ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
এমনিতেই শনি ও রবিবার দীঘায় পর্যটকের সংখ্যা অনেকটা বেশি থাকে। ওড়িশা উপকূল বরাবর একটি নিম্নচাপ তৈরি হওয়ায় তার প্রভাবে শুক্র ও শনিবার সমুদ্র উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সেইরকম যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছিল প্রশাসন। দীঘা পুলিস এবং নুলিয়াদের পক্ষ থেকে পর্যটকদের সতর্ক করা হয়েছিল। মৎস্যজীবীদেরও সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়। এই অবস্থায় শনিবার সকাল থেকে প্রবল জলোচ্ছ্বাস দেখার জন্য পর্যটকদের ঢল নামে মেরিন ড্রাইভ বরাবর। ভাটার সময় অনেকেই সাহস নিয়ে নেমে পড়েন। ঝোড়ো হাওয়ায় বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়তেই আনন্দে চিৎকার করেন অনেকে। সতর্কবার্তা থাকায় পুলিস এবং নুলিয়াদের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছিল। ওল্ড দীঘা, নিউ দীঘা, শঙ্করপুর ও তাজপুর সহ সর্বত্রই ছবিটা একইরকম ছিল।
সম্প্রতি পর পর সমুদ্রে তলিয়ে কয়েকজন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। তারপর বিপজ্জনক ঘাটগুলিতে নজরদারি অনেকটা বাড়ানো হয়েছে। সৌমেন ঘোড়াই নামে এক নুলিয়া বলেন, শুক্রবার রাতে দীঘা থানার পক্ষ থেকে আমাদের সতর্কবার্তা থাকার বিষয়ে জানানো হয়। তারপর রাতেই বিভিন্ন ঘাট থেকে মাইকিং করা হয়। শনিবার সি-বিচে নেমে আমরা মাইকিং করেছি। শনিবার জোয়ারের সময় পর্যটকদের নামতে দেওয়া হয়নি। ভাটার সময় পর্যটকরা সৈকতে নামেন। জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, শুক্র ও শনিবার সমুদ্র উত্তাল হওয়ার সতর্কবার্তা ছিল। সেইমতো পর্যটকদের সতর্ক করা হয়েছিল। নতুন করে আর কোনও সতর্কবার্তা নেই।
দীঘা কোস্টাল থানার অন্তর্গত সি-হক ঘোলা ঘাট, নিউ দীঘায় ক্ষণিকা, মেরিনাল হলিডে হোম ঘাট সহ প্রতিটি ঘাটে পর্যটকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রতিবছর দীঘায় পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, ২০১৩-’১৪সালে সালে দীঘায় এসেছিলেন প্রায় ২৭লক্ষ পর্যটক। আর ২০১৮-’১৯সালে দীঘায় এসেছেন ৪২লক্ষ পর্যটক। প্রতিবছর দীঘায় পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। ছুটির দিনে পর্যটকের সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি। সমুদ্রের ঢেউ দেখার টানেই ছুটে আসেন কাতারে কাতারে পর্যটক। শুক্র ও শনিবার উত্তাল সমুদ্র দেখে পর্যটকরা ব্যাপক উল্লাস করেছেন। বাঁকুড়া থেকে বিপুল চক্রবর্তী, মন্মথ চক্রবর্তী সহ একদল পর্যটক শুক্রবারই নিউ দীঘায় এসে উঠেছেন। এদিন উত্তাল সমুদ্রের সাক্ষী দু’জন বলেন, এরআগে অনেকবার দীঘায় এসেছি। কিন্তু, এরকম সুউচ্চ ঢেউ দেখার সুযোগ হয়নি। ঢেউ এসে গার্ডওয়ালে ভাঙছে। সত্যিই অপূর্ব দৃশ্য। মন ভরে যাওয়ার মতো ছবি।
এদিকে এদিন উত্তাল সমুদ্রে পুলিস-প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্নানে নেমে তলিয়ে যাওয়া এক কিশোরকে উদ্ধার করেছেন কর্তব্যরত নুলিয়ারা। পুলিস জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া কিশোরের নাম রাহুল মণ্ডল। তার বাড়ি হুগলি জেলার তারকেশ্বরের সাহাপুর গ্রামে। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন জোয়ারের সময় হলিডে হোম স্নানঘাটে রাহুল সহ আরও কয়েকজন পর্যটক স্নান করতে নামেন। সেইসময় উত্তাল সমুদ্রে টাল সামলাতে না পেরে হাবুডুবু খেতে থাকে রাহুল। সেইসময় কর্তব্যরত এক নুলিয়া জলে ঝাঁপ দিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। পরে দীঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে তাকে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওই কিশোর সুস্থ হয়। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। নিজস্ব চিত্র