বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা ধর্মঘটের জেরে এদিন কেরলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। কর্ণাটকে পড়েছে মিশ্র সাড়া। তবে দক্ষিণ ভারতের বাকি তিন রাজ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও জনজীবন ছিল মোটের উপর স্বাভাবিক। তেমন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর মেলেনি দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে। কেরলে স্কুল, কলেজ ও অফিসগুলিতে উপস্থিতির হার ছিল কম। প্রভাব পড়েছে ব্যাঙ্ক পরিষেবায়। বেশ কিছু জায়গায় জোর করে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। বেশ কিছু জায়গায় রেললাইন আটকে দেওয়া হয়েছে। ফলে ট্রেন ছাড়তে দেরি হয়। কর্ণাটকে দোকানপাট ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি খোলা থাকলেও, রাস্তায় নামেনি সরকারি বাস।
ধর্মঘটের প্রথম দিন পোস্ট অফিস ও সরকারি ব্যাঙ্কগুলির পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে গুজরাতে। ট্রেড ইউনিয়নের এক নেতার দাবি, এদিন গুজরাতে ধর্মঘটে শামিল হয়েছেন সব মিলিয়ে ১০ লক্ষেরও বেশি কর্মী। যা নজিরবিহীন ঘটনা। ধর্মঘটের জেরে ওড়িশায় ব্যাহত হয়েছে রেল ও সড়ক পরিবহণ। রেল রোকো কর্মসূচি পালন করা হয়েছে ভুবনেশ্বর, কটক, পুরী, বালেশ্বর, জলেশ্বর, ভদ্রক, সম্বলপুর, বেরহামপুর ও পারাদ্বীপের বিভিন্ন জায়গায়। এর ফলে বহু ট্রেন লেটে চলেছে। রাজ্যজুড়ে দোকানপাট, শিক্ষা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, অফিস ছিল বন্ধ। বিভিন্ন জায়গায় বাস স্ট্যান্ডগুলিতে আটকে পড়েন বহু যাত্রী। রাস্তা অবরোধের খবর এসেছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে।
এদিন ঝাড়খণ্ডে আংশিক ব্যাহত হয়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। গোটা রাজ্যে বন্ধ ছিল অধিকাংশ ব্যাঙ্ক। মিশ্র সাড়া পড়েছে ছত্তিশগড়েও। পোস্ট অফিস, বিমা সংস্থা ও বড় ব্যাঙ্কগুলির কর্মীদের একটা অংশ ধর্মঘটে শামিল হন এদিন। ট্রেড ইউনিয়নগুলির কর্মসূচির মধ্যেই এদিন মুম্বইয়ে সরকারি পরিবহণের ৩২ হাজারের বেশি কর্মী অনির্দিষ্টকালীন ধর্মঘট শুরু করেন। বেতন বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন দাবিতে। এর ফলে বাণিজ্যনগরীতে নাজেহাল হতে হয়েছে নিত্যযাত্রীদের। তাঁদের অভিযোগ, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ইচ্ছেমতো ভাড়া নিয়েছেন অটোচালকরা। বৃহন্মুম্বইয়ের এই সরকারি বাস পরিষেবার নাম ‘বেস্ট’। এর অন্তর্গত মোট ৩ হাজার ২০০ টি লাল বাস রয়েছে। লোকাল ট্রেনের পর এটিই দ্বিতীয় বৃহত্তম পরিবহণ ব্যবস্থা। তা ব্যাহত হওয়ায় নাকাল হতে হয় লক্ষ লক্ষ মানুষকে। কবে ভিড় সামাল দিতে মধ্য ও পশ্চিম রেল বাড়তি ট্রেন চালিয়েছে। বাড়তি বাসের ব্যবস্থা করেছিল মহারাষ্ট্র রাজ্য সড়ক পরিবহণ পর্ষদ। মুম্বইয়ের পাশাপাশি গোয়াতেও ধর্মঘটের আংশিক প্রভাব পড়েছে। পানাজি শহরে ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিলে অংশ নেন কয়েক হাজার কর্মী। তবে রাজ্যজুড়ে জনজীবন ছিল মোটের উপর স্বাভাবিক।
ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা ধর্মঘটের আংশিক সাড়া পড়েছে ত্রিপুরায়। বেশ কিছু জায়গায় দোকানপাট বন্ধ ছিল। তবে স্কুল খোলা ছিল। সরকারি দপ্তরগুলিতে স্বাভাবিক কাজকর্ম চলেছে। রাজধানী আগরতলা সহ রাজ্যের প্রায় সর্বত্রই সড়ক পরিবহণ ছিল মোটের উপর স্বাভাবিক। খোলা ছিল অধিকাংশ ব্যাঙ্ক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। স্বাভাবিক ছিল রেল পরিষেবাও।
দু’দিনব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের প্রথম দিন সর্বাত্মক সফল বলে দাবি করল সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তপন সেন আজ একটি প্রেস বিবৃতিতে দাবি করেছেন, সারা দেশের প্রায় ২০ কোটি শ্রমিক-কর্মচারী স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই ধর্মঘট কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। এদিন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘ধর্মঘট চলাকালীনই শ্রমিক সংগঠনগুলির আপত্তি বিন্দুমাত্র আমল না দিয়েই লোকসভায় ট্রেড ইউনিয়নস অ্যামেন্ডমেন্ট বিল পেশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। চূড়ান্ত অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এটি করা হয়েছে।’