ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
জানা যাচ্ছে, সুগার ও প্রেসার পরীক্ষা করা এই ৯ লক্ষ ৭ হাজার ৫২১ জন রাজ্যবাসীর মধ্যে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষই ভুগছেন হাই ব্লাড প্রেসারে। শতকরা হিসেবে প্রতি ১০০ জনে ১৬ জনই ভুগছেন হাই প্রেসারে। আর নির্দিষ্টভাবে বললে কমবেশি রাজ্যের প্রতি ছ’জন মানুষের একজন উচ্চ রক্তচাপের শিকার।
অন্যদিকে, ‘রাজরোগ’ সুগারের কবলে কতজন পড়েছেন, তারও একটি চিত্র উঠে এসেছে এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে। ৯ লক্ষ ৭ হাজার ৫২১ জন রাজ্যবাসীর মধ্যে সুগার ধরা পড়েছে ১ লক্ষ ১৫ হাজার ২৩৭ জনের। শতকরা হিসেবে ১২.৬৯ শতাংশ— যার অর্থ, রাজ্যের প্রতি আটজন মানুষের মধ্যে একজন ভুগছেন সুগারে।
সূত্রের খবর, রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব তথা অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বাস্থ্য) রাজীব সিনহা ‘নন কমিউনিকেবল ডিজিজের’ এই বাড়বাড়ন্তে উদ্বিগ্ন। তিনি একাধিক বৈঠকে দপ্তরের এনসিডি শাখাকে এই সমীক্ষাকে একটি নির্ভরযোগ্য ও প্রায় নিখুঁত সমীক্ষায় পরিণত করতে বলেছেন। এনসিডি শাখার উপ স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ গোপাল মণ্ডল বলেন, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের আদর্শ নিয়ম মেনে সমীক্ষা হয়েছে। প্রশিক্ষিত আশাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষজনকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসতে বলেছেন। প্রশিক্ষিত এএনএম নার্সরা সুগার ও প্রেসার মেপেছেন এবং ধরা পড়লে রোগীদের প্রাথমিক বা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠিয়ে ডাক্তার দেখানো এবং চিকিৎসার কাজ শুরু হয়েছে। গোপালবাবু বলেন, নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকেই সমীক্ষার পরবর্তী অংশ আরও ১০টি জেলায় শুরু হবে। জেলার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় পুরসভা এবং কর্পোরেশনগুলিও তাতে যুক্ত হবে।
এ বিষয়ে বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ এবং পিজি’র হৃদরোগ বিভাগের প্রাক্তন প্রধান ডাঃ অরূপ দাসবিশ্বাস বলেন, সুগার-প্রেসারের দিক থেকে আমরা এক অর্থে আনবিক বোমার উপর বসে আছি। এতটাই ভয়াবহ পরিস্থিতি! বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং পিজি’র বিভাগীয় প্রধান ডাঃ সৌমিত্র ঘোষ বলেন, শুধু বড়দের মধ্যেই এই সমস্যাটি আর সীমাবদ্ধ নেই। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সমীক্ষা রিপোর্টে বাচ্চাদের সুগার-প্রেসার নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। এখনই সাবধান না হলে এই দুই রোগের মহামারী থেকে ভবিষ্যতে মুক্তি নেই— এ কথা হলফ করে বলতে পারি।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, রাজ্যের ৩০ বছরের বেশি বয়সের জনসংখ্যার (কমবেশি ৩৭ শতাংশ) মধ্যে করা হয়েছে এই সার্ভে। আশাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছ’টি প্রশ্ন করছেন। এক বয়স, দুই নেশা (সিগারেট, মদ ইত্যাদি), তিন ভুঁড়ি, চার সুগার ও প্রেসারের পারিবারিক ইতিহাস, কায়িক পরিশ্রম কতটা ইত্যাদি। রিস্ক স্কোর চার বা বেশি হলে সুগার, প্রেসার মাপাতে তাঁদের পাঠানো হচ্ছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখানে প্রশিক্ষিত এএনএম নার্সরা ১৪০/৯০ বা তার বেশি প্রেসার থাকলে এবং র্যানডম সুগার ১৪০ বা বেশি থাকলে পাঠাচ্ছেন পরবর্তী সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের কাছে।