উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
বাড়ি ফেরার পর সমীরবাবুর ভাই সমর দাস বললেন, আমাদের বাবা সুনীলকুমার দাস গত ৫ জুন প্রয়াত হয়েছেন। রবিবার ছিল বাবার ঘাটকাজ। সেইমতো আমাদের পরিবারের প্রত্যেকে গোয়ালিয়র ঘাটে গিয়েছিলাম। মাও ছিলেন। ক্ষৌরকারদের কাজের পর আমি ও দাদা গঙ্গায় নামি। একেবারে জল প্রায় ছিলই না। তাই ডুব দিতে পারিনি। দাদার কথামতো আমরা আরও একটু এগিয়ে যাই। ডুব দিতে যাব, আচমকাই দেখি, আমার প্ল্যান্ট ধরে জলের নীচ থেকে কেউ টানছে। মুখ ঘুরিয়ে দেখি, দাদা হাবুডুবু খাচ্ছে। আমি দাদার দিকে হাত বাড়িয়ে দেই। কিন্তু দাদা ধরতে পারছিল না। আমি দাদাকে ধরতে যাব, সেই সময় জলের স্রোত আমাকে অন্যদিকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। আমিও কার্যত তলিয়ে যেতে থাকি। জলে হাবুডুবু খেতে খেতে বাঁচানোর জন্য চিৎকার করি। ততক্ষণে আমার নাকে-মুখে জল ঢুকে যায়। দাদার হাত দু’টিকে জলের উপরে দেখতে পাচ্ছিলাম। কিন্তু আমার পক্ষে সেই হাত দু’টি ধরা সম্ভব হচ্ছিল না। ইতিমধ্যে আমার কানে আসে, দাদা, গামছা দিচ্ছি। কোনওভাবে ধরুন। আমি নিজেকে সামলে জলে ভেসে থাকা গামছাটিকে ধরি। সেটাকে সম্বল করেই আমাকে ক্ষৌরকাররা এবং পাড়ে দাঁড়ানো লোকজন টেনে নিয়ে আসেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিকে জল থেকে টানা যাচ্ছিল না। কারণ ততক্ষণে জোয়ার চলে এসেছিল। ভয়ঙ্কর স্রোত তাঁকেও টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। এদিকে, তাঁদের পরিজনরা পাড়ে দাঁড়িয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছেন। যা শুনে রিভার ট্রাফিক পুলিসের কর্মীরা চলে আসেন। ক্ষৌরকাররা এবং আশপাশের লোকজন জলে ঝাঁপ দিয়ে গামছা দিয়ে ওই ব্যক্তিকে টেনে নিয়ে আসেন।
সমরবাবু বলেন, আমি পাড়ে উঠে এসে দাদাকে খুঁজতে থাকি। কিন্তু উদ্ধারকারীরা জানান, আমাকেই শুধু দেখা গিয়েছিল। আমার সঙ্গে যিনি ছিলেন, তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে জোয়ার চলে আসায় কাউকে তাঁরা আর দেখতে পাননি। নিখোঁজ ব্যক্তির পরিজনরা বললেন, বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত সমীরবাবু অবিবাহিত। বড় ছেলের তলিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি তাঁর বৃদ্ধা মাকেও জানানো হয়েছে। সমরবাবু বলেন, মাকে অনেক কষ্টে শান্ত করেছি।। পুলিস জানিয়েছে, দাদার খোঁজ চলছে। কিন্তু জোয়ারের জল যেভাবে দাদাকে টেনে নিয়ে গিয়েছে, জানি না কীভাবে পাব! এদিন ঘটনার খবর পেয়েই এলাকার কাউন্সিলার অরূপ চক্রবর্তী সমরবাবুদের বাড়িতে যান। তিনি তাঁদের সঙ্গে কথা বলে পাশে থাকার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন।