ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
খাদ্য দপ্তরের এজেন্ট হিসেবে বেনফেড চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনে। বাস্তবে গ্রামের কৃষি সমবায় সংস্থাগুলি চাষিদের কাছ থেকে ধান কিনে বেনফেডকে সরবরাহ করে। বেনফেডের সঙ্গে কৃষি সমবায় সংস্থাগুলির যোগাযোগ থাকার কারণে খাদ্য দপ্তর ধান কেনার কাজে এই সংস্থাটিকে প্রতি বছর যুক্ত করে।
বেনফেড সূত্রের খবর, কয়েকটি অনিয়ম চিহ্নিত হওয়ার কারণে ধানের দাম দেওয়া আটকে রাখা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে পোর্টালে ধান কেনার তথ্য ঠিকমতো আপলোড হয়নি। কোনও কোনও কৃষি সমবায় সংস্থাকে ধান কেনার যে সর্বোচ্চ পরিমাণ বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, তার থেকে বেশি কিনেছে। এই কারণেও দাম দেওয়া আটকানো হয়েছে। ধান বিক্রেতাদের ‘কেওয়াইসি’ নথিতে গোলমাল থাকার কারণে দাম দেওয়া হয়নি। তাছাড়া আরও একটি বিষয় বেনফেড কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। একজন চাষি সর্বোচ্চ কত পরিমাণ ধান সরকারের কাছে বিক্রি করতে পারবেন, তা নির্দিষ্ট আছে। প্রতি মরশুমে ৯০ কুইন্টালের বেশি কোনও চাষি বিক্রি করতে পারেন না। কিন্তু পোর্টাল পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন এজেন্সির কাছে একজন চাষি ৯০ কুইন্টালের বেশি ধান বিক্রি করে দিয়েছেন। চাষির যে পরিমাণ জমি আছে, তার তুলনায় বেশি পরিমাণ ধান বিক্রির অভিযোগেও দাম দেওয়া আটকানো হয়েছে। চাষিদের ধান বিক্রির দাম না পাওয়ার প্রসঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে উঠেছে। বর্ধমানের একটি কেস বেনফেড কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। খাদ্য দপ্তর এরপর ওই কেসটি নিয়ে বিশেষ তদন্ত করে দাম মেটানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। খাদ্য দপ্তর কয়েকদিন আগে বেনফেড কর্তৃপক্ষকে ধানের বকেয়া দাম মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। বেনফেড কর্তৃপক্ষ এখন বলছে, বিতর্কিত কেসগুলির ক্ষেত্রে খাদ্য দপ্তর তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নিক। বেনফেড সূত্রের খবর, নির্ধারিত পরিমাণের থেকে বেশি পরিমাণ ধান কেনার যে সব কেসগুলি চিহ্ণিত হয়েছে, সেখানে ফড়েদের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। খাদ্য দপ্তরও এবার ফড়েদের আরও নিয়ন্ত্রণ করতে সক্রিয় হয়েছে। আগামী খরিফ মরশুমে এর জন্য কৃষি দপ্তরের ‘কৃষক বন্ধু’ পোর্টালটিকে ধান কেনার কাজে ব্যবহার করা হবে।
বেনফেডের ব্যবসার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা। চলতি মরশুমে ধান কেনার জন্য খাদ্য দপ্তর অগ্রিম ৫৭৫ কোটি টাকা দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। গত কয়েক বছরে সব মিলিয়ে ১৮৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে বেনফেড। ওই ঋণের সুদের দায়ভার খাদ্য দপ্তর নিলে সংস্থার লাভের পরিমাণ বাড়বে। ২০১৮-’১৯ আর্থিক বছরে বেনফেড ২ কোটি টাকা লাভ করেছে। লাভের অর্ধেক এসেছে ধান বিক্রি থেকে। তার আগের বছরে লাভের পরিমাণ ছিল ১২ কোটি টাকা। এর কারণ ঋণের টাকার সুদ বাবদ ৭ কোটি টাকা খাদ্য দপ্তর দিয়েছিল।