্রছাত্রী ক্লাস করছেন উপরের তলে। দু’জন পুলিসকর্মী বসে রয়েছেন। সকাল থেকে এখানে গত ক’দিনের মতো জমায়েত হয়নি বলেই জানা গেল কর্তব্যরত পুলিসকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে। তাঁদের মধ্যে একজন বলেন, এখানে এখন কেউ না থাকলেও উত্তেজনা রয়েছে। আন্দোলনকারীরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন। যে কোনওসময় তাঁরা একডাকেই এখানে আসতে পারবেন। বিভিন্ন ওয়ার্ড আস্তে আস্তে শূন্য হতে শুরু করেছে। ভর্তি থাকা রোগীদের মধ্যে যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা কেউ কেউ রোগীকে কোনও নার্সিংহোমে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু যাঁদের সেই উপায় নেই, তাঁরা এই আন্দোলনের দ্রুত সমাপ্তি এবং হাসপাতালের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসার জন্য হা-হুতাশ করা ছাড়া আর কোনও রাস্তা খুঁজে পাচ্ছেন না।