ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
এবার অক্টোবরের শুরু থেকেই দুর্গাপুজো শুরু হয়ে যাচ্ছে। আগামী ৩ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার পুজোর পঞ্চমী। শুক্রবার ষষ্ঠী। এক অর্থে একদিকে যেমন দু’দিনই ‘কাজর দিন’, তেমনই আবার পঞ্চমীতেই বহু পুজোর উদ্বোধন হয়ে যায়। বিদ্যুৎকর্তাদের বক্তব্য, এখন কেবল কলকাতাতেই নয়, জেলার বহু পুজোও উদ্বোধন হয়ে যায় পঞ্চমীতে। এমনকী, তার আগেও এখন জেলার কোনও কোনও পুজোর উদ্বোধন হতে দেখা যায়। তবে, পুজোয় পঞ্চমী-ষষ্ঠীর মধ্যে কোনও একদিন সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা থাকতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। সপ্তমী থেকে রাজ্যের বিভিন্ন অফিসে ছুটি পড়ে যায়। তাই সপ্তমী থেকে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদার গ্রাফও নিম্নমুখী হতে শুরু করে।
পুজোর দিনগুলিকে আলোকোজ্জ্বল রাখতে ইতিমধ্যেই আসরে নেমেছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। পুজোয় বাড়তি বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য কিছুদিন আগেই উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক করে মূল সুর বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। সেই বৈঠকে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় জড়িত প্রায় সবক’টি সংস্থার আধিকারিকরাই উপস্থিত ছিলেন।
কী বলছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী? তাঁর কথায়, পুজো নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি খুব ভালো হচ্ছে। প্রধান কাজ হল, কয়লা সঞ্চয় করা। আমরা নিজেদের দু’টি খনি থেকে কয়লা তুলছি। একটি ট্রান্স দামোদর, অন্যটি বড়জোড়া নর্থ। সেই কয়লা সঞ্চয় করা হচ্ছে। পুজোয় প্রতিদিন ১৩ থেকে ১৪ রেক করে কয়লা দরকার হয়। এতদিন নিজস্ব খনি থেকে কয়লা তোলা হচ্ছিল না। অন্য সংস্থা থেকে নেওয়া হচ্ছিল। নিজেদের খনি থেকে কিছুটা কয়লা তুলে নেওয়া গেলে পুজোয় আমাদের ভয়ের কোনও কারণ নেই। তবে এবার পুজোয় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। সাধারণত পুজোয় দৈনিক সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা ৮৫০০ মেগাওয়াটের আশপাশে থাকে। সেখানে এবার আমাদের হিসেব, ষষ্ঠীর দিন সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা ৯৫০০ মেগাওয়াট থাকতে পারে। এটা গোটা রাজ্যের হিসেব। রক্ষণাবেক্ষণের কাজ জোরকদমে চলছে। তাই কোথাও কোথাও বলা হচ্ছে, বিদ্যুৎ থাকছে না। আসলে পুজোর জন্য প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবে স্থানীয় ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িক বন্ধ করে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চালানো হচ্ছে এখন। পুজোয় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। অতিরিক্ত কর্মী কাজ করবেন।
রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির এক কর্তা বলেন, বণ্টন কোম্পানির এলাকায় পঞ্চমী-ষষ্ঠীতে দৈনিক সর্বোচ্চ ৭ হাজার মেগাওয়াট ছাড়াতে পারে। অন্তত সেইরকম হিসেব করেই প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে। সিইএসসি’র এক কর্তার কথায়, কোম্পানির এলাকায় দৈনিক সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা বেশি হতে পারে পঞ্চমীতে। ওই দিন সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা প্রায় ২১০০ মেগাওয়াট ছুঁতে পারে। ষষ্ঠীতে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা কিছুটা কমে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ওই দিন সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা ১৯০০ মেগাওয়াটের আশপাশে থাকতে পারে। বর্তমানে বণ্টন কোম্পানির এলাকায় দৈনিক গড় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা থাকছে গড়ে ৬,৫০০ মেগাওয়াটের আশপাশে। অন্যদিকে, সিইএসসি এলাকায় বর্তমানে গড় দৈনিক সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা থাকছে ১৬০০ মেগাওয়াটের আশপাশে।
এই দুই সংস্থার কর্তারাই আর্জি জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট লোড জানিয়ে পুজো কমিটিগুলি যেন আইন মেনে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়। ঘোষিত চাহিদার থেকে বেশি কিংবা অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিলে ট্রান্সফর্মারের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে। হঠাৎ ‘লোড’ বেড়ে গেলে বিপদের আশঙ্কা তৈরি হয়। এ ব্যাপারে কমিটিগুলির সহযোগিতা চেয়েছেন বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির কর্তারা। সিইএসসির এক কর্তা বলেন, আমরা সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছি একই সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং সুরক্ষার উপর। পুজোর দিনগুলিতে পুজোর উদ্যোক্তা, পুলিস, দমকল, পুরসভা সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিটি সংস্থার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে কাজ করা হবে।